বায়ান্নর ভাষা সৈনিক এবং একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে মার্কিন মুল্লুকে আন্তর্জাতিক জনমত সৃষ্টিতে নিরন্তরভাবে সচেষ্ট থাকা এম আজিজুল জলিল (৯১) ইন্তেকাল করেছেন। তিনি ২০ নভেম্বর ওয়াশিংটন ডিসির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
অবিভক্ত ভারতে জলপাইগুড়িতে ১৯৩৩ সালে জন্মগ্রহণকারি আজিজুল জলিল উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি, অক্সফোর্ড এবং উইলিয়ামস কলেজে। তদানিন্তন সিভিল সার্ভিস কমিশনের সদস্য আজিজুল জলিল বিশ্বব্যাংকে চাকরি করেছেন ১৯৭০ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী জয়নব জলিল, ৩ পুত্র জাবেদ, আসিফ এবং আফতাব এবং তিন পুত্রবধূ আলেমা সিদ্দিকী, লিন্ডসে জলিল এবং জোৎস্না গুপ্তসহ ৭ নাতি-নাতনী এবং অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন। তারা সকলেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।
ম্যারিল্যান্ডে বসবাসরত পেন্টাগণের সাবেক বিজ্ঞানী ও লেখক ড. আশরাফ আহমেদ এ সংবাদদাতাকে জানান, ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে মেরিল্যান্ড পটোম্যাকের ইসলামিক কমিউনিটি সেন্টার মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী অংশনেন। এরপর তাকে দাফন করা হয়েছে একই স্টেটের আডেলফিতে অবস্থিত জর্জ ওয়াশিংটন গোরস্থানে।
নিজের লেখা গ্রন্থে আজিজুল জলিল বায়ান্ন সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য বিক্ষোভকালে পাশে থাকা বরকত পুলিশের গুলিবিদ্ধ হলে তিনি রক্তে ভেজা এই বন্ধুকে রিকশা করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই ঘটনার হৃদয়বিদারক বর্ণনা ম্যারিল্যান্ডে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনেকের শোনার সৌভাগ্য হয়েছে। আরো জানা গেছে, ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ শুরু হলে তিনি পাকিস্তানের নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত থেকেও।
বিজ্ঞানী-লেখক ড. আশরাফ আহমেদ জানান, ওয়াশিংটন ডিসি এলাকার ‘শনিবারের কফি ক্লাব’ নামে খ্যাত আড্ডায় প্রথমে মেরিল্যান্ডের বেথেসডা শহরের মন্টগোমারি মলে এবং পরবর্তীতে একই নামের ভার্চুয়াল আড্ডার তিনি নিয়মিত সদস্য ছিলেন। এই আড্ডায় ৭০ বছরের অধিক বয়েসী প্রবাসীরাই অংশ নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন এবং প্রিয় মাতৃভূমির সমস্যা-সম্ভাবনাও স্থান পায় এই আড্ডায়। সত্যিকারের মার্জিত রুচির ভদ্রলোক হলেও তাঁর আমুদে ও বুদ্ধিদীপ্ত মৃদুকথন সবাইকে আনন্দ দিত।
বিডি-প্রতিদিন
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন