ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ঘনিষ্ঠ মিত্র’ হিসেবে বিবেচনা করা যায় কিনা, এমন প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। রবিবার (৬ অক্টোবর) প্রকাশিত সিবিএস নিউজের ‘৬০ মিনিটস’ অনুষ্ঠানের একটি সাক্ষাৎকারে কমলাকে এই প্রশ্নটি জিজ্ঞেস করা হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
উত্তরে কমলা বলেন, ‘আমি মনে করি, সঠিক প্রশ্নটি হলো-আমেরিকার জনগণ ও ইসরায়েলের জনগণের মধ্যে কি গুরুত্বপূর্ণ জোট রয়েছে? আর এই প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’।’
সাক্ষাৎকারে কমলাকে আরও জিজ্ঞাসা করা হয়, গাজার ওপর ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ করতে এবং লেবাননে হামলা থামাতে যুক্তরাষ্ট্র কী করছে।
জবাবে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা বলেন, 'গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলসহ ওই অঞ্চলের আরব নেতাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে আসছে এবং তা চালিয়ে যাবে।'
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাজের ফলস্বরূপ, ওই অঞ্চলে ইসরায়েল কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।’ তবে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত লক্ষ্যের বা উত্তেজনা প্রশমনের পথে বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ তুলেছেন সমালোচকরা।
পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করেছেন, গাজা যুদ্ধ বন্ধ করতে ইসরায়েলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ প্রয়োগের ব্যর্থতা মধ্যপ্রাচ্যকে একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতের দিকে ঠেলে দেবে। মানবাধিকার কর্মীরা বাইডেন প্রশাসনের প্রতি ইসরায়েলি সরকারের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।
ওয়াশিংটন প্রতিবছর ইসরায়েলকে অন্তত ৩.৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা প্রদান করে। গত বছর অক্টোবর মাসে গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বাইডেন ১৪ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত সহায়তার অনুমোদন দিয়েছেন।
চলমান সহিংসতার মধ্যে বাইডেন প্রশাসন বারবার বলেছে, তারা কূটনীতিকে সমর্থন করে এবং উত্তেজনা প্রশমনের পক্ষে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এটাও বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের ‘নিজেকে রক্ষা করার অধিকার'কে সমর্থন করেন।
সমালোচকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন বক্তব্য নেতানিয়াহুর ডানপন্থি সরকারের কার্যক্রমে খুব বেশি প্রভাব ফেলে না। কারণ বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক এবং কূটনৈতিক সমর্থনের শর্তাদি নির্ধারণ করতে অস্বীকার করেছে।
রবিবার কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত এক বছর ধরে ইসরায়েলি সরকারের সম্প্রসারিত যুদ্ধাপরাধে সহায়তা করে যাচ্ছেন যা ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের আইনের লঙ্ঘন। এছাড়া বাইডেন সংখ্যাগরিষ্ঠ মার্কিনিদের মতামতকেও উপেক্ষা করছেন, যারা ইসরায়েলকে আরও অস্ত্র পাঠানোর বিরোধিতা করছেন।’
এদিকে সম্প্রতি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাইডেন প্রশাসনের নীতির ওপর নতুন করে সমালোচনা উঠেছে।
পেন্টাগনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আগামী ৯ অক্টোবর মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করতে যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন