দেশের জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত সংবাদ প্রচার করার প্রতিবাদ জানিয়েছে আরটিভি কর্তৃপক্ষ। সরাসরি পাঠানো প্রতিবাদ লিপিতে দেশ টিভিকে অসৎ সাংবাদিকতা পরিহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরেই দেশের বড় শিল্প গ্রুপ ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগ উঠেছে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুমোদন পাওয়া টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি আদালতে আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছে দেশের একটি পরিচিত শিল্প গ্রুপ।
নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশের শীর্ষস্থানীয় একাধিক শিল্পোদ্যোক্তা আরটিভিকে জানিয়েছেন, দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান নেতিবাচক সংবাদ প্রচারের হুমকি দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে সরাসরি নির্দিষ্ট অংকের টাকা দাবি করেছেন।
বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করার অভিযোগে দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের মামলা চলমান রয়েছে। কানাডার টরন্টোতে নগদ ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন কানাডিয়ান ডলারে (প্রায় ৩২ কোটি ১৫ লাখ টাকা) বাড়ি কেনার অভিযোগ রয়েছে আরিফের বিরুদ্ধে। দেশ টিভির এই ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে ৩৩৫ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতিসহ ১২৮ কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উত্থান হওয়া আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক বিদুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সঙ্গে অর্থপাচারের সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্র হত্যার দায়ে আটক সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বান্ধবী আদালত পাড়ার মাফিয়া হিসেবে আলোচিত তৌফিকা করিমকে জুলাই বিপ্লবের আগে দেশ টিভির চেয়ারম্যান বানায় আরিফ। অভিযোগ রয়েছে, দুদকের মামলা স্থগিত এবং আদালতের নির্দেশে ফ্রিজ থাকা ১৫ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সচল করার শর্তে তৌফিকা করিমকে চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হয়। এতে মধ্যস্থতা করেছে গণহত্যার অভিযোগ ওঠা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিশেষ স্নেহভাজন দেশ টিভির বিশেষ প্রতিনিধি শামীমা আক্তার। আরটিভির চিফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোয় শামীমা আক্তারকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল।
২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৬ বার পাসপোর্ট পরিবর্তন করা আরিফ হাসানের জাল-জালিয়াতির আরও অনেক তথ্য দুদকের কাছে আছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সূত্র।
তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আরিফ হাসানের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অসমর্থিত সূত্র বলছে, আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে আঁচ করে দেশ ছেড়ে কানাডায় পালিয়েছেন তিনি।
আরটিভি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন