বরগুনা সদর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের প্রতি কটুক্তি, শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি এবং শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিলে থুথু দিবস পালন করাসহ নানা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সহকারী শিক্ষক মীর মোস্তাফিজুর রহমান লিটনের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ওই সহকারী শিক্ষকের একটি ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
গত ৪ ডিসেম্বর বরগুনা সদর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ওই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে , গত ১ ডিসেম্বর বরগুনা সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতিতে কিছু সহকারী শিক্ষকের উপস্থিততে চলমান সহকারী শিক্ষকদের ৩ দফা দাবিতে কর্মবিরতির বিষয় মন্তব্য করতে গিয়ে প্রধান শিক্ষকদের হুমকি দেন এবং প্রধান শিক্ষকগণ দায়িত্ব পালন করলে তাদের থুথু মারবেন, তাদেরকে আপমান করবেন, বিদ্যালয়ে গিয়ে তাদেরকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত চাপ প্রয়োগ করিবেন এমন মন্তব্য করেন বরগুনা সদর উপজেলার কড়ইতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মীর মোস্তাফিজুর রহমান লিটন।
আরও জানা যায়, ওরা কি জানে না আমাদের ১০ম গ্রেড দিলে তোরা তো আরও ওপরে যাবি, তোদের তো লস নেই, এরপরও যদি ওরা দায়িত্ব পালন করে তবে আমরা ওদের মুখে থুথু দিবস পালন করব। উক্ত শিক্ষকের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচারণের ফলে প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজনের হুমকি রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম একে অপরের পরিপুরক। আমরা উভয় পক্ষ আন্তরিক পরিবেশে একতাবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয়ের কাজ সম্পাদন করে থাকি। তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচারণের কারণে আন্তরিকতার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে।
এ বিষয়ে পশ্চিম মোনসাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তহমিনা আক্তার নিলু যুগান্তরকে বলেন, সারা দেশে সহকারী শিক্ষকদের যখন ১১তম গ্রেডের দাবিতে আন্দোলন চলছে, তখন আমাদের ঊর্ধ্বতনরা বলছে পরীক্ষা নেবে। তখন বার্ষীক পরীক্ষা চলে, পরীক্ষা তো নিতেই হবে। আমরা পরীক্ষা না নিলে অভিভাবকরা ক্ষেপবে। আমরা তো সরকারি চাকরি করি কিন্তু একজন সহকারী সে কিভাবে প্রধান শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বাজে মন্তব্য করে, থুথু মারব, ওরা, ওদের, তোরা, পরীক্ষা নিলে ওদের বিরুদ্ধে থুথু দিবস পালন করব ইত্যাদি। এতে তো পরিবেশ নষ্ট হয়।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মীর মোস্তাফিজুর রহমান লিটন তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে জানান, আমার সঙ্গে শত্রুতা করে ওরা এসব করছে, ওখানে আমার অনেক এন্ট্রি গ্রুপ আছে। আসলে আমার মন্তব্য একটাই থাকে যে ওরা গত ১৪ বছর শিক্ষক সমিতি ঘরটাকে লুটপাট করেছে। আসলে আমার এই ভিডিওর বক্তব্য কে কি করছে আমি নিজেও তা জানি না। আবার এখন যদি নিউজ হয় তাহলে কি সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে?
বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিও) আবু জাফর মো. ছালেহ তার কাছে এসব বিষয় জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, এ বিষয়ে আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে বিধি মোতাবেক দোষীর বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।