মাস দু’এয়েক আগেও চাকরির জন্যে পড়াশোনা করছিলাম। স্বপ্ন ছিল- বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে যাব। এরপর চাকরি জীবনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে হয়ত কোনো মন্ত্রণালয়ের সচিব হবো। এভাবেই নিজের লালিত স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলোকে দেয়া একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে তিনি তার এই স্বপ্নের কথা জানান।
সারজিস বলেন, ৫ আগস্টের আগের জীবন আর বর্তমান জীবন- ১৮০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে ঘুরে গেছে। ওই জীবনের ওপর আমার নিয়ন্ত্রণ ছিল, রুটিন আমি ঠিক করতাম। কিন্তু এরপর থেকে আমার আর ঠিক করা হয়ে উঠেনি। কিন্তু বর্তমান জীবনের সম্পূর্ণ বিপরীত। তিনি জানান, পরবর্তী জীবন ঠিক হয়েছে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার দাবির প্রেক্ষিতে। ছাত্র-জনতা যেভাবে চেয়েছে- যখন প্রয়োজন হয়েছে, আমাদের যেতে হয়েছে।
কাজ করতে গিয়ে নতুন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই জীবন দু’মাস আগেও আমরা প্রত্যাশা করিনি। স্বপ্নেও ভাবিনি এমন কোনো কিছু হবে। একদম নতুন একটা জীবন, প্রতিটা দিনই নতুন। নতুন নতুন প্রোগ্রাম, নতুন নতুন সিচ্যুয়েশন; যেগুলো আমরা ফেস করছি। বেশিরভাগ প্রোগ্রাম যেগুলো হয়- সেগুলো আমরা প্রথম ফেস করছি। দু’মাস আগের জীবনে সচরাচর এই জীবনে অভ্যস্ত তো ছিলামই না। ফেসও করা হয়নি সেভাবে। সে জায়গা থেকে আমাদের নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে- মানুষকে, সিচ্যুয়েশনকে, প্রতিষ্ঠানকে, দেশকে, সিস্টেমগুলোকে নতুন করে চিনছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা যেভাবে দেখে এসেছি, আসলে তো এগুলো এমন না। পর্দার পেছনের গল্প একটু আলাদা। অনেক ক্ষেত্রে একদমই ভিন্ন। এমন অনেক কিছুই রয়েছে- যেগুলো দেখানো হয় আসলে সেগুলো তেমন না। ভেতরের জিনিসটা আলাদা। অনেক সময় মনে করি, এইগুলোই ইউনিভার্সাল ট্রুথ; এভাবেই হয় কিন্তু আসলে পেছন থেকে এভাবেই দেখানো হয়।
কোন জিনিসটা দেখে আকাশ থেকে পড়ার মতো সিচ্যুয়েশন হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আকাশ থেকে কখনো পড়িনি। সৃষ্টিকর্তা হয়ত সেই সাহস-আত্মবিশ্বাসটা দিয়েছেন। কিন্তু প্রায় প্রতিটি-ই নতুন সিচ্যুয়েশন, যেগুলো ফেস করতে হয়। আমরা যে, এগুলো ফেস করবো, দু’মাস আগেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। যেমন ধরুন- আমরা চাকরির পড়াশোনা করছিলাম। আমাদের প্রত্যাশা ছিল- বিসিএস দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে যাব। এরপর চাকরি জীবনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে হয়ত কোনো মন্ত্রণালয়ের সচিব হবো। এমন একটা স্বপ্নের মধ্যে বসবাস ছিল। কিন্তু বর্তমানে ওই জীবনের সম্পূর্ণ বিপরীত। এই জিনিসগুলো বিচিত্র অভিজ্ঞতা। এটাই অবাক হয়ে যাওয়ার মতো।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন