Image description
► ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন - ইসি আনোয়ারুল ইসলাম ► তফসিল ঘোষণা ৭ থেকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে - ইসি রহমানেল মাসউদ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠানে সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তারিখ নির্ধারণে ৭ ডিসেম্বর ইসি বৈঠকে বসবে। এক্ষেত্রে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে গণভোট ও সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হতে পারে। এ ছাড়া ডিসেম্বরের ৭ থেকে ১১ তারিখের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। সেই সঙ্গে ভোট গ্রহণের সময় ৮ ঘণ্টা থেকে ১ ঘণ্টা বাড়িয়ে ৯ ঘণ্টা করা হতে পারে। গতকাল দুজন নির্বাচন কমিশনার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত ৩০০ আসনের সীমানাসংক্রান্ত গেজেটের আলোকেই তফসিল ঘোষণা করা হবে। অপরিবর্তিত থাকছে সংসদীয় আসনের সীমানা। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন বিষয়ক রুলের জবাব প্রস্তুত করছে ইসি।

গতকাল নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এক দুই দিন পর কিংবা ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে এক দুই দিন আগেও ভোট গ্রহণের তারিখ হতে পারে। অর্থাৎ মাঝামাঝি কোনো সময় হতে পারে। ইসি সূত্র বলছে, ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ রবিবার এবং ফেব্রুয়ারি ১২ তারিখ বৃহস্পতিবার। সে হিসেবে মঙ্গলবারের দিকে সংসদ নির্বাচন হতে পারে। আবার ১২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবারও ভোট গ্রহণ হতে পারে। কেননা ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণ হলে দুই দিন ছুটিতে থাকতে পারবেন ভোট গ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। তবে সব কিছু নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।

তফসিল ঘোষণার বিষয়ে গতকাল নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ৭ ডিসেম্বর কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী সপ্তাহের ৭ ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে যে কোনো দিন তফসিল ঘোষণা হবে। তবে ৭ ডিসেম্বর তফসিল ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ বিষয়ে গতকাল নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগামী রবিবার (৭ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হবে। ভোট নিয়ে আলোচনা হবে সভায়।

ইসির কর্মকর্তারা বলেন, আগামী রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ভোট নিয়ে কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই সব তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে দু-তিন দিন সময় রেখে বা বৃহস্পতিবারের দিকে (১১ ডিসেম্বর) তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। তবে ওইদিন তফসিল ঘোষণার তারিখ জানানো হতে পারে।

অন্যদিকে ভোট গ্রহণের সময়ও এক ঘণ্টা বাড়ানোর কথা ভাবছে ইসি। নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, যেহেতু গণভোট ও সংসদ নির্বাচন একদিনে হবে, তাই গোপন কক্ষের সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। আবার ভোটের সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়ে নয় ঘণ্টা করা হতে পারে। এজন্য সকাল-বিকালে দুই দিকেই সময় বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। এখন সকাল ৮টা থেকে ভোট শুরু হয়, সেটা সাড়ে সাতটা থেকে হতে পারে। আবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট হয়। সেটা সাড়ে চারটা করার কথা ভাবা হচ্ছে।

প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট নেওয়ার আয়োজন হচ্ছে ‘আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটের’ মাধ্যমে। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার সংসদ নির্বাচনে ১০ লাখের বেশি লোকবল নিয়োজিত থাকবে।

হঠাৎ ভোটের আইনশৃঙ্খলা কর্মশালা স্থগিত : আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক কর্মশালা স্থগিত করা হয়েছে। আজ (বুধবার) বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ কর্মশালা অনুষ্ঠানের কথা ছিল। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে সরকারের এ সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কেন স্থগিত করা হলো চিঠিতে তার কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশ মহাপরিদর্শক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালক, মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক, পুলিশের সব রেঞ্জ ডিআইজি, সব জেলা প্রশাসক, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সব চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সব আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচনি কর্মকর্তা, ইউএনও, সব পুলিশ কমিশনার, ওসিসহ সব বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও পাবলিক প্রসিকিউটরদের এ চিঠির কপি পাঠিয়েছে। এতে বলা হয়, ‘আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬ যথাযথভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে আগামী ৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিতব্য ‘সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সমন্বিত ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালাটি অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হলো।’ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ জন্য ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে ইসির তরফে জানানো হয়েছে।