দখলদার ইসরাইলের বর্বরতার বিরুদ্ধে তুরস্ক সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। গাজায় মানবিক সংকট বৃদ্ধি পাওয়ায় আঙ্কারা ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সৌদি আরব ও আজারবাইজান সফর শেষে ফেরার ফ্লাইটে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন এরদোগান।
গত মে মাসেই বাণিজ্য সম্পর্ক স্থগিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যতদিন অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত থাকবে, ইসরাইল আরও আগ্রাসী হবে এবং ফিলিস্তিন ও লেবাননের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজা ও দক্ষিণ লেবাননে ইসরাইলি বর্বরতায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি ও লেবানিজ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও দেড় লাখ মানুষ। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এ বিষয়ে এরদোগান বলেন, ইসরাইলের হামলা বন্ধে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কাজ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। তার মতে, ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ছাড়া এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আসবে না’।
তুরস্ক ইসরাইলের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া সম্প্রতি ইসরাইলের কাছে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব তুলেছে তুরস্ক। যে প্রস্তাব সমর্থন করেছে ৫২টি দেশ এবং দুটি আন্তর্জাতিক সংস্থা।
এরদোগান জানান, সৌদি আরব এবং আজারবাইজান সফরের সময়ও তিনি এ নিয়ে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং অন্যান্য মুসলিম নেতাদের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন
এ সময় নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এরদোগান। তিনি বলেন, ‘তুরস্কের ভৌগোলিক অবস্থান এবং তারুণ্যনির্ভর জনসংখ্যার কারণে এখানে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। আমরা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে পারি, বিশেষ করে জ্বালানি, অবকাঠামো এবং প্রযুক্তি খাতে’।
একই সঙ্গে ট্রাম্পের একান্ত সমর্থক ইলন মাস্কের সঙ্গেও ভবিষ্যত বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
তুরস্ক-সিরিয়া সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ
সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়েও এরদোগান বলেন, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তুরস্ক সিরিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা মেনে চলবে। সেই সঙ্গে সিরিয়ার সরকারেরও উচিত নিজ ভূমিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন