কয়েক দিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ফ্লোরিডার সিনেটর মার্কো রুবিওকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কয়েকদিন ধরে গুঞ্জন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদের জন্য ট্রাম্পের পছন্দে রয়েছেন ৫৫ বছর বয়সি রুবিও।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) ট্রাম্প তার পছন্দের ঘোষণা দিয়ে এক বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘মার্কো একজন অত্যন্ত সম্মানিত নেতা এবং স্বাধীনতার জন্য অত্যন্ত শক্তিশালী কণ্ঠস্বর। ’
‘তিনি হবেন আমাদের জাতির জন্য একজন শক্তিশালী প্রতিনিধি, আমাদের মিত্রদের একজন সত্যিকারের বন্ধু এবং একজন নির্ভীক যোদ্ধা যিনি কখনোই আমাদের প্রতিপক্ষের কাছে পিছপা হবেন না।’
নানা চ্যালেঞ্জে সামনে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন রুবিওকে। কারণ, ২০১৭ সালে ট্রাম্প যখন প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় বসেন, সে সময়ের চেয়ে বর্তমান পরিস্থিতি আরো আলাদা। রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের প্রায় তিন বছরের কাছাকাছি সময় যুদ্ধ চলছে। অন্যদিকে ইসরাইল যুদ্ধ করছে গাজা এবং লেবাননে। তাই টালমাটাল মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিতে সহজ হবে না রুবিওর পদযাত্রা।
রুবিও একজন কিউবান আমেরিকান। যিনি চীন সম্পর্কে তার কট্টরপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি এবং ইসরাইলের প্রতি দৃঢ় সমর্থনের জন্য পরিচিত। শুধু তাই নয়, গাজা ইস্যুতে যুদ্ধবিরতিরও পক্ষে নন তিনি। ফ্লোরিডার এই সিনেটর এর আগে বলেছেন, তিনি যুদ্ধবিরতি নয়। গাজায় হামাসের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রতিটি ইঞ্চি জমি গুঁড়িয়ে দিতে চান। হামাসকে বিভৎস প্রাণী হিসেবেও অভিহিত করেছেন তিনি।
রুবিও হবেন প্রথম লাতিন আমেরিকান যিনি ওয়াশিংটনের শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাচ্ছেন। ট্রাম্পের মনোয়নন পেয়ে তিনি বলেছেন, শক্তি প্রদর্শন করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চান।
সামাজিকমাধ্যম এক্সে মার্কো লিখেন, ‘মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নেতৃত্ব দেওয়া একটি বিরাট দায়িত্ব এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন তাতে আমি সম্মানিত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমি তার পররাষ্ট্র নীতির এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য প্রতিদিন কাজ করব’।
‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমরা শক্তির মাধ্যমে শান্তি প্রদান করব এবং সর্বদা আমেরিকান ও আমেরিকার স্বার্থকে সব কিছুর উপরে রাখব। আমি মার্কিন সিনেটে আমার সহকর্মীদের সমর্থন পাওয়ার জন্য উন্মুখ যাতে প্রেসিডেন্ট ২০ জানুয়ারী দায়িত্ব গ্রহণকালে তার জাতীয় নিরাপত্তা এবং পররাষ্ট্র নীতি দলে থাকতে পারি’।
দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনে জয়ের আগে ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি হোয়াইট হাউসে থাকলে ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ হতো না। কিন্তু নির্বাচনে জয়ের পর, তিনি এমন সব ব্যক্তিদের তার প্রশাসনে বসাচ্ছেন যারা কট্টর ইসরাইলপন্থি। ফিলিস্তিন এবং হামাস ইস্যুতে যাদের মনোভাবে বিদ্বেষ জড়িয়ে আছে।
সবচেয়ে বড় কথা, এমন প্রশাসনের অধীনে পুরো বিশ্বে নিরপেক্ষ নীতি এবং গণতান্ত্রিক পন্থা দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে এখন থেকেই জোর সংশয় রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মার্কো রুবিওর নিয়োগ তারই ইঙ্গিত বহন করে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন