পুলিশ কর্মকর্তা হত্যার সাথে জড়িত রবিউল ওরফে আরাভ খান ইন্টারপোলের কাছে ওয়ান্টেড। দুবাইয়ে তার ব্যবসাসহ নান কর্মকাণ্ড অনেক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল দেশে। কিন্তু তার এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের নেপথ্য শক্তি নিয়ে এতোদিন ধোঁয়াশা ছিলো। অবশেষে সেই ধোঁয়াশা অনেকটা কেটেছে। জানা গেছে, আরাভের পেছনের ব্যক্তি কারা ছিলেন।
জানা যায়, চট্টগ্রামের এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডের মালিক ইয়াসিন চৌধুরী, যিনি বিভিন্ন ব্যাংক এবং প্রতিষ্ঠান থেকে ১৬১০ কোটি টাকা সমপরিমান অর্থ লোপাট করে বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে পলাতক। সেখানে তিনি গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। যার কোনটির মালিকানায় রয়েছেন তিনি নিজেই, আবার কয়েকটির মালিকানায় আছে তার ছেলে জাফির ইয়াসিন চৌধুরী। আরব আমিরাতের টি-টেন ক্রিকেট লিগের দল বাংলা টাইগারের অন্যতম মালিকও এই ইয়াসিন চৌধুরী।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পাচার করা বিপুল পরিমাণ টাকা বৈধ করতেই ইয়াসিনের ক্রীড়া সংগঠক বনে যাওয়ার এই চেষ্টা। এই বাংলা টাইগার্স নিবন্ধন করা হয়েছে কানাডাতেও। সম্প্রতি অক্টোবর ২০২৪ এ গ্লোবাল টি ২০ বা জিটি২০ এবং আবুধাবী টি১০ লীগেও খেলেছে এই দলটি। বাবা ইয়াসিন চৌধুরীর হয়ে কানাডায় দলটির মালিকানা সামাল দেন ছেলে জাফির ইয়াসিন চৌধুরী।
এদিকে, জাফিরের সঙ্গে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যায়। যে কারণে সাকিব নিজেই বাংলা টাইগার্সের অধিনায়ক। আবার বি টাইগার্স ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং নামে দুবাই ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানে জাফিরের ব্যবসায়িক পার্টনারও সাকিব।
আরাভ খান ট্রাভেল এন্ড টুরিজ্যম এলএলসি’র লাইসেন্স।
জাফিরের মালিকানাধীন আরও একটি প্রতিষ্ঠান হলো আরাভ খাঁন ট্রাভেল এন্ড টুরিজ্যম এলএলসি। আরাভ খাঁন নামের এই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও মালিকানায় জাফির থাকায় প্রশ্ন উঠেছে— কোন সম্পর্ক ছাড়াই কি কেউ কোনো ব্যক্তিকে ব্যবসায় যুক্ত করে? আর এই সূত্র ধরেই আরাভের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন ক্রিকেটার সাকিব। কেবল বন্ধুত্ব রক্ষার্থেই দুবাইতে যাননি তিনি।
বিশ্বস্ত সূত্রে আরও জানা যায়, ইয়াসিন চৌধুরীর নেপথ্য শক্তি চট্টগ্রামের পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা আ জ ম নাছির। যিনি নিজেও ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
হাইকোর্ট ২০২৩ সালেও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) ইয়াসিন চৌধুরীর বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলো। কিন্তু আওয়ামী প্রভাবের কারণে তখন কিছু হয়নি।
অন্যদিকে, গত ৩ সেপ্টেম্বর দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাতে জানা যায়, ন্যাশনাল ব্যাংকের কাছে চট্টগ্রামের ইয়াসিন চৌধুরীর এফএমসি গ্রুপের ১ হাজার ৬১০ কোটি টাকার ঋণ বিদ্যমান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন