মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র একদিন বাকি। বিশ্বব্যাপী বহুল আলোচিত এই নির্বাচনে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত ২ প্রার্থী।
ভোট নিয়ে এবিসি নিউজ-ইপসোস, নিউ ইয়র্ক টাইমস-সিয়েনা কলেজ এবং সিএনএন’র জনমত জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে ১৯ বা তারও বেশি পয়েন্টে এগিয়ে আছেন কমালা হ্যারিস। তবে এই এগিয়ে থাকা মানেই নির্বাচিত হওয়া নয়। ইতিহাস বলে ২০১৬ সালে ট্রাম্পের চেয়ে অনেক বেশি ভোট পেয়েছিলেন ডেমোক্রেট হিলারি ক্লিনটন। কিন্তু তিনি জয়ী হতে পারেননি। জিতেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে সার্বিক জনপ্রিয়তা বা বেশি ভোট পাওয়ার ওপর নির্ভর করে না প্রেসিডেন্ট কে হবেন।
অঙ্গরাজ্যগুলোই ঠিক করে দেবে, কে হবেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মাত্র কয়েকটি অঙ্গরাজ্যই পাল্টে দেয় সব হিসাব-নিকাশ। দেশটির বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যই আগে থেকে ঠিক করে নেয়, কার পক্ষে যাবে। যেমন- নিউইয়র্ক হলো ডেমোক্র্যাটদের ঘাঁটি। এই অঙ্গরাজ্যের মানুষ এখন পর্যন্ত নীল ডেমোক্র্যাটদের ওপরই ভরসা রেখে চলেছে। তেমনি কানিটিকাট, ভারমন্ট, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নিউজার্সি, ক্যালিফোর্নিয়া, অরেগন, ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যও ডেমোক্র্যাটদের বিশ্বাস করে এসেছে সব সময়।
অন্যদিকে, লাল রিপাবলিকানদের ভালোবাসে অ্যালাবামা, আরকানসাস, ওয়াইওমিং, আলাস্কার মতো অঙ্গরাজ্যগুলো। এই অঙ্গরাজ্যগুলোয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা খুব বেশি চাপের মধ্যে থাকেন না। যারা নীল, তারা সব সময়ই নীল। যারা লাল, তারা সব সময়ই লাল। যে রাজ্যগুলোকে সহজেই লাল-নীলে ভাগ করা যায় না, সেখানেই যত জ্বালা আর স্নায়ুর চাপ। এ রকম অঙ্গরাজ্যগুলোর মানুষদের কাছে টানতে কী কষ্টটাই-না করতে হয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের! কমলা হ্যারিস আর ডোনাল্ড ট্রাম্পও এবার বুঝতে পারছেন। কারণ এই অঙ্গরাজ্যগুলোই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।
এদিকে আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নির্বাচন ঘিরে ট্রাম্পের ভাগ্য প্রেসিডেন্ট পদ ও কারাবাসের ঝুঁকির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। জিতলে তিনি প্রেসিডেন্ট হবেন; আর হেরে গেলে তাকে কারাগারে যেতে হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র কোডের অ্যাক্সেস পাওয়া প্রথম দোষী সাব্যস্ত অপরাধী। তার হোটেল ও ক্যাসিনো ব্যবসা নিয়ে নানা অভিযোগ আছে; তার বিরুদ্ধে আছে কর জালিয়াতির অভিযোগও। যদি ট্রাম্প বিজয়ী হন, তাহলে তিনি হবেন হোয়াইট হাউসে যাওয়া ও পারমাণবিক অস্ত্র কোডের অ্যাক্সেস পাওয়া প্রথম দোষী সাব্যস্ত অপরাধী। আর যদি তিনি বিজয় থেকে ছিটকে পড়েন, তাহলে ৭৮ বছরের ট্রাম্পকে আরও অপমানজনক আদালতের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে; এমনকি কারাগারেও যেতে হতে পারে। এজন্য আগামী মঙ্গলবার দিনটি কার্যত ট্রাম্পের জন্য রায়ের দিন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন