১৯ বছর আগের ভয়ঙ্কর সেই সকালে মুহূর্তেই গাড়ির ভেতরে থাকা দুই বিচারকের শরীরের বিভিন্ন অংশ ও গাড়িটির ছাদ উড়ে গিয়ে আটকে যায় গাছের ডালে, বলছিলেন নিহত সেই বিচারকদের আরেক সহকর্মী।
২০০৫ সালের নভেম্বরের সকাল; শীত শীত আবহাওয়ায় গোসল করবেন কি না তা নিয়ে গড়িমসি করছিলেন ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ এম এ আউয়াল। অন্য সময় অফিসের গাড়ি আসার আগেই প্রস্তুত হয়ে থাকলেও, সেদিন কিছুটা সময় বেশি লেগেছিল তার। সেই কিছুটা দেরিতেই যেন জীবন ফিরে পেয়েছেন তিনি; তবে ভয়াবহ সেই সকাল এখনও কাঁদায় তাকে।
ওই বছরের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে নিজেদের কর্মস্থল আদালতে যাওয়ার পথে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ-জেএমবির বোমা হামলায় গাড়িতে থাকা যে দুজন বিচারক নিহত হয়েছিলেন, তাদের বন্ধু-ব্যাচমেট এম এ আউয়াল।
ভয়ঙ্কর সেই হামলার ১৯ বছর পর এম এ আউয়াল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকের কাছে সেই দিনের স্মৃতিচারণ করেছেন। এখন তিনি আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সরকারি বাসা থেকে কর্মস্থলে যাবার পথে ঝালকাঠির বিচারকদের বহনকারী মাইক্রোবাসে এই আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়।
সেদিন ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছিলেন জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ সোহেল আহমেদ। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছিল আরেক জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ের। তাদের সঙ্গেই আদালতে যাওয়ার কথা ছিল আউয়ালের, যাদের বাসা ছিল সরকারি একই কম্পাউন্ডে।
চাঞ্চল্যকর এ মামলায় ২০০৬ সালের ২৯ মে সাতজনকে ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত।
‘সোহেল গাড়িতে ক্ষত-বিক্ষত পড়ে ছিল’
এম এ আউয়াল বলেন, “গোসল করতে সেদিন দুই মিনিট দেরি হয়েছিল। অন্য দিনগুলো গাড়ি আসার আগেই প্রস্তুত হয়ে হাঁটাহাঁটি করতে থাকি। সেদিন ভাবছিলাম, অফিসের গাড়ি আসলে বলবো, তোমরা চলে যাও। আমি কোয়াটার্সের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাব বলে মনে মনে ভাবছিলাম। এরই মধ্যে অফিসের পিয়ন আর গাড়ির চালক যখন কাছে আসছিল, তখন কেবল একটি জুতার বেল্ট টেনে লাগিয়েছি। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি সকাল ৮টা ৫৬ বাজে। ঠিক তখনই কানে আসে বিকট আওয়াজ।
“রুমের বারান্দা থেকে আমার স্ত্রী দেখে এসে বলে, গাড়িতে বোমা হামলা হয়েছে। এটা শুনেই এক পায়ে জুতা আর আরেক পা খালি অবস্থাই দৌঁড়ে যাই গাড়ির কাছে। দেখি আমার বন্ধু বিচারক সোহেল আহমেদ গাড়ির ওপরের অংশে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে আটকে আছেন।”
শুধু আউয়াল নন, ঘটনার ১৯ বছর পর ওই ঘটনায় নিহত আরেক বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ের ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধ মা সুশীতা পাঁড়ে এখনও তার ভয়াবহতা ভুলতে পারেননি।
বয়সের ভারে শরীর নুয়ে পড়লেও ছেলে হারানোর যন্ত্রণা মন থেকে ফেলতে পারেনি এক মুহূর্তের জন্য। গোবিন্দ, বিশ্বনাথ, মধুসূদন ও হরিশঙ্কর এই চার ছেলেই এখন সুশীতার ভরসা। সুশীতার স্বামী রাম নারায়ণ পাঁড়ে ২০১০ সালে ৭৮ বছর বয়সে মারা যান। জগন্নাথের স্ত্রী বরিশালের একটি ব্যাংকে এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে আছেন।
জগন্নাথের ভাই গোবিন্দ মোহন বলেন, “দাদা জজ হওয়ার পরে প্রতি সপ্তাহে একদিন বরগুনার পাথরঘাটার পদ্মায় গ্রামের বাড়িতে আসতেন। সবাইকে আইনি পরামর্শ দিতেন, সবাই তাকে কাগজপত্র দেখাতে আসতো। দাদা স্টার মার্কস নিয়ে এসএসসি পাস করার পর ঢাকা কলেজে ভর্তি করান বাবা। এ সময়ে চার বিঘা জমি বিক্রি করেন বাবা। আর্টসে ঢাকা বোর্ডে উচ্চ মাধ্যমিকে মেধাতালিকায় তৃতীয় হয়েছিলেন।
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স পাশ করার সঙ্গে সঙ্গে প্রথমবারই সে বিসিএসে উত্তীর্ণ হন। মাস্টার্সে পান ফার্স্ট ক্লাস। তার ছেলে শ্রেষ্ঠ পাঁড়ে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে অনার্স পড়ছে।”
জেএমবির আত্মঘাতী সেই বোমা হামলায় নিরপরাধ দুই বিচারকের মৃত্যু বিচার বিভাগসহ সারাদেশকে স্তম্ভিত করে দেয়। দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
‘বিস্ফোরণের শব্দ বরিশাল থেকেও শোনা গেছে’
বর্তমানে আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব এম এ আউয়াল বলেন, ওই হামলায় ব্যবহৃত বোমা তখন পর্যন্ত দেশে আসা সবচেয়ে ‘শক্তিশালী’ বোমা ছিল। বিস্ফোরণের শব্দ ১৭ কিলোমিটার দূরে বরিশাল থেকেও শোনা গেছে।
সেই সকালের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, হামলার তীব্রতা এতটাই ছিল যে ২০০ কিলোমিটার বেগের বাতাস ধেয়ে যায়। এতে তার বাসভবনের দরজা উড়ে যায় এবং কয়েকটি ভবনের জানালার গ্লাস ভেঙে যায়।
“বিচারকদের বহনকারী সাদা মাইক্রোবাসে অত্যন্ত চতুরভাবে বোমা নিক্ষেপ করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জেএমবির সদস্য ইফতেখার হোসেন মামুন। মুহূর্তেই গাড়ির ভেতরে থাকা দুই বিচারকের শরীরের বিভিন্ন অংশ ও গাড়িটির ছাদ উড়ে গিয়ে আটকে যায় গাছের ডালে। সোহেলের ক্ষতবিক্ষত দেহ আটকে যায় গাড়িতে।
“জগন্নাথ পাঁড়ের এক পা উড়ে যাওয়ার পরে ছিঁটকে পড়েন পাশের ড্রেনে। ঘটনার চার মিনিটের মাথায়ই মারা যান সোহেল। আর ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল থেকে বরিশালে নেওয়ার পথে ৩০-৪০ মিনিটের মধ্যে মারা যান জগন্নাথ।”
আউয়াল ও জগন্নাথ পাঁড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে একই ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। সোহেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে পড়লেও তারা তিনজনই ১৮তম বিএসএসে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী জজ হিসেবে নিয়োগ পান ১৯৯৯ সালে। তিনজনের বাড়িই বরিশাল বিভাগে।
প্রত্যেকেই একটি বা দুটি জেলায় চাকরি করার পরে বদলি হয়ে আসেন ঝালকাঠি জেলায়। ২০০২ সালের মার্চে সবার আগে আসেন এম এ আউয়াল। বিডব্লিউটিএর কোয়াটার্সে ওঠেন পরিবার নিয়ে।
এরপর ২০০৩ ও ২০০৪ সালে একে একে সোহেল আহমেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ে ঝালকাঠিতে বদলি হয়ে এলে তাদের জন্যও একই কম্পাউন্ডে তারই বিপরীত পাশে বিডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলীর বাংলো সংলগ্ন কোয়াটার্স ঠিক করেন। তিনজনই ঝালকাঠিতে একই দিনে জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ হিসেবে পদোন্নতি পান।
এম এ আউয়ালের মতে, ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর জঙ্গিদের বোমা হামলায় যে দুজন বিচারক প্রাণ হারান তারা ছাত্রজীবনে ছিলেন অসাধারণ মেধাবী আর কর্মজীবনে নজিরবিহীন সৎ। মৃত্যুর আগের দিনও বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ের পকেটে চা খাওয়ার জন্য মাত্র পাঁচ টাকা দেখেছিলেন তিনি।
যেভাবে আত্মঘাতী হামলা
নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জগন্নাথ পাঁড়ে তার সেঝ ভাই গোবিন্দ মোহন পাঁড়ের সঙ্গে ঘটনার ১০ মিনিট আগেও কথা বলেন। এর এক সপ্তাহ আগে জগন্নাথের মা তার ঝালকাঠির বাসায় গিয়েছিলেন। জগন্নাথ সেদিন জানিয়েছিলেন, মায়ের চুলে কলব দিচ্ছেন। রাতে জেলা জজের বাড়িতে মাকেসহ নিমন্ত্রণে যাবেন। এরপর আদালতে যাচ্ছেন বলে মোবাইলে কথা শেষ করেন। সোহেল আহমেদের স্ত্রী তখন কয়েকদিনের জন্য তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে ভোলায় অবস্থান করছিলেন।
সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য দুজনই গাড়িতে ওঠেন। গাড়ি আনুমানিক ১০০ হাত এগিয়ে এম এ আউয়ালের বাসার সামনে রাখা হয়। তখন চালক ও পিয়ন গাড়ির দরজা খুলে তাকে ডাকতে যান। এই সময়ে জেএমবি সদস্য মামুন গাড়ির পাশে এসে সোহেল আহমেদের কাছে একটি কাগজ বাড়িয়ে দেয়। সেটি তিনি হাতে নিয়ে পড়া মাত্রই মামুন দুই বিচারকের কোল বরাবর বোমা নিক্ষেপ করে। এতে এক পা হারিয়ে ছিঁটকে পড়ে আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য মামুন নিজেও।
তখন লোকজন জড়ো হলে মামুন সবাইকে বলে যে, তিনিই বোমা হামলা করেছেন। তাকে যেন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে মামুন জানিয়েছিল, সে জানতো বোমা নিক্ষেপের ২৫ সেকেন্ড পর বিস্ফোরণ হবে। যাতে সে নিরাপদে সরে যেতে পারবে। যদিও তাকে পুলিশের গাড়িতে করে বরিশালে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার পথে লুকিয়ে রাখা আরও একটি বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা করে তিনি ব্যর্থ হন।
এম এ আউয়াল বলেন, হামলার পর সোহেলের চোখ দুটো মিটমিট করছিল। তিনি তখন থানায় টেলিফোন করার জন্য বাসায় দৌঁড় দেন আর সহযোগিতার জন্য চিৎকার করেন। থানার নম্বর মাথায় না আসায় আবার গাড়ির কাছে ফিরে এসে দেখেন জগন্নাথের এক পা নেই, সে ড্রেনে পড়ে আছে। বাসা থেকে ছুটে এসেছে তার স্ত্রী ও কাজের ছেলেটি। জগন্নাথ ঘন শ্বাস নিচ্ছিলেন। চার মিনিটের মাথায় ৯টার দিকে সোহেল মারা গেলে তার মরদেহ তার বাসার সামনের রাস্তায় রাখা হয়। আর জগন্নাথকে নিয়ে যাওয়া হয় রিকশায় করে, ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে। সেখান থেকে বরিশাল নেওয়ার পথেই মারা যান তিনি।
ঘটনার সময় জেলা জজ ঢাকায় ছিলেন। দুজন যুগ্ম জজের একজন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে এম এ আউয়ালকে পুলিশ পাঠাতে বলেন। আরেকজন অফিসের দরজা বন্ধ করে পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চান। এ কারণে লাশ পাঠানোর জন্য প্রথমে স্পিডবোট, পরে অ্যাম্বুলেন্স, লাশের কফিন সংগ্রহ থেকে শুরু করে অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয় এম এ আউয়ালকে। পরে জগন্নাথ পাঁড়েকে বরিশাল মহাশ্মশানে দাহ করা হয়।
‘সোহেলের ২ টাকার নোটটি এখন যত্নে আছে’
সোহেল আহমেদের মৃত্যুর পর তার মানিব্যাগে পাওয়া দুই টাকার একটি নোট। সেটি ১৯ বছর ধরে যত্ন করে রেখেছেন তার স্ত্রী ফারহানা তারান্নুম। গত ১৯ বছর তাদের পরিবারের কী করে কেটেছে, তারই আদ্যোপান্ত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফের ডটকমকে বলেছেন তিনি।
তারান্নুম বলেন, “ঘটনার পর জেলা জজের পিয়ন আমাকে ফোন করে বলে, স্যাররা আহত হয়েছেন আপনারা আসেন। আমরা ভোলা থেকে রওনা দেওয়ার পরপরই ভোলা শহরের অনেক স্বনামধন্য লোকজনকে রাস্তায় দেখতে পাই। তাদের চোখে পানি দেখেও বুঝতে পারিনি যে এতটা খারাপ খবর অপেক্ষা করছে। রাতে ভোলায় লাশ আনা হয়। বাসার ড্রয়িং রুমের খাটেই রাখা হয়েছিল।
“আমার স্বামীর ক্ষতবিক্ষত দেহ আমি কখনোই দেখতে চাইনি। রাতে অনেকবার তার মুখ দেখেছি। পরদিন সকাল ১১টায় জানাজার পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে। তার ওয়ালেটে পাওয়া দুই টাকার নোটটি এখনও যত্নে আছে আমার কাছে।”
তিনি বলেন, সন্তানের যত্নের কথা ভেবে এবং সোহেলের অনুরোধে তিনি জনতা ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। এরপরও অনেকগুলো সরকারি চাকরি হলেও যোগ দেননি। সোহেল আহমেদের মৃত্যুর পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দপ্তর থেকে কোথায় চাকরি হলে সুবিধা হয় এমনটি জানতে চাওয়া হয়। যেহেতু তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়েছেন এবং ব্যাংক সেক্টরে চাকরি করেছেন, তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিং এর হিসাব শাখায় তাকে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে চাকরি দেওয়া হয়। বর্তমানে ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে আছেন।
তারান্নুম আর সোহেলের ছেলে আহমেদ ইফতেখার ইফতি এখন ২২ বছরের তরুণ। পড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওলজি বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে।
তারান্নুম বলেন, “আমার স্বামী সবসময় বলতো, আমরা হুমকির মুখে আছি। কিন্তু আমার ধারণা ছিল, তিনি ফৌজদারি মামলা দেখেন না। সহকারী জজরা দেওয়ানি মামলা দেখেন, কাউকে জেল জরিমানা বা মৃত্যুদণ্ড দেন না, অতএব তাদের শত্রু থাকার কথা না। কিন্তু বাস্তবে তার আশঙ্কাই সত্যি হয়েছিল।”
২০১৮ সালে সোহেল আহমেদের বাবা মনসুর আহমেদ ৮০ বছর বয়সে মারা যান। সোহেলের মা সৈয়দুন্নেছা এখনও বেঁচে আছেন। গত ১৯ বছর ধরে প্রতি ১৪ নভেম্বর রোজা রাখেন তারান্নুম। গত তিন বছর ধরে তার ছেলেও রোজা পালন করেন এই দিনে। সোমবার যেহেতু তিনি মারা গিয়েছিলেন, তাই তাদের কাছে প্রত্যেক সোমবারই ১৪ নভেম্বর।
সরকারের তরফ থেকে দুটি পরিবারকে তখন পাঁচ লাখ করে টাকা দেওয়া হয়েছিল। বিচার প্রশাসক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে দুই বিচারকের মাকে পাঁচ লাখ করে টাকা দেওয়া হয় ২০২১ সালে। প্রতি বছর দেশের সব জেলা জজ কোর্টে দিনটি উপলক্ষে স্মরণসভা করে। ঝালকাঠিতেও দিনটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার শোক র্যালি ও স্মৃতিফলকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বোমা হামলার দিন আহত অবস্থায় ধরা পড়ে হামলাকারী জেএমবির সুইসাইড স্কোয়াডের সদস্য ইফতেখার হাসান আল মামুন। এরপর জেএমবির শীর্ষ নেতারা আটক হন।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহমেদ ২০০৬ সালের ২৯ মে সাতজনকে ফাঁসির আদেশ দেন। উচ্চ আদালতে সে রায় বহালের পর দেশের বিভিন্ন জেলখানায় ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ৬ শীর্ষ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এরা হলেন- জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাই, সামরিক শাখা প্রধান আতাউর রহমান সানি, উত্তরাঞ্চলীয় সমন্বয়কারী আবদুল আউয়াল, দক্ষিণাঞ্চলীয় সমন্বয়কারী খালেদ সাইফুল্লাহ ও বোমা হামলাকারী ইফতেখার হাসান আল মামুন।
২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর জঙ্গি আসাদুল ইসলাম আরিফের ফাঁসি কার্যকর করা হয় খুলনা কারাগারে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন