স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, কর্মকর্তারা জড়িত না থাকলে দুর্নীতি হয় না। সঠিক নজরদারি থাকলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি করার সুযোগ কম। আজ বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ঢাকা ওয়াসা’র কার্যালয় পরিদর্শনে এসে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, যে কয়দিনই দায়িত্বে থাকি আমি আমার মন্ত্রণালয় অর্থাৎ ওয়াসা ও সিটি কর্পোরেশনের নামে যেসব বদনাম আছে সেগুলো ঘুচাতে চাই। ওয়াসা’র পদ্মা পানি শোধনাগার নিয়ে কয়েকদিন আগে সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলাম, সেখানে যেই পাইপ বসানো হয়েছে তাতেও দুর্নীতি রয়েছে। ওই পাইপের কারণে যে পরিমাণ পানি শোধনের কথা তা হচ্ছে না। এখন ওই পাইপ অপসারণ করতেও সরকারের হাজার কোটি টাকা গচ্ছা যাবে। তাই আগের দিনে কি হয়েছে না হয়েছে সে বিষয়ে আর শুনতে চাই না। নগরবাসীর সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার। তাই নগরবাসীর সেবা নিশ্চিতের জন্য আপনারা সর্বোচ্চ কাজ করে তা নিশ্চিত করবেন। ওয়াসা’র কর্মকর্তা-কর্মচারিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের যদি মনে হয় ওয়াসা’র কোনো কর্মকর্তা, দায়িত্ববান ব্যক্তি দুর্নীতিতে জড়িত, তা আমাদের জানাবেন আমরা সে বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি মনিটরিং সেল করা আছে, আপনারা সেখানে অভিযোগ জানাতে পারবেন। ওয়াসার পানি সরবরাহে কোনো সংকট যেন সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে এখন থেকেই সচেষ্ট হন। ওয়াসার সেবার মান নতুন করে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আপনারা গ্রহণ করবেন সেই প্রত্যাশা সবার।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা যে সংস্কারের কথা বলছি, এতগুলো মানুষের জীবনের বিনিময়ে, ত্যাগের বিনিময়ে বর্তমান বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি এসেছে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে দেশকে ভালো একটি জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। সংস্কারটা আমাদের চিন্তার জায়গা থেকে করতে হবে। ঢাকা ওয়াসায় যখন আমি আসলাম তখন দেখলাম এখানে আমার দুটি ছবি টাঙানো আছে। তাহলে সেই সংস্কারটা কোথায় হলো? আগে শেখ হাসিনার ছবি টাঙানো থাকতো, এখন আমার ছবি টাঙানো হয়েছে। আমি অনুরোধ করব এই বিষয়গুলো পরিহার করে চলবেন।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রাণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, নগরবাসিকে সুপেয় পানি পরিবেশনার দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসা’র। কিন্তু এই ওয়াসা’র কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারি কেউই এই পানি ফুটিয়ে বা শোধন না করে খেতে পারেন না। আমি বিশ বছর আগে এক কর্মশালায় সিঙ্গাপুর গিয়েছিলাম- সেখানে সবাই তাদের সাপ্লায়ের পানি পান করে। কিন্তু আমাদের দেশের সাপ্লাইয়ের পানিতে বিভিন্ন রকম ময়লা-জীবাণু থাকে। পানযোগ্য নয়। তাই এই বিষয়ে ঢাকা ওয়াসাকে কাজ করতে হবে। এই কঠিন চ্যালেঞ্জটা পূর্ণ করতে হবে। একই সঙ্গে পয়ঃ বর্জ্য শোধনের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের ব্যবহৃত ময়লাগুলো যেনো পানির লাইনে মিশে না যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা ওয়াসা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, আজ ছাত্র বিপ্লব না হলে আমি এই জায়গায় থাকতে পারতাম না। তাই আমার সময়ে যদি কেউ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয় সে যেই হোক না কেনো তাকে ছাড় দেয়া হবে না। এসময় আরো বক্তব্য দেন ঢাকা ওয়াসা’র প্রধান প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পক্ষে আজিজুল আলম খান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন