জনপ্রিয় ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারগুইতির ওপর কারাগারে 'নির্মম নির্যাতন' চালিয়েছে ইসরাইল। আর এর ফলে ভয়াবহভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। ইসরাইলি কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দীদের সহায়তাকারী গ্রুপগুলো এই দাবি করেছে।
কমিশন ফর ডিটেইনিস অ্যান্ড এক্স-টেইনিস অ্যাফেয়ার্স এবং প্যালেস্টাইন প্রিজনার্স সোসাইটি সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, ৯ সেপেম্বর ইসরাইলের মেগিদো কারাগারে নিঃসঙ্গ প্রকোষ্ঠে বারগুইতির ওপর হামলা চালানো হয়।
সমর্থকদের কাছে 'ফিলিস্তিনি নেলসন ম্যান্ডেলা' নামে পরিচিত বারগুইতি ফিলিস্তিনের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। তিনি ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হলে জয়ী হবেন বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়ে থাকে।
ইতোপূর্বে তাকে হত্যার জন্য দুবার চেষ্টা করা হয় বলেও দাবি করা হয়ে থাকে।
প্রথম ও দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় বারগুইতিই ছিলেন সবচেয়ে প্রখ্যাত নেতা। ২০০৪ সালে পাঁচটি খুনের মামলায় তাকে সাজা দেয় ইসরাইল। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
ইসরাইল অভিযোগ করছে, বারগুইতি আল-আকসা শহিদি ব্রিগেডের প্রতিষ্ঠাতা।
ফাতাহ গ্রুপের এই রাজনীতিবিদ দুই দশকের বেশি সময় ধরে ইসরাইলি কারাগারে আছেন। ৯ সেপ্টেম্বর তার ওপর নির্যাতনের সময় তার মাথা, কান, বুক, ডান হাত, পিঠে জখম হয়েছে বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে। তার ডান কানে রক্তপাত হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
ওই দিন ৬৪ বছর বয়স্ক বারগুইতির পাশাপাশি আরো কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দীর ওপর নির্যাতন চালানো হয় বলে সংগঠন দুটি জানায়।
কমিশন জানায়, ফিলিস্তিনিদের 'নির্মম অবস্থায়' রাখা হয়েছে। বিশেষ করে গাজায় যুদ্ধের সময় ইসরাইলি কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের সাথে আরো খারাপ আচরণ করা হচ্ছে।
গত বছরের অক্টোবরে অবরুদ্ধ গাজায় হামলা শুরু করার পর থেকে ইসরাইল গ্রেফতারও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বন্দী অধিকার গ্রুপ এবং জাতিসঙ্ঘ অভিযোগ করছে, ইসরাইলি কারাগারগুলোতে বন্দীদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অত্যাচার করা হয়। তাদেরকে প্রহার করা, খাবার না দেয়া, স্বজনদের সাক্ষাত করতে না দেয়া, চিকিৎসায় অবহেলা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এক বিবৃতিতে কমিশন জানায়, বারগুইতি এবং অন্যান্য প্রখ্যাত বন্দীকে 'হত্যা' করার জন্য এসব নির্যাতন চালানো হয়।
ফিলিস্তিনি গ্রুপ অ্যাডমিরের মতে, বর্তমানে ইসরাইলি কারাগারগুলোতে ১০ হাজারের বেশি বন্দী রয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ৩,৩৯০ জন প্রশাসনিক নির্দেশে কারাগারে রয়েছেন। এসব বন্দীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
সূত্র : আল জাজিরা
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন