যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাকি আছে এক মাসেরও কম। দুই প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা চলছে জোরেশোরে। গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে অবশ্য একদণ্ড বসে নেই দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। ভোটার টানতে নিজেদের মতো করে প্রচারণা চালাচ্ছেন তাঁরা।
স্থানীয় সময় শনিবারও নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাটদলীয় প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
ভোটার টানতে এ দুই প্রার্থী অবশ্য বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পন্থা। এদিন নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প বেছে নিয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়াকে। অন্যদিকে হ্যারিস ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন দোদুল্যমান স্টেট নর্থ ক্যারোলাইনায়।
ট্রাম্প গত শনিবার কমলা হ্যারিসের জন্মস্থান ক্যালিফোর্নিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণা চালান। কমলার শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই রাজ্যে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প নিশ্চিতভাবেই হারতে চলেছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তার পরও ট্রাম্প হাত গুটিয়ে বসে নেই। গত শনিবার ক্যালিফোর্নিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি কমলার রাজ্যের সাম্প্রতিক নানা অসংগতি তুলে ধরে তাঁকে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের আহবান জানান।
অন্যদিকে কমলা হ্যারিস এদিন হারিকেন হেলেনের আঘাতে বিধ্বস্ত নর্থ ক্যারোলাইনায় নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটান। তিনি দুর্গতদের জন্য ডায়াপার, ব্যথানাশক ওষুধ ও ব্যান্ডেজ প্যাকেট করার কাজে সাহায্য করেন। ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনে নর্থ ক্যারোলাইনায় অল্প ভোটে জিতেছিলেন ট্রাম্প। এবার দোদুল্যমান এই রাজ্যটিকে কুক্ষিগত করতে তাই মরিয়া ডেমোক্র্যাট শিবির।
এদিকে কমলা হ্যারিস নিজের মেডিক্যাল রেকর্ডস বা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করেছেন।
সেখানে দেখা যাচ্ছে তাঁর শারীরিক অবস্থা ‘দুর্দান্ত’ এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি সক্ষম। এ তথ্য প্রকাশ করে ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ না করা এবং এ নিয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলেছেন।
একই সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস দাবি করেছেন, তাঁর রিপাবলিকান দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী ‘মার্কিন জনগণকে জানাতে চান না যে তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ফিট বা সক্ষম আছেন কি না।’
এদিকে কোনো ধরনের মেডিক্যাল রেকর্ডস বা স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্য প্রকাশ না করে সাবেক প্রেসিডেন্টের প্রচার শিবির ট্রাম্পের চিকিৎসককে উদ্ধৃত করে বলেছে, তিনি ‘নিখুঁত এবং চমৎকার শারীরিক অবস্থায়’ রয়েছেন।
ট্রাম্পের প্রচার দল বলেছে, রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থীর ‘অত্যন্ত ব্যস্ত এবং সক্রিয় প্রচার-প্রচারণা কর্মসূচি’ চলছে এবং তাঁদের দাবি ‘কমলা হ্যারিসের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতো দম বা স্ট্যামিনা নেই’।
হোয়াইট হাউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ‘শারীরিক ও মানসিকভাবে সক্ষম’।
ডেমোক্র্যাটরা ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বয়স ও মানসিক সুস্থতা নিয়ে বারবার তাকে আক্রমণ করছেন। কয়েক মাস আগে রিপাবলিকানরা সরাসরি একই ধরনের সমালোচনা করতেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিষয়ে।
নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে ট্রাম্প হবেন তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ শেষে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট। তবে অবশ্যই তিনি জো বাইডেনের রেকর্ডের অংশীদার হবেন। তিনিও জানুয়ারিতে একই বয়সে তার বর্তমান মেয়াদ শেষ করবেন।
সূত্র : দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট,
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন