নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে বেশ কিছু নিত্যপণ্যের আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয়া হয়েছে। তবুও এর প্রভাব পড়ছে না খুচরা বাজারে। ফলে বাজারে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়ছেন ক্রেতারা। দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় কেনাকাটার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
আলুর দাম নাগালের ভেতরে রাখতে সরকার আলু আমদানিতে শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করেছে। পেঁয়াজের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। অথচ বাজারে গিয়ে সাধারণ ক্রেতারা এই শুল্ক ছাড়ের কোনো সুফল পাননি। আগস্টের ১ তারিখ আলুর দাম ছিল প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকার মধ্যে, কিন্তু আলু আমদানিতে ব্যবসায়ীরা ১০ শতাংশ শুল্ক ছাড় সুবিধা নিলেও তিন মাসের মাথায় দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে কেজিপ্রতি ৭০ টাকা। একইভাবে ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নামানো হয় পেঁয়াজের শুল্ক। কিন্তু বাজারে এর উল্টো প্রভাব দেখা যাচ্ছে। আগস্টের শুরুতে খুচরা বাজারে পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১১০ টাকার মধ্যে থাকলেও এখন তা ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
বাসাবো বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী বশির বলেন, অফিসের থাকায় প্রতিদিন বাজার করতে পারি না। পুরে সপ্তাহের জন্য প্রতি শুক্রবার বেশি করে ৪-৫ কেজি করে আলু-পেঁয়াজ কিনে নেই। কিন্তু এখন যে দাম এতে সেটি কমিয়ে এক কেজি করে কিনতে হচ্ছে। সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো রয়েছে শীতের সবজি। তবে আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। প্রতি কেজি কচুরমুখী বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ১০০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন সবজি শিমের কেজি ১০০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, ছোট আকারের বাঁধাকপি ৫০ টাকা, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা। লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ১৫০ টাকা, কাঁচাকলার হালি ৪০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
লাল শাকের আঁটি ১০ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, মুলা শাক ২০ টাকা, কলমি শাক ১৫ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা এবং ডাঁটা শাক ৩০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। কাঁচা আদা ১২০ টাকা এবং পুরনো আদা ২৮০ টাকা, রসুন ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি কক ৩০০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ২৮০ টাকা, দেশী মুরগি ৫২০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ২৯০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন ২৩০ টাকা, দেশী মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকা।
বাজারে গরুর গোশতের কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার গোশত ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির গোশতের কেজি এক হাজার ১৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ এক হাজার টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ দেড় হাজার টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাষের শিংয়ের কেজি (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুইয়ের দাম কেজিতে বেড়ে (আকারভেদে) ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা, দেশী মাগুর ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, মৃগেল ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ১০০০ টাকায়, বোয়াল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, কাতল ৩২০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পোয়া মাছের কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৪০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১০০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৪০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা এক হাজার ২০০ টাকা, বাইম ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা, দেশী কই এক হাজার টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন