এইচএসসিতে ভালো ফল করেও আনন্দ নেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের। বন্ধুরা উচ্ছ্বাসে মাতলেও চোখ-পাসহ বিভিন্ন অঙ্গ হারিয়ে দুর্বিষহ সময় পার করছেন অনেকে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিদেশে চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও উচ্চশিক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আকুতি ভুক্তভোগীদের।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে এমন চিত্র তুলে এনেছে সময় সংবাদ।
এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন মাইলস্টোনের ছাত্র আলিফ হাসান রাহাত। বন্ধুরা কলেজে উল্লাসে মাতলেও তার জীবনে ঘোর অন্ধকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ডান চোখ হারিয়ে পাল্টে গেছে জীবনের সব হিসেব।
রাহাত জানান, ২০ জুলাই হাসপাতালে যাওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্স থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। গুলিবিদ্ধ চোখ আর শরীরে বুলেটের ক্ষত নিয়েই হাজত ও কারাগারে কেটেছে তার দুর্বিষহ সময়।
রাহাত আরও জানান,
আমাকে ২১ জুলাই কারাগারে নিয়ে আসে, ২২ জুলাই সকালে কারাগারে ডাক্তার আসেন। তিনি দেখার পর বলেন যে, তাদের পক্ষে এ চিকিৎসা করা সম্ভব না।
এইচএসসি শিক্ষার্থীদের জামিনের সিদ্ধান্তের পর ১ আগস্ট কারাগার থেকে নেয়া হয় চক্ষু হাসপাতালে। ততদিনে হয়ে গেছে অনেক দেরি তার।
রাহাত জানান, এক চিকিৎসক এসে চোখে দেখার পর আমাকে বোঝালেন কত শতাংশ’ চোখ ভালো আছে। তিনি বললেন, দেখ তুমি আমাদের কাছে এসেছ ১৬ দিন পরে, এই কারণে তোমার চোখটা আর ঠিক হবে না।
সরকার পতনের পর চক্ষুবিজ্ঞান, সিএমএইচে চিকিৎসা নিলেও হয়নি কোনো উন্নতি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার আকুতি তার।
রাহাত বলেন,
বর্তমান সরকারের কাছে একমাত্র চাওয়া চিকিৎসা। আমার দেশের চিকিৎসকরা যেহেতু বলে দিয়েছেন, এখানে আমার চিকিৎসা হবে না, তাই আমার চাওয়া বিদেশে চিকিৎসাটা হোক।
এদিকে, পঙ্গু হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রেজাল্ট পেয়েছেন উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী রাকিব উদ্দিন। আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলি লাগে তার পায়ে।
রাকিব বলেন,
ওইদিন রাস্তায় যারাই ছিল, পুলিশ তাদেরই গুলি করেছে। এখন একটাই চাওয়া আমাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হোক।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত অনেকেরই গল্পই এমন মর্মান্তিক। রাষ্ট্র যেন তাদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও উচ্চশিক্ষার যথাযথ ব্যবস্থা নেয় এমনটাই প্রত্যাশা রাহাত-রাকিবদের।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন