রাজধানীর চকবাজারের পোস্তা এলাকায় চাঞ্চল্যকর প্লাস্টিক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম (৪৬) হত্যার ঘটনায় এক নারীকে গ্রেপ্তারসহ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতের নাম সাবিনা আক্তার (২৫)।
পুলিশ জানায়, চাকরির দেওয়ার কথা বলে এক সন্তানের জননী সাবিনা আক্তারের সঙ্গে বারবার শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করেন তার পূর্ব পরিচিত অভিভাবকতুল্য বড়ভাই নজরুল ইসলাম। গত ২ ডিসেম্বর রাতে নজরুল সাবিনাকে বাসায় ডেকে নিলে চাকরি না দিতে পারার বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে নাজমুলের পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা করেন সাবিনা।
রবিবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জসীম উদ্দিন।
তিনি বলেন, গত বুধবার রাতে চকবাজারের পোস্তা এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা এবং পুরুষাঙ্গ কাটা অবস্থায় নজরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে চকবাজার মডেল থানা পুলিশ। এছাড়া সেখান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাকুসহ নানা আলামত জব্দ করা হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ৪ ডিসেম্বর নিহতের বড়ভাই মো. তহিদুল ইসলাম ওরফে তাপস বাদী হয়ে চকবাজার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় শনিবার ভোরে যশোরের বাঘারপাড়ার মির্জাপুর মধ্যপাড়া এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সাবিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে ভিকটিম নজরুল ইসলামের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
চাকরির প্রলোভনে বারবার শারীরিক সম্পর্ক করেন ‘অভিভাবকতুল্য বড়ভাই’, অতঃপর পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা
চাকরির প্রলোভনে বারবার শারীরিক সম্পর্ক করেন ‘অভিভাবকতুল্য বড়ভাই’, অতঃপর পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা
লালবাগের ডিসি জসীম উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাবিনা ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। জানিয়েছেন, প্রায় এক মাস আগে একজন ব্যক্তির মাধ্যমে চাকরির জন্য ভিকটিম নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তারা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। নজরুলের স্ত্রী-সন্তান বাসায় না থাকায় গত ২ ডিসেম্বর রাতে তিনি সাবিনাকে বাসায় ডেকে নেন। চাকরি দিতে না পারায় ওইরাতে নজরুল ও সাবিনার মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।
একপর্যায়ে সাবিনা প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে শিল পাটার শিল দিয়ে নাজমুল ইসলামকে মাথা ও মুখে আঘাত করেন ও মুখে বালিশ চাপা দেন। এসময় নজরুল জ্ঞান হারিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়লে তার হাত, পা ও মুখ বেঁধে ধারালো চাকু দিয়ে পুরুষাঙ্গ কেটে আলাদা করে নির্মমভাবে হত্যা করেন সাবিনা।
সংবাদ সম্মেলনে ডিসি নজরুল বলেন, সাবিনা রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু এই কষ্টের কাজ থেকে সরে যাওয়ার আশায় চাকরি খুঁজতে থাকেন। এরমধ্যে নজরুলের সঙ্গে পরিচয় হয় সাবিনার। যা তার স্বামীও জানতেন।
গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে চকবাজার মডেল থানায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান ডিসি জসীম উদ্দিন।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন