রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০০৯ সালে নগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আবদুচ ছালামকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। এ পদে দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ১০ বছর ছিলেন তিনি। আর চেয়ার টিকিয়ে রাখতে সাবেক মন্ত্রী, সংসদ-সদস্য ও দলীয় নেতাদের উপঢৌকন দিয়েছিলেন কোটি কোটি টাকা মূল্যের প্লট। এছাড়াও নিজের আত্মীয়স্বজন, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামেও প্লট বাগিয়ে নেন তিনি। তার মেয়াদে চট্টগ্রামে শুরু হওয়া নানা প্রকল্প থেকে কমিশন আদায়ের বিষয়টিও ছিল ওপেন সিক্রেট। টাকার জোরে এবং ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনে (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে সংসদ-সদস্য ‘নির্বাচিত’ হন। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে লাপাত্তা এই ক্ষমতাধর ছালাম।
জানা যায়, অনিয়মের মাধ্যমে চউকের শতাধিক প্লট বরাদ্দ দিয়েছিলেন আবদুচ ছালাম। এর মধ্যে চউকের ৩৮৪তম বোর্ড সভায় জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে অনুগত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫০টি প্লট এবং ৪০৫তম বোর্ড সভায় মন্ত্রী, সংসদ-সদস্য ও নেতাদের নামে ৬০টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, যাদের শহরে প্লট-ফ্ল্যাট কিংবা জায়গাজমি রয়েছে, তাদের সরকারি প্লট বরাদ্দ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ছালাম যাদের নামে প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন তারা হলেন-সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, দিলীপ বড়ুয়া, ডা. আফসারুল আমীন, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, দীপংকর তালুকদার, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, বীর বাহাদুর উশৈশিং, সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, সাবেক সংসদ-সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী, এবিএম আবুল কাশেম, এমএ লতিফ, মাঈনুদ্দিন খান বাদল, চেমন আরা বেগম, মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য একে আজাদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীসহ প্লট পেয়েছেন দলের বিভিন্ন পেশাজীবীরাও।
এছাড়া চউকের বোর্ড সদস্য যুবলীগ নেতা কেবিএম শাহজাহান ও জসিম উদ্দিন শাহ, চউক চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী তারেক গণির মা জাকিয়া বেগমকেও গোপনে প্লট বরাদ্দ দেন আবদুচ ছালাম।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন