বহুকোষী প্রাণীর দেহে কীভাবে জিন নিয়ন্ত্রণ হয়? দীর্ঘদিন ধরে জীবকোষের মাইক্রো আরএনএ (রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড)-আবিষ্কার এবং জিনের ট্রান্সক্রিপশন পরবর্তী পরিস্থিতিতে তার ভূমিকা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গবেষণা করেছেন ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন। আর এতেই ধরা দিলো সাফল্য। ২০২৪ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দুই মার্কিন বিজ্ঞানী। সোমবার (৭ অক্টোবর) সুইডেনের নোবেল অ্যাসেমব্লি অ্যাট ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট এ বছরের নোবেল প্রাপক হিসাবে তাদের নাম ঘোষণা করেছে।
অ্যামব্রোস আর রাভকুনের আবিষ্কার, মাইক্রোআরএনএ দিয়ে জিন নিয়ন্ত্রণ, শত মিলিয়ন বছর ধরে চলে এসেছে। তবে তাদের জিন নিয়ন্ত্রণপ্রক্রিয়ায় অভিযোজিত হয়েছে জটিল জটিল বহুকোষী প্রাণী। তাদের মতে, ক্রোমোজোমের মধ্যে থাকা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র উপাদান মাইক্রো আরএনএ-এর ‘হাতেই’ রয়েছে জিনের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি।
ভিক্টর অ্যাবব্রোস
পোলিশ বংশোদ্ভূত জীব রসায়নবিদ ভিক্টর আমেরিকার নাগরিক। ১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যামশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন এ চিকিৎসাবিজ্ঞানী। তিনি ১৯৭৯ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত একই প্রতিষ্ঠানে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুয়েটসের প্রধান গবেষক হন। বর্তমানে তিনি ম্যাসাচুয়েটস মেডিকেল স্কুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাচারাল সাইন্সের প্রফেসর হিসেবে কাজ করছেন।
গ্যারি রাভকুন
১৯৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন গ্যারি রুভকুন। তিনি ১৯৮২ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৫ সালে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের প্রধান গবেষক হন। বর্তমানে এখানেই জেনেটিকসের প্রফেসর হিসেবে কাজ করছেন তিনি।
ক্রোমোজোমের মধ্যে থাকা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র উপাদান মাইক্রো আরএনএ জৈব রসায়নবিদ্যার জগতে এমআরএনএ নামেই পরিচিত। ডায়াবিটিস থেকে ক্যানসার পর্যন্ত মানবশরীরের নানা ধরনের রোগের পিছনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জিনই দায়ী। সেই জিনের কাজের নিয়ন্ত্রক হিসেবে জুড়ে রয়েছে এক বা একাধিক এমআরএনএ।
নিজস্ব সঙ্কেত আদানপ্রদান পদ্ধতির মধ্য দিয়ে আমাদের শরীরের কোষ থেকে কোষে সঙ্কেত বয়ে নিয়ে যেতে পারে এমআরএনএ। কিন্তু এত দিন পর্যন্ত তার উপস্থিতির কথা জানা থাকলেও চরিত্র এবং গতিবিধি অজানা ছিল বিজ্ঞানীদের। ভিক্টর এবং গ্যারির ‘হাত ধরে’ জানা গেল, জিনের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে ‘মাইক্রো আরএনএ’ নামে এমন গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের প্রকৃত ভূমিকা। সি এলেগান্স নামে ক্ষুদ্র কীটের দেহে এম আরএনএর প্রভাব নিয়ে গবেষণা করে এই সাফল্য পেয়েছেন তারা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন