ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বর্বর হামলায় একদিনে আরও ৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। নতুন মৃতদের নিয়ে উপত্যকাটিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৬০০ জনে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) গাজার শরণার্থী শিবির ও হাসপাতাল এলাকায় এই হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। খবর আলজাজিরার।
ওয়াফা নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে আলজাজিরায় বলা হয়েছে, মধ্যগাজার নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি হামলায় ছয় শিশু ও পাঁচ নারীসহ ২০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন।
গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় কামাল আদওয়ান হাসপাতালের কাছে ধারাবাহিক বিমান হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। উদ্ধারকারীরা যেতে না পারায় অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন।
ইসরাইলি ট্যাংক এবং ড্রোনগুলো কামাল আদওয়ানের চারপাশে ‘যে কোনো চলন্ত বস্তু দেখলে গুলি করছে’ সেটি হাসপাতালের ভেতরে হোক বা কাছাকাছি।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান হামলায় এ পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৬১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ ৫ হাজার ৮৩৪ জন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরাইলের হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন