ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালানোর পর হিন্দুুত্ববাদী ভারত চাণক্যনীতি গ্রহণ করলেও গোটা বিশ্ব বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন বাংলাদেশকে সংস্কার ও উন্নয়ন সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন। নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার খবরে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ইউএসএআইডি, এডিবি, আইডিবি, জাইকা পর্যায়ক্রমে উন্নয়ন সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিচ্ছে। অন্যদিকে দায়িত্ব গ্রহণের দেড় মাসের মধ্যেই সব ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান গতিশীল হয়েছে। ডলার সংকট কেটে গেছে। ব্যাংকিং সেক্টর গতিশীল হয়েছে। গার্মেন্টস সংকটের সুরাহা হচ্ছে। মিল-কারখানায় উৎপাদন বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ সুবিধা পাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশ ও সংস্থাগুলো প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের সামনে সোনালী ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। আর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার। ড. ইউনূসের দায়িত্ব নেওয়ার এখনও দেড় মাস হয়নি। ইতোমধ্যে বিশ্ববাসীর কাছে নিজেকে আস্থার ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সফর করেছেন। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতিও মিলেছে। বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অপরদিকে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইসার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তিনি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের জন্য সহায়তার প্রতিশ্রুতি হিসেবে চলতি অর্থবছরের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের প্রায় ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এর আগে আগামী ৩ বছরে বাংলাদেশকে ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা করার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি)। একটা প্যাকেজের আওতায় রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন খাতের জন্য এই অর্থ দেবে তারা। এছাড়া আগামী মার্চের মধ্যে এডিবি ৯০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চতুর্থ কিস্তির ঋণের টাকা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পাচ্ছে বাংলাদেশ। এছাড়া বিভিন্ন দাতা সংস্থা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অর্থায়ন সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পাইপলাইনে আছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। যেগুলো খুব শিগগিরই পাওয়া যাবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার খাতে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) ২২০ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি উন্নয়ন সহযোগিতা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতিমধ্যে চুক্তিও সই হয়েছে। একই সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংক ৭৫০ মিলিয়ন পলিসিভিত্তিক ঋণের প্রস্তাব করেছে। এ ছাড়াও ২৫০ মিলিয়ন বিনিয়োগ ঋণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন পলিসিভিত্তিক ঋণের প্রস্তাব করেছে। এর সাথে আরও ২০০ মিলিয়ন বিনিয়োগ ঋণ প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে। এদিকে আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সাহায্য করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই অংশ হিসেবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা, সুশাসন এবং উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে এ জন্য মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের আন্তর্জাতিক অর্থবিষয়ক সহকারী সচিব ব্রেন্ট নেইম্যান বাংলাদেশ সফর করছেন। যা বাংলাদেশের জন্য নতুন আশার সঞ্চার করেছে। আর এই আশায় নতুন স্বপ্ন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা। আওয়ামী সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টানাপোড়েনে ২০১৩ সালের জুনে কর্ম পরিবেশ উন্নত করার শর্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল করা হয়। আগামী মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য- জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ। অবশ্য বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্যক্তি, দেশ ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাইডলাইনে সাক্ষাতের জন্য অনেকে মুখিয়ে আছেন। পাশাপাশি নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের দায়িত্ব নেওয়ার খবরে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ইউএসএআইডি, এডিবি, আইডিবি ছাড়াও বিশ্বের অপ্রদর্শিত বিভিন্ন দাতারা মুখিয়ে আছেন তাঁর সঙ্গে বসতে এবং বাংলাদেশকে সাহায্য করার জন্য। এছাড়া বিভিন্ন দেশের বড় বড় আইটি প্রতিষ্ঠান ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ব্যাপক সহযোগিতার আশ্বাস মিলেছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ও পরিবেশ, বন ও আবহাওয়া বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের দূরদর্শী নেতৃত্বে জার্মানী তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ইউরো সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তাই এককথায় বলা যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সোনালী ভবিষ্যত বাংলাদেশের। যা স্বৈরাচার হাসিনার দুর্নীতি ও অর্থপাচারে ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এদিকে আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সাহায্য করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই অংশ হিসেবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা, সুশাসন এবং উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে এ জন্য মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের আন্তর্জাতিক অর্থবিষয়ক সহকারী সচিব ব্রেন্ট নেইম্যান বাংলাদেশ সফর করছেন। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের কোন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার দক্ষিণ এশিয়া তথা বাংলাদেশে এটি প্রথম সফর।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের বাংলাদেশ সফরসহ সম্পর্কের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন দূর করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে জিএসপিসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগাতে পাড়লে আর্থিকখাতে দেশ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস নানাবিধ সমস্যার মধ্যে দায়িত্ব নিয়েছেন। পাশাপাশি ছিল স্বৈরাচার হাসিনার দোসর ও ভারতের নানামুখী ষড়যন্ত্র। প্রাকৃতিক বিপর্যয় বন্যা দেখা দিয়েছে। এরপরও গত ১ মাসের মধ্যে অস্থিতিশীল পোশাকখাত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। ৯৮ শতাংশ পোশাক কারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে। একই সঙ্গে দীর্ঘদিনের লোডশেডিংসহ বিদ্যুৎ সমস্যা অনেকটা কমে এসেছে। এছাড়া ব্যাংক খাতে দীর্ঘদিনের বিশৃঙ্খলা দূর হয়েছে। ৫টি ব্যাংককে ইতোমধ্যে তারল্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আরও কয়েকটি ব্যাংকের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ব্যাংকের প্রতি ধীরে ধীরে মানুষের আস্থা ফিরছে। জিএসপিসহ নানামুখী সুযোগ-সুবিধার অভাবে রফতানি সংকুচিত হয়েছে। অপরদিকে জ্বালানি সরবরাহ সঙ্কটসহ সড়কে নানাবিধ সমস্যা লেগেছিল। যা দূরীভূত হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে বাংলাদেশের জন্য সোনালী ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
এদিকে শুধু যুক্তরাষ্ট্র বা দাতা সংস্থাগুলোও নয়; ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির (পিসিএ) খসড়া পাঠিয়েছে ইউরোপের ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গত বৃহস্পতিবার ব্রাসেলস থেকে ঢাকায় এই খসড়া পাঠানো হয়। ঢাকায় ইইউ মিশন এই তথ্য জানিয়েছে। ঢাকা ও ব্রাসেলসের কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ইইউয়ের সঙ্গে সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। দুইপক্ষের মধ্যে ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের সম্পর্কের শুরুতে ইইউ ছিল বাংলাদেশের কাছে দাতাগোষ্ঠী (উন্নয়ন অংশীদারিত্ব)। পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক পর্যায়ে উন্নীত হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূসে যা এখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এক দশক পেরিয়ে গেলেও এখনো এই সুবিধা ফিরিয়ে আনতে পারেনি বাংলাদেশ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশে শ্রম পরিবেশ উন্নত করার যে শর্তের কথা বলে জিএসপি তুলে নেয়া হয়েছিল তার বেশিরভাগ এরই মধ্যে পূরণ করা হলেও শ্রম অধিকারের কিছু বিষয় নিয়ে হাসিনা সরকারের সময়ে নানাবিধ টানাপোড়েনে আপত্তির জায়গা তুলে ধরতো যুক্তরাষ্ট্র। যার কারণে হয়তো এই সুবিধা মিলেনি বাংলাদেশের জন্য। তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ায় সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশে সাহায্য করতে মুখিয়ে আছে। আর তাই এবারের প্রধান উপদেষ্টার সফরেই জিএসপি সুবিধা ফিরে পাবে বাংলাদেশ বলে আশাবাদী পোশাকখাত সংশ্লিষ্টরা।
বিজিএমইএ’র সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দফতর ইউএসটিআর এর একটি দলের সঙ্গে আগেও জিএসপি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেখানে মার্কিন প্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এটি প্রত্যাহার করা গেলে তৈরি পোশাক শিল্পে রফতানি আরো বাড়তো। কিন্তু তখন স্বৈরাচার হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকায় এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র নমনীয়তা দেখায়নি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। আশা করছি প্রধান উপদেষ্টার এবারের যুক্তরাষ্ট্র সফরে জিএসপি সুবিধা ফিরে পাবে বাংলাদেশ।
খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি ছিল মানবাধিকার ও শ্রমিকদের বিষয়ে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে বোর্ড গঠন করা হয়েছে। শ্রমিক, মালিক ও সরকারÑ তিন পক্ষ মিলে কাজ করছে। ইতোমধ্যে সবকিছুর সফল সমাধান হয়েছে। তিনি বলেন, জিএসপি না পাওয়ার জন্য এই খাতের কোন ব্যর্থতা তিনি দেখেন না। কারণ, যেসব শর্ত বেঁধে দেয়া হয়েছিল তার বেশিরভাগই পূরণ করা হয়েছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মনে করেন, জিএসপি সুবিধা থাকলে আমদানির শুল্ক দেয়ার প্রয়োজন হয় না। ফলে অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের পণ্যগুলো প্রতিযোগিতা করার সুযোগ পায়। সেটা মাথায় রেখে অন্যান্য আমদানিকারকরাও বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে উৎসাহিত হবেন। তাই জিএসপি সুবিধা বহাল হলে বাংলাদেশের পোশাকখাত তথা দেশের ইমেজ সঙ্কট দূর হবে। এই সুবিধা ফিরে পাওয়া বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।
অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, জিএসপি শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং এটি প্রত্যাহারের একটা ইমেজগত বিষয় রয়েছে। তাই আশাকরছি প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাষ্ট্র সফরে জিএসপি সুবিধা বহালের সুসংবাদটি আমরা পাব। তিনি বলেন, জিএসপি বাতিলের সময় বাংলাদেশের কর্মপরিবেশের নিরাপত্তাহীনতার যে শর্ত দেয়া হয়েছিল সেটি এক ধরনের বৈশ্বিক নেতিবাচক ইমেজ, দেশের কর্মপরিবেশ বিশেষ করে গার্মেন্টস খাতের কর্মপরিবেশ সম্পর্কে তৈরি করেছিল। আর্থিক খাতের সঙ্কটের তুলনায় সেই সময়ে ইমেজের সঙ্কটটিই বেশি ছিল। ওই সময়ে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পরিবর্তন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তখন বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ছিল। বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থা বাংলাদেশকে সাহায্যের জন্য মুখিয়ে আছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন