কুষ্টিয়া শহরে কর্তব্যরত অবস্থায় এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে চড়থাপ্পড় ও জুতা দিয়ে পেটানোর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এরপর আজ সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী মোহনা খাতুন (৪৪) ও শহরের হাউজিং বি ব্লকের কদমতলা এলাকার বাসিন্দা রিপন হোসেনের স্ত্রী মোছা. শান্তা (৩৯)। তাঁরা বর্তমানে কুষ্টিয়া মডেল থানায় রয়েছেন। এ বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এর আগে সোমবার সকালের দিকে কুষ্টিয়া শহরে ব্যস্ততম কোর্টস্টেশন রেলগেট এলাকায় কর্তব্যরত অবস্থায় এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে (৫৫) মারধর করেন দুই নারী। মারধরের ঘটনার সিসি ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, বিকেলে ভুক্তভোগী ট্রাফিক পুলিশ সদস্য (৫৫) বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগ আনা হয়েছে। এরপর মারধরের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দুই নারীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পরে তাঁদের দুজনকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে আটক করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে জুতা দিয়ে পেটাচ্ছেন দুই নারী। আজ সোমবার সকালে কুষ্টিয়া শহরের কোর্টস্টেশন রেলগেট এলাকায়ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ওই ট্রাফিক পুলিশ কোর্টস্টেশন মোড় এলাকায় দাঁড়িয়ে আছেন। এ সময় সড়কের বিপরীত দিক থেকে মধ্যবয়সী এক নারী হেঁটে তীব্র গতিতে ট্রাফিক পুলিশের দিকে যাচ্ছেন। ওই নারী ট্রাফিক পুলিশের সামনে গিয়েই ডান হাত দিয়ে সজোরে থাপ্পড় দেন, আঙুল নাড়িয়ে কিছু বলতে থাকেন। এরপর পায়ের জুতা খুলে মারতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর আরেক নারী এসে জুতা দিয়ে মারতে থাকেন। তখন প্রথম নারী মুঠোফোন দিয়ে ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। আশপাশে দাঁড়িয়ে এবং সড়কে চলতে থাকা অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন ব্যক্তি এসব দৃশ্য দেখেন। একপর্যায়ে কয়েকজন ব্যক্তি তাঁদের নিবৃত্ত করেন। তবে পুরো মারধরের সময় ওই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে কোনো পাল্টা আঘাত করতে দেখা যায়নি।
ভুক্তভোগী ট্রাফিক সদস্যের বরাত দিয়ে কুষ্টিয়া ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, সকালে রেলগেট এলাকায় ট্রেন আসার আগে রেলগেটের প্রতিবন্ধক পড়ে যায়। এ সময় ওই নারী রিকশাযোগে তাঁর সন্তানকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে রেলগেট উঁচু করতে বলেন। ট্রাফিক সদস্য বিষয়টি তাঁর এখতিয়ার না বলে জানিয়ে দেন। এ নিয়ে ওই নারী বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। পরে ওই নারী আরও এক নারীকে নিয়ে এসে আচমকা মারধর করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন