বিচারের আগে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে সেটি শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘যতদিন পর্যন্ত না বিচার নিশ্চিত হবে; ততদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে রাজনীতির ময়দানে ফিরিয়ে আনতে চান, তাহলে এই আহতদের রক্তের উপর পাড়া দিয়ে তাদেরকে মাঠে আনতে হবে।’
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত গণজমায়েতে এসব কথা বলেন তিনি।
ক্ষমতার লোভে অনেক দল আ. লীগকে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলছে দাবি করে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, মন্ত্রিত্বের লোভে, ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে, সংসদে যাওয়ার লোভে, আপনারা যদি মনে করেন— আহতদের রক্তের উপর দিয়ে ক্ষমতায় যাবেন তাহলে মনে রাখবেন, আপনি জাতীয় বেঈমান হিসেবে পরিচিত হবেন।’
তিনি বলেন, ‘শহীদের রক্ত শুকানোর আগে অনেক মুরুব্বি আওয়ামী লীগকে ক্ষমার কথা বলছেন, নির্বাচনে আনার কথা বলছেন। আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতের আগে তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে সেটি শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।’
রাজনীতির এসব মুরব্বিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, ‘যেই আওয়ামী লীগ এখনও পর্যন্ত একটা সরিও বলে নাই, এখনও পর্যন্ত অপরাধ স্বীকার করে নাই, তাদের সাথে কিসের রিকনসিলিয়েশন? তারা ক্ষমা চাওয়ার আগে- তারা ক্ষমা চাওয়া তো দূরে থাক তারা বিদেশে বসে হত্যার হুমকি দিচ্ছে- আমরা দেখছি মুরব্বিদের মধ্যে তাদের জন্য মায়া হচ্ছে। যারা এই রিকনসিলিয়েশনের আলাপ তুলছেন, আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে দেখতে চাচ্ছেন আপনারা ক্ষমতামুখি আর আমরা আহত, আমরা জনতামুখি।’
তিনি বলেন, একাত্তরকে পুঁজি করে আওয়ামী লীগ শত মায়ের কোল খালি করেছে, শত সন্তানকে এতিম করেছে, শত মাকে সন্তান হারা করেছে। যারা একাত্তরকে আওয়ামী লীগকরণ করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। একাত্তরকে পুঁজি করে যাদের ইজ্জত লুন্ঠন করা হয়েছে, যাদের ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে, যেই পরিবার গুলোকে মানুষের সামনে লজ্জিত করা হয়েছে সেই পরিবারগুলোর ইজ্জত ফিরিয়ে দিতে হবে।
প্রশাসন-পুলিশ প্রত্যেকটা স্তরে স্তরে ফ্যাসিজমের আখড়া গড়ে উঠেছে উল্লেখ করে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেকটি জায়গা থেকে এই ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতারা জেল থেকে বের হয়, মনে হয় শ্বশুর বাড়িতে পিকনিক করতে এসেছে। আমরা খবর পেয়েছি, ক্যান্টনমেন্ট গুলোতে, জেল খানাগুলোতে নাকি রাতের বেলায় ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করা হয়।’
ভারতের সঙ্গে কোনো নতজানু সম্পর্ক আর হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, সম্পর্ক হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। ভারত এখন জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে এবং ‘গুজরাট কসাই’ আমাদেরকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সাজেশন দিচ্ছে।
‘আমরা ‘গুজরাট কশাই’কে বলতে চাই, আমার ভাই আবু আলিফকে পঙ্গু করে রাস্তায় জবাই করা হয়েছে। জবাই করার পরেও আমাদের দেশের আলেম সমাজ, আমরা ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি।’
লিটন দাস আবার অধিনায়কলিটন দাস আবার অধিনায়ক
গণজমায়েতে উপস্থিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএনির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইশরাক হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন