যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান পেশায় ছিলেন অভিনেতা। অধিকাংশ গবেষণায় তিনি ১০ সেরা মার্কিন প্রেসিডেন্টের একজন। তার সাফল্যের কারণ ছিল একদল চৌকস ও পেশাদার আমলা। যারা সঠিক তথ্য-উপাত্ত দিয়ে প্রেসিডেন্টকে সফল করার জন্য নিবেদিত ছিলেন। রিগ্যানের প্রশাসনবিষয়ক কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না।
কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসনবিষয়ক বিস্তর অভিজ্ঞতা থাকার পরও তিনি শেষপর্যায়ে এসে বিতর্কিত আমলাদের ওপর নির্ভর করেছিলেন। তারা যতটা না সরকারকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন, তার চেয়ে বেশি নিজেদের আখের গুছিয়েছেন। স্বার্থের জন্য একচোখা নীতি অনুসরণ করেছেন। কখনো কখনো তারা শেখ হাসিনার চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার বলে দাবি করতেন। এ ধরনের আমলাদের কারণে প্রশাসনে বিভক্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল।
যাদের হাতে প্রশাসন সবচেয়ে দলীয়করণ হয়েছে, তাদের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ প্রশাসনকে দলীয়করণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। নির্বাচন কমিশন সচিব হিসেবে তিনি আগের রাতে ভোটের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে পূর্বধলার ইউএনও ২০০১-০২। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে ২০০৬ সালে উপসচিব পদে পদোন্নতি পান। পরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শীর্ষপদ নির্বাচন কমিশন সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব ছিলেন।
তিনি ২০২২ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব পদ থেকে অবসরে যান। এর আগে তিনি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব ছিলেন। সর্বশেষ তিনি সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন। এই কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনের সচিব থাকাকালে রাতের ভোটের আয়োজন করে আওয়ামী সরকারকে মসনদে আসীন করার অন্যতম ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন, সেখানেও প্রভাব বিস্তার করতেন।
নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের রোষানলে পড়ে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন আলোচিত দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হেলালুদ্দীনসহ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তদারকি করেছিলেন আলোচিত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন