জাতীয় নির্বাচনের পর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখে পড়েছে জাপান। দেশটির দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন দল ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ নির্বাচনী পারফরম্যান্সের প্রেক্ষাপটে এই অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে দেশটি। প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবাকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেয়া হয়েছে। তিনি পরবর্তী সরকার গঠন করতে পারবেন কিনা তা নিয়েও সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। আবার অন্য কোনো দলও সরকার গঠনের মতো প্রয়োজনীয় আসন পায়নি।
রোববারের ভোটে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) এবং তার জুনিয়র জোটের অংশীদার কোমেইতো শক্তিশালী নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়। ফলে ৩০ দিনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য ক্ষুদ্র অংশীদার খোঁজার জন্য লড়াই শুরু করেছে দলটি।
প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইশিবা রাজনৈতিক তহবিল কেলেঙ্কারি এবং জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় নিয়ে জনগণের ক্ষোভের মধ্যে নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে তার নেতৃত্বকে দৃঢ় করার আশা করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল তার জন্য উল্টা ফল বয়ে এনেছে।
ক্ষমতাসীন জোট মাত্র ২১৫টি আসন পেয়েছে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৩৩টি আসনের চেয়ে অনেক কম। জাপানের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী এলডিপির জন্য এটি ২০০৯ সালের পর থেকে সবচেয়ে খারাপ ফল ছিল; সে সময় দলটি চার বছরের জন্য ক্ষমতা হারিয়েছিল।
বড় ধরনের সাফল্য সত্ত্বেও কমিউনিস্টপন্থী থেকে উগ্র ডানপন্থী দলগুলো সরকার গঠনে বেশি বিভক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। অনেক বিরোধী দলও এলডিপি এবং কোমেইতোর সাথে জোটে যোগদানের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে। ফলে সামনের পথকে আরো জটিল করে তুলেছে।
কয়েকজন বিশ্লেষক ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, এলডিপি এবং কোমেইতো কেস-বাই-কেস ভিত্তিতে আইন পাস করার জন্য ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ফর দ্য পিপল এবং ইনোভেশন পার্টির মতো ছোট, মধ্য-ডান দলগুলোর ওপর নির্ভর করে একটি সংখ্যালঘু সরকার গঠনের চেষ্টা করতে পারে।
অভ্যন্তরীণ উত্থান সত্ত্বেও জাপানের বৈদেশিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন হবে বলে আশা করা হচ্ছে না; তবে কিছু অগ্রাধিকার পরিবর্তিত হতে পারে।
সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইশিবা বেশ কয়েকটি বিতর্কিত প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন, যেমন ন্যাটোর একটি এশীয় সংস্করণ গঠন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পারমাণবিক ভাগাভাগির ব্যবস্থা।
তবে তার দুর্বল অবস্থানের অর্থ এই পরিকল্পনাগুলো আকর্ষণ পাওয়ার সম্ভাবনা কম। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পরিবর্তে ইশিবা বেঁচে গেলে বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐকমত্যের ক্ষেত্রগুলোতে মনোনিবেশ করবেন।
সূত্র : ভিওএ এবং অন্যান্য
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন