দুপুর সোয়া ১টার দিকে মাজহারুল ইসলামকে নিয়ে আদালত চত্বরে পুলিশভ্যানে তোলার সময় আবারও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মুক্তির দাবি জানান দলের নেতাকর্মীরা
দুপুর সোয়া ১টার দিকে মাজহারুল ইসলামকে নিয়ে আদালত চত্বরে পুলিশভ্যানে তোলার সময় আবারও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মুক্তির দাবি জানান দলের নেতাকর্মীরা
হত্যা মামলায় গ্রেফতার ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলাম সুজনের মুক্তির দাবিতে আদালত চত্বরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এতে দুজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। দুপুর ১টার দিকে মাজহারুল ইসলামকে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস রমেশ কুমার ডাগার আদালতে তোলা হলে রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। সোয়া ১টার দিকে মাজহারুল ইসলামকে নিয়ে আদালত চত্বরে পুলিশভ্যানে তোলার সময় আবারও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মুক্তির দাবি জানান দলের নেতাকর্মীরা। সেখানে তাদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে ধাওয়া দিলে সেখান থেকে চলে যান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, একটি হত্যা মামলায় জামিন এবং রিমান্ড শুনানির জন্য দুপুরে মাজহারুল ইসলামকে আদালতে হাজির করা হবে এমন খবরে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসমর্থিত আইনজীবী এবং সমর্থকরা আদালত চত্বরে অবস্থান নেন। দুপুর পৌনে ১টার দিকে তাকে আদালতে আনা হলে ‘ভোট চোর সুজনের ফাঁসি চাই, খুনি সুজনের ফাঁসি চাই’ স্লোগান দেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। একই সময়ে ‘জয় বাংলা’ ‘সুজনের মুক্তি চাই’ পাল্টা স্লোগান দেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। পরে তাদের সরিয়ে দিয়ে মাজহারুল ইসলামকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। সেখানে দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শুনানি শেষে সাবেক এমপিকে আদালত চত্বরে পুলিশভ্যানে তোলার সময় ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে শাস্তির দাবিতে ডিম ছুড়ে মারেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। একই সময়ে তার মুক্তির দাবিতে ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেন দলের নেতাকর্মীরা। এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিয়ে আদালত চত্বর থেকে বের করে দেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সাবেক এমপিকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৫ আগস্ট পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর একরামুদৌল্লার ছিট চিলারং এলাকার বাড়িতে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে চার জনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাবেক এমপি মাজাহারুল ইসলামকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহত আবু রায়হানের বাবা ফজলে আলম। এ মামলায় জামিন ও রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
আসামিপক্ষের আইনজীবী সোহরাব হোসেন প্রধান বলেন, ‘সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজনের আজকে চাঁদাবাজির একটি মামলায় জামিন ও রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য ছিল। তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আমরা জামিন আবেদন করেছিলাম। আদালত রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী জয়নাল আবেদীন জয় বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামির সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন। আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপপরির্দশ (এসআই) বাবুল হোসেন বলেন, ‘হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলাম সুজনের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর না করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন