Image description

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই নতুন নতুন ঘটনা ঘটছে। আজকের আলোচনায় থাকা এমন কিছু ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এখানে একসঙ্গে উপস্থাপন করা হলো।

দেশের দৈনিক পত্রিকা— প্রথম আলো, সমকাল, যুগান্তর, আজকের পত্রিকা, আমার দেশ, ইত্তেফাকসহ কয়েকটি পত্রিকার আলোচিত শিরোনাম ছিল, ‘বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার খবর’

গত ২৩ নভেম্বর থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হৃদ্‌রোগের জটিলতায় তার অবস্থা সংকটাপন্ন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসা পরিচালনা করছে। খালেদা জিয়ার বড় পুত্রবধূ, মেডিকেল বোর্ডের সদস্য জুবাইদা রহমান শুক্রবার যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় এসে চিকিৎসায় যুক্ত হয়েছেন; লন্ডন থেকেও তিনি নিয়মিতভাবে চিকিৎসা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখছিলেন। 

সবশেষ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বেগম খালেদা জিয়ার সবশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাত্রা বিলম্বিত হওয়ার কয়েকটি কারণ জানিয়েছেন চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। 

 

তিনি বলেন, কাতারের আমিরের ব্যবস্থাপনায় আনা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল এবং একই সঙ্গে মেডিকেল বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে ওই মুহূর্তে তার ফ্লাই করা নিরাপদ হবে না। তিনি জানান, ভবিষ্যতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থাই নির্ধারণ করবে কখন তাকে বিদেশে নেওয়া সম্ভব হবে।

 

তিনি আরও বলেন, যেহেতু খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, তাই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চিকিৎসকদের মতামতিকেই প্রধান্য দিচ্ছেন এবং দলও বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।

কালের কণ্ঠ পত্রিকার আজকের প্রধান শিরোনাম- ‘নিচুমানের পাঠ্যবই এবারও’। আগের বছরগুলোর মতো এ বছরও নিম্নমানের কাগজে ছাপা হচ্ছে পাঠ্যবই।

২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য ৩০ কোটি পাঠ্যবই ছাপার কাজ চললেও আগের বছরের মতো এবারও নিম্নমানের কাগজ ব্যবহারসহ নানা অনিয়ম দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, অগ্রণী, কর্ণফুলী, কচুয়া ও আনোয়ারা—এই চারটি প্রেস বিপুল পরিমাণ রিসাইকলড কাগজ ও কম জিএসএমের কাগজ ব্যবহার করে বই ছাপছে। চার প্রেসের মালিক দুই ভাই ও ভগ্নিপতি, যাঁরা ২০০ কোটির বেশি কাজ পেয়েছেন।

এনসিটিবির নির্ধারিত মান অনুযায়ী প্রাথমিক ও ইবতেদায়ির বইয়ে ৮০ জিএসএম ও ৮৫ ব্রাইটনেস এবং মাধ্যমিকে ৭০ জিএসএম থাকার কথা থাকলেও ইবতেদায়ি ও মাধ্যমিক বইয়ে ৬০–৭০ জিএসএম কাগজ পাওয়া যাচ্ছে। বাজারদর টনপ্রতি ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা হলেও অগ্রণী ও কর্ণফুলী প্রেস ৯০ হাজার টাকায় রিসাইকলড কাগজ কিনছে, যেখানে ভার্জিন পাল্প মাত্র ৬০–৭০ শতাংশ।

ইবতেদায়ির বিভিন্ন লটের অন্তত ৩৫ লাখ বইয়ে কম জিএসএম কাগজ ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব বই দেশের বিভিন্ন জেলার ১২০টির বেশি উপজেলায় বিতরণের কথা। তদন্তে গেলে এনসিটিবি ও ইন্সপেকশন এজেন্ট কর্মকর্তারা হুমকি পাচ্ছেন; এমনকি নিম্নমানের কাগজের স্যাম্পল নেওয়ার পর একজন কর্মকর্তার ব্যাগ ছিনতাইও হয়।

মাধ্যমিকের ইন্সপেকশন এজেন্ট বলছে, নিম্নমানের কাগজে বই ছাপলে মান খারাপ হবেই; ধরা পড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু অভিযোগ আছে, এনসিটিবির কিছু কর্মকর্তা সিন্ডিকেটের হয়ে কাজ করছেন এবং নিম্নমানের বইকে ভালো রিপোর্ট দিচ্ছেন।

 

এর আগে প্রাথমিক পর্যায়েও অগ্রণী প্রেস নিম্নমানের বই সরবরাহ করেছিল বলে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার চিঠিতে উল্লেখ আছে। সম্প্রতি নবম শ্রেণির খারাপ মানের বই কাটছাঁটও করেছে এনসিটিবি।

অগ্রণী, কর্ণফুলী, কচুয়া ও আনোয়ারা প্রেস ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মদদে বিগত আট বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বই ছাপার কাজ করেছে এবং অভিযোগ অনুযায়ী নিম্নমানের বই সরবরাহ করে বড় অঙ্কের টাকা লোপাট করেছে।

এনসিটিবি বলছে তারা অভিযান চালাচ্ছে, কিন্তু শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। প্রেস মালিকরা দাবি করছেন, তারা মান বজায় রেখে বই ছাপছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, কম জিএসএম ও কম ব্রাইটনেসের কাগজ শিক্ষার্থীদের চোখের ক্ষতি করে এবং বই ছয় মাসের বেশি টেকে না। গত শিক্ষাবর্ষেও ৮০ শতাংশ বই নিম্নমানের ছিল বলে অভিযোগ হলেও কোনো শাস্তি হয়নি; ফলে এবারের বই নিয়েও একই আশঙ্কা রয়ে গেছে।

মুদ্রণ শিল্প সমিতি বলছে, কিছু প্রেস খারাপ কাগজ কিনছে এবং মান নিয়ন্ত্রণে এনসিটিবি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কঠোর নজরদারির প্রয়োজন।

প্রথম আলো পত্রিকার আজকের প্রধান খবর- ‘কারাগারে টাকা দিলেই মুঠোফোন, বাইরের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বন্দীরা।’

এ প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই কারাগারকেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও গাজীপুরে অবস্থিত কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার। প্রভাবশালী ও দুর্ধর্ষ বন্দীও বেশি এই দুই কারাগারে। কড়া নিরাপত্তা ও নজরদারিও এই দুটি কারাগারে বেশি থাকার কথা।

অথচ এই দুই কারাগারের অনেক বন্দী অবৈধভাবে মুঠোফোন ব্যবহার করে বাইরের মাদক কারবার, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করেন। কেউ কেউ রাজনৈতিক নির্দেশনাও দেন। এমনকি কারাগার ভেঙে পালানোর মতো পরিকল্পনাও করেছিলেন দুর্ধর্ষ আসামিদের কেউ কেউ।

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি অন্তর্বর্তী সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকেও দেওয়া হয়েছে। কয়েক মাস আগে দেওয়া এসবির এই প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, দেশের অন্যতম প্রধান এই দুটি কারাগারের বন্দীরা অবৈধভাবে অন্তত ৩৬০টি মুঠোফোন নম্বর ব্যবহার করছেন।

এর মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৭৯টি ও কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ২৮১টি মুঠোফোন নম্বর ব্যবহৃত হচ্ছে বলে প্রথম আলাের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল— ‘ভোটের জোটে গতি নেই’

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সময় ঘনিয়ে এলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো দৃশ্যমান কোনো বড় ধরনের নির্বাচনী জোট গঠিত হয়নি। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ প্রধান বিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে জোট নিয়ে আলোচনা চললেও তা কোনো সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি। বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা বললেও মনোনয়ন ঘোষণায় শরিকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। ১২ দলীয় জোট অভিযোগ করেছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই বিএনপি ২৭২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী আটটি ইসলামপন্থী দলকে নিয়ে সমন্বিত কৌশলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তফসিল ঘোষণার আগেই আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করার কথা জানাচ্ছে দলটি।

বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে জোট হবে কি না, তা নিয়ে এনসিপির ভেতরে মতভেদ দেখা দিয়েছে। দলটির দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে কেন্দ্র করে বিভক্তির কথাও শোনা যাচ্ছে। এনসিপি একদিকে তৃতীয় শক্তি গঠনের জন্য মধ্যমপন্থী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে, অন্যদিকে সম্ভাব্য জোট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেয়নি।

এদিকে জাতীয় পার্টিতে আওয়ামী লীগবিহীন নতুন বাস্তবতায় ভাঙন তৈরি হয়েছে। আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন অংশ ১৬ দল নিয়ে নতুন জোট ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন মূল অংশ এখনো কোনো জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি।

বামপন্থী দলগুলো নয়টি দল নিয়ে নতুন জোট ‘গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট’ গঠন করেছে এবং আরও বাম ও গণতান্ত্রিক দলকে যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তারা জনতার সনদ তৈরির উদ্যোগও নিয়েছে। সর্বোপরি তফসিল ঘোষণার প্রাক্কালে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোটবদ্ধতার আলোচনা থাকলেও কোনো প্রধান শক্তি এখনো চূড়ান্ত জোট গঠন করতে পারেনি।

আমার দেশ পত্রিকার আজকের আলোচিত সংবাদ— ‘নির্বাচনে আতঙ্ক লুণ্ঠিত অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি ১৩৪০টি’

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত জুলাই আন্দোলনে লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়ছে। মোট ৫,৭৬৩টি অস্ত্র লুট হয়েছিল, যার মধ্যে এখনো উদ্ধার হয়নি ১,৩৪০টি। এসব অস্ত্র নির্বাচনী সহিংসতা, কালোটাকার প্রভাব ও আন্ডারওয়ার্ল্ডে ব্যবহারের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন পুলিশ। চট্টগ্রামে বিএনপির প্রার্থীর ওপর গুলিবর্ষণ ও মিরপুরে যুবদল নেতাকে হত্যা—এসব ঘটনায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়া বিলম্বিত হওয়ার কারণ জানালেন ডা. জাহিদ

সরকার অস্ত্র উদ্ধারে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করেছে, তবে বহু অস্ত্র এখনো নিখোঁজ। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সাঁড়াশি অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে। আইজিপি জানিয়েছেন, বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চলছে এবং সোর্স ব্যবহার করে অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় পুলিশের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা ও নাশকতা প্রতিরোধ। নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ চরমপন্থিদের দিয়ে হামলার চেষ্টা করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রার্থীদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা, তল্লাশি ও নজরদারি বাড়ানো হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ও বিদেশি প্রোপাগান্ডা রোধে সাইবার ইউনিট কাজ করছে। সংঘাত-সম্ভাব্য এলাকা হিসেবে চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা (বাড্ডা- মিরপুর), নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, খুলনাসহ কয়েকটি জেলা চিহ্নিত হয়েছে, যেখানে অতিরিক্ত নিরাপত্তা থাকবে।

দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার আজকের প্রধান শিরোনাম— ‘বিনিয়োগ নেই বাড়ছে বেকার’

দেশে বছরে প্রায় ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করলেও শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়া, বিনিয়োগ কমে যাওয়া, ঋণের উচ্চ সুদ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, জ্বালানি সংকট ও কাঁচামালের দাম বাড়ায় নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। উৎপাদন কমে যাওয়ায় বহু কারখানায় পণ্য বিক্রি না হওয়ায় মালিকরা উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছেন। শ্রমবাজারে দক্ষ ও অদক্ষ মিলিয়ে লাখ লাখ মানুষ চাকরি পাচ্ছেন না। জরিপ অনুযায়ী, প্রায় এক কোটি কর্মক্ষম মানুষ তাদের যোগ্যতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কাজ পাচ্ছেন না; সামগ্রিক বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখ, যার মধ্যে ৮ লাখ ৮৫ হাজারই স্নাতক ডিগ্রিধারী।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সুদের হার বৃদ্ধি, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি বিনিয়োগে প্রধান বাধা। নির্বাচনের আগে নীতিগত অনিশ্চয়তার কারণেও উদ্যোক্তারা অপেক্ষারত। অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, সুদের হার এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হওয়ায় বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন শ্রমিক হাটে দিনমজুরেরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কাজ পাচ্ছেন না। অত্যধিক ‘সার্টিফিকেট-নির্ভর’ শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে শিক্ষিত তরুণদের ৯০ শতাংশই চাকরির জন্য অযোগ্য বা আনফিট বলে কর্মদাতারা মনে করছেন। চাকরিবাজারের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা সিলেবাস পুনর্গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বিনিয়োগ সূচকে বড় পতন দেখা যাচ্ছে—কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানির এলসি নিষ্পত্তি কমেছে, বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহও আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। বিডার সঙ্গে বৈঠকে উদ্যোক্তারা ব্যাংক সুদ, উচ্চ কর, পরিবহন সমস্যা, গ্যাসের অভাব ও রাজনৈতিক অস্থিরতাকে বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে রয়েছেন এবং দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

দ্যা ডেইলি স্টার পত্রিকার আজকের প্রধান শিরোনাম— ‘Seat-sharing snub riles BNP allies’

আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি এখন পর্যন্ত ২৭২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তবে জোটের সহযোগীদের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা না করায় তাদের মধ্যে গভীর অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। মোট ২৮টি আসন এখনো শূন্য আছে। দলীয় সূত্র বলছে, এর মধ্যে মাত্র প্রায় ১৫টি আসন জোটের জন্য রাখা হতে পারে—যা সহযোগী দলগুলোর প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম।

বাকি ১৩টি শূন্য আসনের মধ্যে ছয়টিতে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি, তিনটিতে উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া যায়নি এবং চারটি আসন সীমানা সংক্রান্ত আইনি জটিলতায় ঝুলছে।

প্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের কারণে জোটের প্রার্থীরা নিজ নিজ প্রতীকেই নির্বাচন করতে বাধ্য—এ কারণে বিএনপি ঝুঁকি এড়াতে সহযোগীদের না রেখে নিজের প্রার্থী দিতে চায় বলে জানান দলীয় নেতারা।

এ অবস্থায় জোটের বিভিন্ন নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ১২-দলীয় জোট, গণতন্ত্র মঞ্চ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জাতিয়তাবাদী সমমনা জোটসহ অন্তত দুই ডজন নেতাই অভিযোগ করছেন যে বিএনপি তাদের কথা রাখেনি।

কিছু দল সরাসরি সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণাও দিয়েছে—যেমন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।

অনেক আসনে আগে থেকেই জোট নেতারা প্রচার চালাচ্ছিলেন, কিন্তু বিএনপি সেখানে নিজস্ব প্রার্থী ঘোষণা করেছে—যেমন কিশোরগঞ্জ-৫, ঝালকাঠি-১, নারায়ণগঞ্জ-২, ঢাকা-৮, নারায়ণগঞ্জ-২ প্রভৃতি।

বিএনপি বলছে, সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং শূন্য আসনগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে।

শূন্য থাকা আসনগুলোর মধ্যে নীলফামারী-১, পটুয়াখালী-৩, বগুড়া-২, ঝিনাইদহ-২ ও ৪, ঢাকা-১৩, ঢাকা-১৭, সিলেট-৫, লক্ষ্মীপুর-১ ও ৪, চট্টগ্রাম-১৪, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ময়মনসিংহ-১০সহ আরও কয়েকটি জোটের জন্য বিবেচনায় আছে।

অন্যদিকে, ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) সম্ভাব্য প্রার্থীরা যেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইছেন, সেসব আসনেও বিএনপি ইতোমধ্যে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে—যেমন ঢাকা-১১, রংপুর-৪, ঢাকা-৯, ঢাকা-১৪, ঢাকা-১৮ ও কুমিল্লা-৪।

সব মিলিয়ে, আসনবণ্টন নিয়ে বিএনপির সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলোতে অসন্তোষ, অবিশ্বাস ও দূরত্ব তৈরি হয়েছে—তাদের অভিযোগ, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার আশায় জোটের স্বার্থ উপেক্ষা করছে।