মহারাষ্ট্রের সাবেক মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকীকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং। সোশাল মিডিয়ায় এক পোস্টের মাধ্যমে এ দায় স্বীকার করা হয়েছে। খবর এনডিটিভির
৬৬ বছর বয়সি জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) এই নেতাকে বৃহস্পতিবার রাতে মুম্বাইয়ের শহরতলি পূর্ব বান্দ্রায় গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার সময় তিনি পূর্ব বান্দ্রার বিধায়ক ছেলে জিশান সিদ্দিকীর অফিসের কাছে অবস্থান করছিলেন।
পুলিশের বরাতে এনডিটিভি বলছে, ঘটনার সঙ্গে তিন বন্দুকবাজের সম্পৃক্ততা মিলেছে। তাদের মধ্যে হরিয়ানার বাসিন্দা কর্নেইল সিংহ (২৩) আর উত্তরপ্রদেশের ধরমরাজ কাশ্যপ (১৯) পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। উত্তরপ্রদেশেরই আরেকজন শিব কুমার গৌতমও এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। তবে তাকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশের ধারণা, এই তিনজনকে সমন্বয় করছিলেন আরেক ব্যক্তি, তিনিও পালিয়ে গেছেন।
স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাবা সিদ্দিকী ও তার সহযোগীকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় হামলাকারীরা। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের বুকে গুলি লাগে।
এনডিটিভি লিখেছে, ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে কুখ্যাত বিষ্ণোই গ্যাং।
শিবু লঙ্কার নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টটির বিষয়ে তদন্ত করছে ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো। ওই অ্যাকাউন্ট বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সহযোগী শুভম রামেশ্বর লঙ্কারের হতে পারে বলে তদন্তকারীরা ধারণা করছেন।
বেআইনি অস্ত্র রাখার অভিযোগে শুভমকে চলতি বছরের শুরুতে মহারাষ্ট্রের আকোলা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিষ্ণোই নেটওয়ার্কের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে মনে করা হয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে শুভম স্বীকার করেছেন, লরেন্সের ঘনিষ্ঠ ভাই আনমোল বিষ্ণোইয়ের সঙ্গে ভিডিও কলে তার যোগাযোগ হয়ে থাকে।
সিদ্দিকী হত্যার পর তদন্তকারীরা জেনেছেন, দুই বন্দুকবাজ ধরমরাজ কাশ্যপ ও শিবকুমার গৌতম উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচের বাসিন্দা। এ দুই প্রতিবেশী অপরাধ জগতে প্রবেশের আগে পুনেতে শ্রমিক হিসাবে কাজ করেছিলেন।
বাহরাইচের পুলিশ সুপার বৃন্দা শুক্লা জানিয়েছেন, ধরমরাজকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলেও শিব কুমার এখনও পলাতক।
নিজের শহরে দুজনের কারোরই অপরাধের তথ্য নথিবদ্ধ নেই জানিয়ে এনডিটিভি লিখেছে, পাঞ্জাবের একটি কারাগারে থাকার সময় দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হয়েছিল। তারা বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে কুখ্যাতি অর্জন করতে চেয়েছিল বলে সূত্রগুলো ধারণা করছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আসামিরা কয়েক মাস ধরে সিদ্দিকীর বাসা ও অফিসে নজরদারি চালাচ্ছিল। হামলার জন্য সন্দেহভাজনদের প্রত্যেককে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। আর অস্ত্র দেওয়া হয়েছিল হত্যার দিন কয়েক আগে।
গ্রেফতার হওয়া দুই সন্দেহভাজন এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন এবং বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে। বাবা সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডের পর তার ঘনিষ্ঠ বলিউড তারকা সালমান খানের মুম্বাইয়ের বাসায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন