ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশের জমতে শুরু করেছে কোরবানির পশুরহাট। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) থেকে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় স্থায়ী দু’টিসহ ২২টি পশুরহাটে আনুষ্ঠানিকভাবে কোরবানির পশু বেচা-বিক্রি শুরু হবে।
পশুর হাটগুলোতে চলছে এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কোরবানির পশু নিয়ে হাটগুলোতে আসতে শুরু করেছেন খামারিরা।
দুই সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় গাবতলীর স্থায়ী হাটসহ নয়টি হাট এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় সারুলিয়া স্থায়ী পশুর হাটসহ ১১টি হাট বসেছে। তবে এ বছর আদালতের নির্দেশনার কারণে আফতাবনগরে হাট বসবে না।
উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ বিভাগের তথ্য কর্মকর্তা পিয়াল হাসান জানান, রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবে স্থায়ী একটি ও অস্থায়ী আটটি হাট। এবার ১৩ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত পাঁচ দিন হাট বসবে। কোরবানির পশু কেনা-বেচা নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দে যাতে করা যায় সে জন্য উত্তরের হাটগুলোতে সকল ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে।
বাজারে ক্রেতারা কোনো নগদ অর্থ না নিয়ে এসেও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পশু ক্রয় করতে পারবে জানিয়ে পিয়াল হাসান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ইনস্ট্যান্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে যে কেউ টাকার লেনদেন করতে পারবে। এ জন্য হাট এলাকায় অসংখ্য ব্যাংক বুথ থাকবে।
এছাড়া হাটে আসা মুসলিম ক্রেতাদের অযু ও নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাটের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হাট ইজারাদারদের সতর্ক করা হয়েছে। কোনো বিক্রেতা যদি রাস্তায় হাট বসায় তবে ইজাদারের জামানতের অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হবে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে বলেও জানান জনসংযোগ কর্মকর্তা।
ঢাকা উত্তরে অস্থায়ী আটটি হাটের মধ্যে রয়েছে-উত্তরা দিয়াবাড়ীর ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টরের পাশের খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের খালি জায়গা, মস্তুল চেকপোস্ট এলাকা, মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ভাটারার সুতিভোলা খালের কাছের খোলা জায়গা, মোহাম্মদপুরের বছিলায় ৪০ ফুট সড়কের পাশের খালি জায়গা, ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদরাসা থেকে রানাভোলা স্লুইচগেট পর্যন্ত খালি জায়গা ও দক্ষিণখানের জামুন এলাকার খালি জায়গা।
এদিকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: আবু নাছের বলেন, সারুলিয়ায় স্থায়ী হাটসহ ডিএসসিসি এলাকার ১১টি স্থানে পশুর হাট বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বসবে।
তিনি জানান, প্রত্যেকটি হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য একটি করে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি কমিটিতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এছাড়া ডিএসসিসির নির্ধারিত গাইডলাইনের বাইরে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে সাথে-সাথে তারা ব্যবস্থা নেবেন। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের পাশাপাশি প্রত্যেকটি হাটে একটি করে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে নগদ অর্থের লেনদেন ছাড়া ইনস্ট্যান্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ক্রেতা-বিক্রেতারা অর্থের লেনদেন করতে পারবেন। এ জন্য পর্যাপ্ত ব্যাংক বুথের ব্যবস্থা থাকবে।
ঢাকা দক্ষিণে অস্থায়ী ১০টি হাটের মধ্যে রয়েছে খিলগাঁও রেলগেট মৈত্রী সংঘ ক্লাব-সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ-সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, পোস্তগোলা শ্মশান ঘাট-সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, বনশ্রীর মেরাদিয়া বাজার-সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব-সংলগ্ন খালি জায়গা, কমলাপুর স্টেডিয়াম-সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ-সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল-সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা, লালবাগে রহমতগঞ্জ ক্লাব-সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা।
এদিকে কোরবানির পশুর বর্জ্য ও অস্থায়ী পশুর হাটের বর্জ্য দ্রুততম সময়ে সরিয়ে নিতে দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা এবং হাটের ইজারাদারদের সাথে মঙ্গলবার সভা করেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
উত্তর সিটি করপোরেশন এ ব্যাপারে ইজারাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে।
সূত্র : বাসস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন