Image description

রোগ যে ধরনেরই হোক; অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য মানুষ হাসপাতালে ছুটে যাবেন এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু ভূমিকম্পের কারণে যদি কেউ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে চান, তিনি কি সময়মতো জরুরি চিকিৎসা পাবেন-এমন প্রশ্ন এখন জনমনে ঘুরেফিরে উঠছে। বিশেষ করে, মাত্র দুসপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকবার ভূমিকম্পের পর এমন প্রশ্ন বড় করে সামনে আসছে। বলা হচ্ছে, বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাবেন। কিন্তু সেই হাসপাতাল ঠিক আছে তো! ঝুকিপূর্ণ নয়তো?

দেশের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে এমন আলোচনার পর খোঁজ নিায়ে জানা গেল, অনেকটা ব্যবহার অনুপযোগী ঢাকার ২৪৮টি হাসপাতালই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে ১৭৪টি হাসপাতাল অতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানা গেছে। আবার এই তালিকায় ঢাকায় ৫টি বড় হাসপাতাল রয়েছে ভূমিকম্পের বিপজ্জনক ঝুঁকিতে। এই হাসপাতালগুলো হলো- ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক), স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিডফোর্ড হাসপাতাল), বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক পিজি হাসপাতাল), জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল) এবং বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট। এসব হাসপাতালের মধ্যে মিটফোর্ডের কয়েকটি ভবনের বয়স ১৫০ বছর, ঢামেকের একটি ভবনের বয়স ১২০ বছর, পিজি হাসপাতালের দুটি ভবনের বয়স ৬৫ বছর, পঙ্গু ও শিশু হাসপাতালের বয়স ৫৩ বছর। অথচ এসব পুরোনো জরাজীর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসা, পাঠদান, এমনকি আবাসিক হিসাবেও ব্যবহার হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত পুরোনো ভবন সবার জন্যই ঝুঁকির। এগুলোর মেয়াদ এরই মধ্যে অনেকাংশে উত্তীর্ণ হয়ে গেছে।

জনস্বাস্থ্যবিদ লেলিন চৌধুরী বলেন, হাসপাতাল যদি নিজেই বিপদে বা সংকটে থাকে তবে রোগীর সমস্যা দেখবে কে? এজন্য সেখানে কোনো ভবন ঝুঁকিপূর্ণ কিনা সেটি দেখার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি করা উচিত। সেখানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতামত দিতে বিশেষজ্ঞদের রাখতে হবে। তারা মূল্যায়ন করবে কোনগুলো রাখা যাবে, কোনগুলো রাখা যাবে না। এছাড়া নতুন ভবন তৈরির আগে সেটি ভূমিকম্প সহনশীল হবে কিনা সেটাও বিশেষজ্ঞরা বলে দেবেন। একটি প্রযুক্তিনির্ভর জায়গায় আমাদের যেতে হবে। হাসপাতালে পুরাতন ভবন যেগুলো আছে সেগুলো দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

আড়াই কোটি মানুষের বসবাসের শহর রাজধানীবাসীর জন্য কোনো দিক থেকেই ভালো খবর নেই। মানুষ আছে ভূমিকম্পের ভয় ও ঝুঁকির মাঝে। সোমবার রাতেও ঢাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। মানুষ অনেকটা নিজ দায়িত্বে বেঁচে থাকার লড়াই করছে। বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কয়েক লাখ মানুষ হতাহত হবে, এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তারা বলেন, ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে হতাহত মানুষ প্রথমেই ছুটে যাবে নিকটস্থ হাসপাতালে। তবে দেশের বড় ৫টি হাসপাতালের যে দশা, তাতে হাসপাতালই এক ধরনের রোগী হয়ে জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। রোগীর চিকিৎসা যেমন দরকার, তেমনি এসব ভবন মেরামত, নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিতের তালিকায় সব ধরনের ভবন রয়েছে। হাসপাতাল, সরকারি অফিস, বাসাবাড়ি সবকিছু রাজউক মনিটরিং করছে। এছাড়া রাজউক নতুন করে ৭ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল ভবন বা স্থাপনা নির্মাণ নিশ্চিত করতে কঠোর মনিটরিং করছে। এ লক্ষ্যে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে ভবন নির্মাণ নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এটা তখন সফল হবে, যখন ভবন মালিকরা রাজউকের অনুমোদন নিয়ে ভবন নির্মাণ করবে।

রাজউক চেয়ারম্যান আরও বলেন, রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিতকরণ কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩ শতাধিক ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে। সেসব ভবনের ফিটনেস যাচাই-বাছাইয়ে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো ভবন সিলগালাও করে দেওয়া হয়েছে। পুরান ঢাকায় বিশেষ অভিযান চলছে।

২১ নভেম্বর সকালে যা ঘটেছিল : ২১ নভেম্বর সকাল পৌনে ১১টায় ভূমিকম্প শুরুর সময় শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে দুই বছর বয়সি অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে ভর্তি ছিলেন তাহমিনা বেগম। সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ওই সময় একজন নার্স দুই বছরের শিশু মায়মুনার হাতে ক্যানুলা পরাচ্ছিলেন। আকস্মিক ভূমিকম্প শুরু হলে নার্স ও রোগীর অভিভাবকসহ ওয়ার্ডের সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। এ সময় কোনো শিশু রোগীর শরীরে স্যালাইন চলছিল। শ্বাসকষ্টে ভোগা দুই শিশুর মুখে অক্সিজেন মাস্ক ছিল। এমন অবস্থায় নিজের প্রাণ বাঁচাতে ওয়ার্ডে ডিউটিরত দুই নার্স দৌড়ে বাইরে চলে যান। আতঙ্কিত অভিভাবকদের অনেকে বের হয়ে যান। অসুস্থ মেয়েকে কোলে করে বাইরে গিয়ে দেখি, আমার মতো অনেকেই বাচ্চাদের নিয়ে ওয়ার্ড থেকে নেমে এসেছেন। চিকিৎসক, নার্স, স্টাফদেরও অনেকে বের হয়ে আসছেন।

জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ২০১৭ সালে ঢাকাকে চারটি অঞ্চলে বিভক্ত করে সব ধরনের স্থাপনা পরিদর্শনের উদ্যোগ নেয়। এর অংশ হিসাবে ঢাকার ৪৩৩টি হাসপাতাল পরিদর্শন করা হয়। ওই পরিদর্শন প্রতিবেদনে ২৪৮টি হাসপাতালকে ঝুঁকিপূর্ণ ও ১৭৪টিকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

ঢাকা মেডিকেল : দেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ২৬০০ শয্যাবিশিষ্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) যাত্রা শুরু ১৯৪৬ সালে। হাসপাতালটিতে দৈনিক গড়ে ৪ হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। হাসপাতালটির মূল ভবনের বয়স ১২০ বছর। গণপূর্ত বিভাগ এই ভবনটি অনেক আগেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মূল ভবনটি পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসাবে চিহ্নিত করেছে।

সংশ্লিষ্টরা যুগান্তরকে বলছেন, ঢামেকের ওয়ার্ড, শ্রেণিকক্ষ, ছাত্রাবাস, স্টাফ কোয়ার্টার ভবনের ছাদ ও দেওয়াল থেকে পলেস্তারা ধস এবং সিলিংয়ের রড খসে বৈদ্যুতিক পাখা খুলে পড়া নিত্যদিনের ঘটনা। অনেক দেওয়াল ও ছাদ থেকে চুইয়ে পড়ছে পানি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রোগীরা। ঢামেকে মেরামতের অনুপযোগী হওয়ায় সম্প্রতি আবাসিক হলের মূল ভবনের চারতলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে পিডব্লিউডি। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ মে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ আবাসিক হল খালি করার নির্দেশ দেয়। তবে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় হল ছাড়তে পারছেন না শিক্ষার্থীরা।

একাধিক চিকিৎসক বলেন, চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর নাক, কান ও গলা বিভাগের ৩০৩ নম্বর ওয়ার্ডের ছাদের একাংশের পলেস্তারা খসে পড়ে সালমা বেগম নামে এক রোগীর কানের পর্দা ফেটে যায়। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে একই ওয়ার্ডের ছাদের একাংশের পলেস্তারা খসে পড়ে এক রোগীর স্ত্রী আহত হন। ঘটনায় আহত রোগীর মাথা ২৪টি সেলাই পড়ে। ২০১৯ সালের ৩ জুন বহির্বিভাগে দায়িত্বকালীন ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে ডা. মিতু নামে একজন ইন্টার্নাল মেডিকেল অফিসার আহত হন। এসব বিষয়ে কথা বলতে ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে হলে তিনি সাড়া দেননি।

মিটফোর্ড হাসপাতাল : দীর্ঘ দেড়শ বছরের পুরোনো পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল। ৯০০ শয্যার হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ১২০০ রোগী ভর্তি থাকেন। ওয়ার্ডে জায়গা না থাকায় অনেকে মেঝে, করিডর ও বারান্দায় শয্যা পাতেন। হাসপাতালের মেডিসিন ভবনটি ৩ নম্বর ভবন নামে পরিচিত। প্রতিদিন এখানে চিকিৎসা নেন ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী। রোগীর স্বজন, চিকিৎসক, নার্সসহ দৈনিক গড়ে দেড় হাজার মানুষ এই ভবনে অবস্থান করেন। ভবনটিতে রয়েছে ব্ল্যাডব্যাংক, লিভার বিভাগ, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি, এন্ডোক্রাইনোলজি ও ডায়াবেটিস বিভাগ, যেখানে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভবনটির ছাদ ও দেওয়ালের পলেস্তারা খসে পড়া নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিটফোর্ড হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক কর্মচারী জানান, গণপূর্ত অধিদপ্তর ২০০৯ সালে মিটফোর্ডের পুরোনো বহির্বিভাগ ভবন, পুরোনো প্রশাসনিক ভবন, কিং এডওয়ার্ড ভবন এবং মিনিয়ালস কোয়ার্টার-এই চারটি ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণার সুপারিশ করে। কারণ, ভূমিকম্প বা বড় ধরনের দুর্যোগ হলে ভবনগুলো ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। ভবনগুলোয় থাকা হাসপাতালের কর্মচারীদের সরিয়ে নিতে এবং চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধে একাধিকবার নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশ দেওয়া হলেও ঝুঁকি নিয়েই সবকিছু চলছে।

এ বিষয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক হয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এটিএমএ রুস্তমের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিক কল করা হলেও সাড়া দেননি।

পঙ্গু হাসপাতাল : ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর পঙ্গু হাসপাতালে এক হাজার শয্যা সম্প্রসারিত ভবন উদ্বোধন করা হয়। ২১ নভেম্বরের ভূমিকম্পে পঙ্গু হাসপাতালের ১২তলাবিশিষ্ট ওই বহুতল নতুন ভবনসসহ পুরোনো ভবনে ফাটল দেখা দেয়। এতে রোগী, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানায়। গণপূর্ত বিভাগকে (পিডব্লিউডি) চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলে।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. এহসানুল হক জানান, পঙ্গু হাসপাতালের অবকাঠামো দেখভালের দায়িত্ব পিডব্লিউডির শেরেবাংলানগর শাখার মেডিকেল উপবিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর (সিভিল শাখা)। এ বিষয়ে তারা ভালো বলতে পারবেন। পরে পিডব্লিউডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. লতিফুল ইসলাম বলেন, তিনি ২১ নভেম্বরের ভূমিকম্পের পর ২৬ নভেম্বর বদলি হয়ে চট্টগ্রামে এসেছেন। ভূমিকম্পে পঙ্গু হাসপাতালের যে ভবনটিতে ফাটল মেজর (বড়) কোনো ক্ষতি নয়, বরং মাইনর (ছোট) বলা যায়। এটি নন-স্ট্রাকচারাল ওয়াল, যেটি পার্টিশন আকারে রয়েছে। পরিস্থিতি বিস্তারিত ক্ষতিয়ে দেখতে পিডব্লিউডি প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। ভবনের কলাম ও ভিমে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অ্যালুমিনিয়ামের লুভার দিয়ে মেরামত করে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় : বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ২০২৩ সালের মার্চে ‘আরবান রেজিলিয়েন্স’ প্রকল্পের আওতায় একটি জরিপ চালায়। প্রকল্পের আওতায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো ২০৭ হাসপাতাল ভবনের মধ্যে জরিপ চালানো হয়। সেই তালিকায় ১৯৬০ সালে স্থাপিত বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিজি হাসপাতাল) সাততলাবিশিষ্ট ‘এ’ এবং ছয়তলাবিশিষ্ট ‘বি’ ব্লকে দুটি ভবনকে অত্যন্ত বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়। ‘এ’ ব্লকে রেসিডেন্ট শিক্ষার্থীদের আবাসন, ক্যান্টিন, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ এবং ‘বি’ ব্লকে প্রশাসনিক কাজ করা হয়।

এ বিষয়ে বিএমইউর প্রধান প্রকৌশলী মো. জাফর ইকবাল বলেন, ২০২৩ সালে ভবন দুটিকে ঝুঁকি ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল। গণপূর্ত বিভাগ এটি নিয়ে কাজ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ডিপিপি জমা দেয়। মন্ত্রণালয় আরও কিছু সুপারিশ দিয়ে ফের গণপূর্তে পাঠায়। এটি নিয়ে কাজ চলছে।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল : এদিকে ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের চারতলাবিশিষ্ট ‘এ’ ব্লকের চতুর্থতলা ও তিনতলাবিশিষ্ট নিটোর স্টাফ কোর্টার অত্যন্ত পুরোনো হওয়ায় পিডব্লিউডি ২০১৪ সালে ভুমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। এরপরও ‘এ’ ব্লকের চতুর্থতলায় চিকিৎসকদের একাডেমিক কার্যক্রম, লাইব্রেরি, মিলনায়তন হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। অন্যদিকে স্টাফ কোয়ার্টারে পঙ্গু ও শিশু হাসপাতালের কিছুসংখ্যক চিকিৎসক, নার্সদের আবাসন ছাড়াও স্টাফরা পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।

জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল হক বলেন, সম্প্রতি ভূমিকম্পে হাসপাতাল-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় ‘এ’ ব্লকের চতুর্থতলার মিলনায়তন, লাইব্রেরি ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোয়ার্টার ছাড়েনি।