ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘাত এবং গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনকে উপেক্ষা করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
সেই সঙ্গে তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থা ইসরাইলের সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলেও জোর দিয়ে জানান।
শনিবার রাজধানী আঙ্কারায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এরদোগান বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা ইসরাইলের প্রতিটি পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করছি। সেই সঙ্গে তুরস্কের বিরুদ্ধে ইসরাইলের প্রতিটি পদক্ষেপকেও আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে মনিটর করছি’।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ইসরাইল শুধু ফিলিস্তিন এবং লেবাননের স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করছে না, বরং আশেপাশের এলাকাতেও অস্থিতিশীলতা ছড়াতে কাজ করছে। আমরা এটি উপেক্ষা করতে পারি না। আমরা এই সমস্ত বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন। আমরা নিষ্ক্রিয় নই।
এরদোগান এ সময় তুরস্কের অভ্যন্তরীণ ঐক্য রক্ষার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘যতক্ষণ আমাদের জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকবে, আমরা এই হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব’।
তিনি বলেন, এটি স্পষ্ট যে, তুরস্ক ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে এবং দেশটির রাজনৈতিক দৃশ্যপটেও পরিবর্তন অব্যাহত থাকবে।
সেই সঙ্গে তুর্কি প্রেসিডেন্ট তার মন্ত্রিসভায় আরও পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর পদত্যাগের পরই এমন ইঙ্গিত আসল।
এরদোগান জানান, মন্ত্রিসভার পাশাপাশি ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (AK পার্টি)-এর উপপ্রধানদের মধ্যেও পরিবর্তন হতে পারে।
২০২৩ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোগানের বিজয়ের পর গঠিত নতুন মন্ত্রিসভায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং পরিবেশ, নগর পরিকল্পনা ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। একইভাবে মার্চ মাসের ৩১ তারিখের পৌর নির্বাচনের পর একে পার্টির বিভিন্ন প্রাদেশিক শাখার চেয়ারম্যানরাও পদত্যাগ করেছেন।
AK পার্টির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এক বিবৃতিতে এরদোগান পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন এবং উল্লেখ করেছেন যে, ‘যদি বিদ্যমান নেতারা আমাদের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারে, তাহলে নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন হবে’।
এদিকে গত ১ অক্টোবর দেশটির জাতীয়তাবাদী আন্দোলন পার্টির (MHP) নেতা দেবলেত বাহচেলি পিপলস ইক্যুয়ালিটি অ্যান্ড ডেমোক্রেসি পার্টির (DEM) কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাত মেলানোর প্রেক্ষিতে এরদোগান সাম্প্রতিক সংলাপ আহ্বানের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন এবং বলেছেন, এগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত নয়।
৮ অক্টোবর বাহচেলি তার এই উদ্যোগকে তুরস্কের ‘জাতীয় ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
এ নিয়ে এরদোগান সাংবাদিকদের বলেন, এটি খুবই স্পষ্ট ও দৃঢ়ভাবে বাড়ানো একটি হাত। বাহচেলি তুরস্কের রাজনৈতিক কাঠামোতে পুনর্মিলন ও সংলাপের আহ্বানের গুরুত্বের ওপর জোর দিচ্ছেন। এই পদক্ষেপ উপেক্ষা করা যাবে না। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।
বাহচেলি যেমন তার এই উদ্যোগকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একত্রে দাঁড়ানোর আহ্বান হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তেমনি এরদোয়ানও একই অনুভূতির পুনরাবৃত্তি করেছেন।
তিনি বলেন, তুরস্কের কোথাও সন্ত্রাসবাদ থাকবে না, এটা খুবই পরিষ্কার। আমরা সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করি এবং সবসময় সন্ত্রাসী পন্থা ছাড়াই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রস্তুত আছি। সূত্র: ডেইলি সাবাহ ও হুরিয়েত নিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন