সংস্কার না করা ও জনবল সংকটের কারণে একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলো। পাশাপাশি দীর্ঘদিন মেরামত না করার কারণে জরাজীর্ণ অবস্থা পুরনো রেলপথের। ফলে প্রতিনিয়ত রেলপথে লাইনচ্যুতিসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে। তাই সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য নতুন রেলপথ তৈরির পাশাপাশি পুরনো রেললাইন, স্টেশন ও সেতু সংস্কারের প্রতি জোর দেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
এ বিষয়ে গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন মানে নতুনের পাশাপাশি পুরনোকে আরও সমৃদ্ধ করা। আমাদের এখানে দেখা যায় নতুন নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হলো। কিন্তু পুরনো রেললাইন ও ব্রিজগুলো জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকল। এক্ষেত্রে নতুন লাইন নির্মাণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। আর পুরনো লাইন সংস্কার না করার কারণে ট্রেনের গতি কমে যায়। নতুন লাইন নির্মাণ হলেও আমাদের প্রোডাকশন বা রেলওয়ের গতি তেমন বাড়েনি। এর কারণ পুরনো লাইন, সেতু ও স্টেশনগুলো সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।’ তাই সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য নতুন লাইন নির্মাণের পাশাপাশি নতুন লাইন, স্টেশন ও সেতু সংস্কারের প্রতি জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত বছর নভেম্বর পর্যন্ত নতুন করে আরও আটটি স্টেশনসহ মোট ১২০টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে মাস্টার না থাকায় গত সেপ্টেম্বর মাসে জামালপুর টাউন জংশন-বঙ্গবন্ধু সেতু (পূর্ব) রুটের ‘কেন্দুয়াবাজার’ স্টেশনটি আংশিক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর এক মাস আগে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ‘ফতুল্লা’ স্টেশনটি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে। জনবল না থাকায় গত বছর মে মাস থেকে আখাউড়া-সিলেট-ছাতকবাজার রুটের ‘ছাতকবাজার’ ও ‘শাহজীবাজার’ গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন দুটি বন্ধ রয়েছে। এর আগে গত বছর ৭ এপ্রিল থেকে ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জবাজার রুটের ‘দুরমুট’ স্টেশনটি ৯ মাস যাবৎ বন্ধ রয়েছে। এভাবেই প্রতিমাসেই বন্ধ হচ্ছে রেলওয়ের স্টেশন। এতে স্থানীয় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। দীর্ঘদিন স্টেশনগুলো বন্ধ থাকায় রক্ষণাবেক্ষণের কোনো না কোনো অভাবে চুরি হচ্ছে রেলওয়ের মূল্যবান সম্পদ। এ পর্যন্ত ১২০টি স্টেশন দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ বলে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান।
তবে সহকারী মাস্টার পদে জনবল নিয়োগের কাজ চলছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে বন্ধ স্টেশনগুলো পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবির। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে রেলওয়ের বেশিরভাগ স্টেশন বন্ধ রয়েছে। গত বছর কয়েক ধাপে কিছু জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেছে, এদের অনেকেই চাকরিতে যোগ দেয়নি। পরে শূন্যপদে আবারও নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।’ জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে বন্ধ স্টেশনগুলো পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে বলে জানান তিনি।
গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলো বন্ধ ॥ গত একুশ বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে ঢাকা বিভাগে আখাউড়া-সিলেট-ছাতকবাজার রুটের লস্করপুর স্টেশনটি। পরিচালনার লোক না থাকায় ২০০৩ সালের ২৬ জুলাই সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয় স্টেশনের কার্যক্রম। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী বাহুবল উপজেলায় অবস্থিত লস্করপুর রেলওয়ে স্টেশনটি। ১৮৯৬ সালে এ স্টেশন নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় স্টেশন ভবনটিতে নেই কোনো আসবাবপত্র। পরিত্যক্ত স্টেশন ভবন এখন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এই রুটের ইটাখোল, টিলাগাঁও ও লংলাসহ মোট চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় রেলওয়ে স্টেশনের আশপাশে সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান।
গত দুই যুগ যাবৎ বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম-গঙ্গাসাগর রুটের বারৈয়াঢালা স্টেশনটি। জনবল না থাকায় ২০০০ সালের ৩ এপ্রিল থেকে স্টেশনটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই রুটের আরও চারটি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এগুলো হলো-বাড়বকুন্ড, মিরসরাই, মস্তাননগর ও মুহরীগঞ্জ। গত এক যুগ যাবৎ বন্ধ থাকায় হারিয়ে যাচ্ছে রেলওয়ের প্রথম স্টেশন কুষ্টিয়ার জগতি স্টেশনের নাম। সারাদেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ৫০৭টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে চালু রয়েছে ৩৮৭টি স্টেশন। বাকি ১২০টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে জনবল সংকটের কারণে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত নতুন করে আরও ১০টি স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে চারটি ও পশ্চিমাঞ্চলে ছয়টি স্টেশন নতুন করে বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া ১৬টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে ২০০৮ সাল থেকে। ২০০৯ সালে ২৬টি এবং ২০১০ সালে ৩৪টি স্টেশন বন্ধ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১১ সাল থেকে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত সর্বমোট ১২০টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে বলে রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের অপারেশন বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে কম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন বন্ধ রেখে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন চালু রাখা হচ্ছে। এ নিয়ে প্রতি মাসে আমরা উচ্চপর্যায়ে চিঠি দিচ্ছি। কিন্তু পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। লোকবল স্বল্পতার কারণে ২০০৭ সালে একাধিক স্টেশন বন্ধ করে দিতে হয়। গত বছর দুই শতাধিক নতুন সহকারী মাস্টার হিসেবে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু এদের বেশিরভাগ চাকরিতে যোগ দেয়নি। তাই বর্তমানের রেলওয়ে জনবল সংকটটি প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে জানান তিনি।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, মোট রেলস্টেশনের মধ্যে পূর্বাঞ্চলে রয়েছে ২৪৩টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ২৬৮টি স্টেশন। সবচেয়ে বেশি ৬৭টি বন্ধ স্টেশন পশ্চিমাঞ্চলে। পূর্বাঞ্চলে বন্ধ স্টেশন রয়েছে ৫৩টি। রেলওয়ের চার শ্রেণির স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে এ ও বি ক্লাস স্টেশন রেলওয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়। এ ছাড়া ডি ও হল্ট ক্লাস স্টেশন মাস্টার বিহীন স্বল্প বিরতির জন্য ব্যবহার করা হয়। রেলওয়ের ১২৬টি স্টেশন ডি ও হল্ট ক্লাসের স্টেশন রয়েছে। এ ছাড়া আংশিক ও এক/দুই শিফট করে বন্ধ রয়েছে ছয়টি স্টেশন। বাকি ১১৪টি স্টেশন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। অধিকাংশ বন্ধ স্টেশনই মাস্টার সংকটের কারণে চালু করা যাচ্ছে না বলে জানান রেল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে রেলওয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহদাত আলী জনকণ্ঠকে বলেন, ‘জনবল সংকটে সারাদেশে রেলের ১০০-এর ওপরে স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে সহকারী মাস্টার নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে স্টেশনগুলো পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে।’
পশ্চিমাঞ্চলের ৬৭ যাত্রীবাহী স্টেশন বন্ধ ॥ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে ২৬৪টি স্টেশনের মধ্যে বন্ধ রয়েছে ৬৭টি। এর মধ্যে লালমনিরহাট বিভাগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ১৫টি স্টেশন হলো- আলতাফ নগর, ভেলুরপাড়া, নলডাঙ্গা, চৌধুরানী, কাউগাঁ, মন্মথপুর, খোলাহাটা, অন্নদানগর, ভোমরাদহ, ভোটমারী, বাউরা, পাটগ্রাম, ত্রিমোহনী, রাজারহাট ও উলিপুর। এ ছাড়া পাকশী বিভাগে ৫২টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে খুলনা-দর্শনা রুটে ছয়টি বন্ধ স্টেশন হলো- ফুলতলা, চেংগুটিয়া, রূপদিয়া, যশোর ক্যান্টনমেন্ট, মেহেরুন্নেসানগর ও আনসারবাড়ীয়া; দর্শনা-ঈশ্বরদী রুটে তিনটি স্টেশন বন্ধ এগুলো হলো-জয়রামপুর, মোমিনপুর ও মুন্সীগঞ্জ।
যশোর-বেনাপোল রুটে নাভারন স্টেশনটি বন্ধ; ঈশ্বরদী-সান্তাহার রুটে মালঞ্চি, ইয়াসিনপুর, বাসুদেবপুর ও সাহাগোলা চারটি স্টেশন দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া সান্তাহার-পার্বতীপুর রুটে তিলকপুর, জামালগঞ্জ ও ভবানীপুর এই তিনটি যাত্রীবাহী স্টেশন বন্ধ রয়েছে। পার্বতীপুর-চিলাহাটি রুটের বেলাইচড়ি, দারোয়ানি, মির্জাগঞ্জ; আব্দুলপুর-চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রহনপুর রুটে নন্দনগাছি ও নাচোল; পোড়াদহ-গোয়ালন্দঘাট রুটে জগতি, চড়াইকোল, মাছপাড়া, বেলগাছি, গোয়ালন্দবাজার ও খোকসাসহ ছয়টি স্টেশন দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে।
কালুখালি-ভাটিয়াপাড়াঘাট রুটে বহরপুর, নলিয়াগ্রাম, সাতৈর, বোয়ালমারীবাজার ও সহ¯্রাইল পাঁচটি স্টেশন; কাশিয়ানী-গোবরা রুটে পাঁচটি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এগুলো হলো-চাপতা, ছোটবাহিরবাগ, চন্দ্রদিঘলিয়া, বোড়াশী ও গোবরা স্টেশন। মাঝগ্রাম-ঢালারচর রুটে দাশুড়িয়া, টেবুনিয়া, পাবনা, দুবলিয়া, তাতীবান্ধা ও কাশিনাথপুরসহ ছয়টি স্টেশন; পাঁচুরিয়া-ফরিদপুর-ভাঙ্গা রুটে খানখানাপুর-তালমা-পুকুরিয়া যাত্রীবাহী স্টেশন দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে। রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের এই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলো দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ থাকায় যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে। নিকটের স্টেশন বন্ধ থাকায় অনেক দূরে গিয়ে ট্রেনে চড়তে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন পশ্চিম রেলের রাজস্ব আয় কমে গেছে অপরদিকে যাত্রীরা সড়ক নির্ভর হয়ে পড়ছে বলে অনেকে মনে করছেন। এসব স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক যাত্রী বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করত বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।
পূর্বাঞ্চলের ৫৩টি স্টেশন সম্পূর্ণ বন্ধ ॥ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ২৪৩টি স্টেশনের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে প্রায় ৫৩টি স্টেশন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৩৩টি ও চট্টগ্রাম বিভাগে ২০টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। ঢাকা বিভাগে আখাউড়া-সিলেট-ছাতকবাজার রুটের লস্করপুর স্টেশনটি দীর্ঘ একুশ বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে ২০০৩ সালে ২৬ জুলাই স্টেশনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর এই রুটে ২০০৯-১০ সালে টিলাগাঁও ও ইটাখোলা স্টেশন দুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভাটেরাবাজার, আফজালাবাদ, খাজাঞ্চিগাঁও ও ছাতকবাজার ১০ বছর যাবৎ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে সর্বশেষ ২০২২ সালের ১৮ আগস্ট লংলা স্টেশনটি বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।
জানা গেছে, ব্রিটিশ শাসনামলে ডানকান ব্রাদার্সের চা বাগান ও এলাকার জনসাধারণের সুবিধার্থে টিলাগাঁও স্টেশন স্থাপন করা হয়েছিল। বি-গ্রেডের স্টেশন টিলাগাঁওয়ে শুধু বাগানের মালপত্র বুকিং করেই সরকারের প্রচুর টাকা রাজস্ব আয় হতো। একইভাবে শিল্প-কারখানা ও চা বাগানবেষ্টিত লস্করপুর, ইটাখোলা স্টেশন ও ভাটেরা রেলস্টেশনগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলেও বর্তমানে এগুলো অরক্ষিত অবস্থায় আছে। প্রতিটি স্টেশনে তিনজন মাস্টার থাকার কথা থাকলেও নেই একজনও। লোকবলের অভাবে দীর্ঘদিন থেকে টিলাগাঁও স্টেশনে ক্রসিং বন্ধ থাকার কারণে লংলা অথবা শমসেরনগর স্টেশনে দেওয়া হয় ট্রেনের ক্রসিং। ভাটেরা স্টেশন বন্ধ থাকায় মাইজগাঁও ও বরমচাল স্টেশনে এবং লস্করপুর বন্ধ থাকায় শায়েস্তাগঞ্জ অথবা রশীদপুর স্টেশনে ক্রসিং দেওয়া হয়। ইটাখোলা স্টেশন বন্ধ থাকায় নোয়াপাড়া অথবা মনতলা স্টেশনে ট্রেনের ক্রসিং দেওয়া হয়। এতে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেনকে ক্রসিংয়ের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অসংখ্য যাত্রী সিলেট, আখাউড়া, ঢাকা ও চট্টগ্রামে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগের শিকার হন বলে স্থানীয়রা জানান।
এ ছাড়া আখাউড়া-ঢাকা রুটে আশুগঞ্জ, শ্রীনিধী, ঘোড়াশাল ও আমিরগঞ্জ স্টেশন, ভৈরববাজার-ময়মনসিংহ রুটে কালিকাপ্রসাদ, নীলগঞ্জ, সোহাগী ও বিষকা; ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজার রুটে ইজ্জতপুর, সাতখামাইর, উমেদনগর, বেগুনবাড়ী, মোশারফগঞ্জ, জামালপুরকোট, ধলা ও দূরমুট স্টেশনগুলো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ফতুল্লা স্টেশনটি গত বছর থেকে বন্ধ রয়েছে। জামালপুর-জংশন-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব রুটে বাউসি, শহীদনগর বারৈপটল, হেমনগর ও বাহাদুরাবাদঘাট সম্পূর্ণ এবং কেন্দুয়াবাজার স্টেশনটি দীর্ঘদিন যাবৎ আংশিক বন্ধ রয়েছে। ময়মনসিংহ-ঝারিয়াঞ্জাইল-মোহনগঞ্জ রুটে পূর্বধলা যাত্রীবাহী স্টেশনটি দশ বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এগুলো হলো-বাড়বকুন্ড, বারৈয়াঢালা, মিরসরাই, মস্তাননগর, মুহরীগঞ্জ, কালিদহ, শর্শদী, নাওটি, আলীশহর, ময়নামতি, ঝাউতলা, সরকারহাট, কাঞ্চননগর, ধলঘাট, দৌলতগঞ্জ, খিলা, বজরা, শাহাতলী, মধুরোড ও চিতষীরোড স্টেশন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন