রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। চিকিৎসকদের দেয়া চিকিৎসা তিনি গ্রহণ করছেন। তবে তাকে দেশের বাইরে নেয়ার মতো অবস্থা আপাতত নেই। সমন্বিত চিকিৎসায় শারীরিক অবস্থার উন্নতি হবে এমনটা আশা করছেন চিকিৎসকরা।
বেগম খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করার পর গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) নিরাপত্তা দেয়া শুরু করেছে। বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে এসএসএফ সদস্যরা খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় হাসপাতালে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের অবস্থা স্থিতিশীল আছে। চীন থেকে আরেকটি চিকিৎসকদল আজ ঢাকা আসছে। যুক্তরাজ্য থেকে একটি চিকিৎসকদল গতকালই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। এই চিকিৎসকদলটি আজ সকালেই ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে। গতকাল রাতেও ঘণ্টা দেড়েক বৈঠক করেছে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড। যেখানে দেশি-বিদেশি অন্তত দেড় ডজন চিকিৎসক যুক্ত হন। লন্ডন ক্লিনিকের বিখ্যাত চিকিৎসক প্যাট্রিকও ছিলেন। যার অধীনে খালেদা জিয়া লন্ডনে মাসব্যাপী চিকিৎসা নিয়েছেন। ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন ছেলে তারেক রহমান, তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান। বৈঠকের পর বোর্ডের একজন সদস্য জানিয়েছেন, কিছু জটিলতা কেন বারবার দেখা দিচ্ছে, তার কারণ খোঁজা হচ্ছে। নতুন করে বেশ কয়েকটি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে চিকিৎসায় পরিবর্তন আনা হতে পারে।
ওদিকে গতকাল দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে ডাক্তাররা যে চিকিৎসা দিচ্ছেন, সেই চিকিৎসা উনি (বেগম খালেদা জিয়া) সেটি গ্রহণ করতে পারছেন। আমরা এই সংকটময় মুহূর্তে আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে উনার সুস্থতার জন্য দোয়া চাই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যাতে দেশবাসীর দোয়া, সারা পৃথিবীর অনেক মানুষের উনার প্রতি ভালোবাসা এবং দোয়ার কারণে হয়তো বা উনি এই যাত্রায় সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আমরা আশা করি।
জাহিদ হোসেন বলেন, আমরা আপনাদের মাধ্যমে সবাইকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং সেই সঙ্গে কোনো ধরনের গুজব ছড়ানো এবং গুজবে কান না দেয়ার জন্য বিনীতভাবে পরিবারের পক্ষ থেকে, দলের পক্ষ থেকে আপনাদের আমরা অনুরোধ করছি। আমাদের দল কীভাবে আপনাদের ইনফরমেশন দেবে সেটিও আমাদের দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আবেগপ্রবণ কণ্ঠে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত এই জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক বলেন, সম্মানিত সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা আপনারা ধৈর্য ধরুন, দীর্ঘ ছয় বছর যাবৎ আপনারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন। ইনশাআল্লাহ আমরা এই যাত্রাও আপনাদের ভালোবাসা, আপনাদের সহযোগিতা এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ মেহেরবানিতে, আমরা আবারো আমাদের প্রাণপ্রিয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে আজকে দেশের মানুষের অকৃতিম ভালোবাসার প্রতীক সেটি আজকে প্রমাণিত সেই লক্ষ্যেই আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই।
তিনি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করেছেন যে, ধৈর্য ধারণ করার জন্য এবং উনি সার্বক্ষণিকভাবে বিরামহীনভাবে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল টিমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া চিকিৎসাকার্য সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। কোনো ধরনের গুজবে কান না দেয়ার জন্য আপনাদের অনুরোধ করছি এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য সুস্থতার জন্য আপনাদের মাধ্যমে দেশ তথা সকল ধর্মের মানুষের প্রতি আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে উনাকে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞরা আসবেন এবং উনারা দেখবেন। দেখার পরবর্তীতে উনাকে যদি ট্রান্সফারেবল হয়, আমাদের যদি ট্রান্সফার করার প্রয়োজন পড়ে, উনার মেডিকেল বোর্ড মনে করে তখনই উনাকে যথাযথ সময়ে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে। আমাদের সকল প্রস্তুতি আছে। কিন্তু সর্বোচ্চটা মনে রাখতে হবে যে, রোগীর বর্তমান অবস্থা এবং সর্বোপরি মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শের বাইরে কোনো কিছু করার সুযোগ এই মুহূর্তে আমাদের নেই।
তিনি বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আমাদের দলের সিনিয়র যুব মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী উনার স্বাস্থ্য ব্যতীত অন্যান্য বিষয়ে আপনাদের মাঝে মাঝে ব্রিফ করবেন। আমি ডাক্তার জাহিদ হোসেন দলের একজন কর্মী, আমি আপনাদের উনার স্বাস্থ্য নিয়ে ব্রিফ করবো। এর বাইরে আপনারা অন্য কারও ব্রিফিংয়ের প্রতি কোনো ধরনের কান না দেয়ার জন্য দল আপনাদের অনুরোধ করেছে। আপনারা যদি এটা মানেন, ফলো করেন তাহলে আর কোনো গুজব ছড়ানোর সুযোগ থাকে না। জাহিদ বলেন, বিভিন্ন ধরনের গুজব, বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য বিভিন্ন জায়গায় দেখার পরিপ্রেক্ষিতে দলের পক্ষ থেকে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সার্বক্ষণিকভাবে উনার চিকিৎসার তদারকি করছেন। চিকিৎসার সমস্ত বিষয়ে উনি দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে আমাদের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন।
তিনি বলেন, দলের মহাসচিব এবং দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সারা দেশের মানুষের ন্যায় প্রধান উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সার্বক্ষণিকভাবে উনার চিকিৎসার ব্যাপারে যথাযথ সহযোগিতা, এই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং সকল কর্তৃপক্ষ দিয়ে যাচ্ছেন এবং আমরা সবার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ যারা অর্থাৎ আমেরিকা বলেন, ইউকে বলেন, পিপলস রিপাবলিক অব চায়না বলেন, কাতার বলেন, সৌদি আরব বলেন, পাকিস্তান বলেন, ইন্ডিয়া বলেন, আমাদের অনেক সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধান এই চিকিৎসার ব্যাপারে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
অধ্যাপক জাহিদ জানান, গত ২৩শে নভেম্বর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতত্বে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বেগম জিয়ার চিকিৎসাসেবায় কাজ করছেন। এই মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন, অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী, অধ্যাপক নুরুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক এ কিউ এম মহসিন, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক জিয়াউল হক, অধ্যাপক মাসুম কামাল, অধ্যাপক এজেড এম সালেহ, অধ্যাপক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইফুল ইসলাম এবং ডা. জাফর ইকবাল। বাংলাদেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রফেসর হাবিবুর রহমান, প্রফেসর রফিকউদ্দিন আহমেদ এবং প্রফেসর জন হ্যামিল্টন, প্রফেসর ডক্টর হামিদ রব, যুক্তরাজ্য থেকে প্রফেসর জন পেট্রিক, প্রফেসর জেনিফার ক্রস এবং ডা. জুবাইদা রহমানসহ আমেরিকা, ইউকে এবং বাংলাদেশের চিকিৎসকদের যৌথভাবে গঠিত মেডিকেল টিম কাজ করছেন। গত ২৭শে নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানান অধ্যাপক জাহিদ।
গত ২৩শে নভেম্বর রাত থেকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া ভর্তি আছেন।
খালেদা জিয়াকে দেখতে গেলেন ৩ বাহিনী প্রধান: গুরুতর অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে দেখতে যান তিন বাহিনীর প্রধান। গতকাল রাত নয়টার দিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌ বাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান বেগম জিয়ার চিকিৎসার খোঁজ নিতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। তারা সেখানে কিছু সময় অবস্থান করেন।
ব্রিটেনে নেয়ার প্রস্তুতি
কূটনৈতিক রিপোর্টার জানান, গুরুতর অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃটেনে পাঠানোর প্রস্তুতিতে সহায়তা করছে সরকার। এরইমধ্যে বৃটেনের একটি মেডিকেল টিম ঢাকার পথে রয়েছে। সময় স্বল্পতায় ভিসা ছাড়াই তারা ঢাকাগামী ফ্লাইট ধরেছেন। বাংলাদেশে তাদের অনএরাইভাল ভিসা দেয়ার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন খালেদা জিয়া। তার চিকিৎসার জন্য ৫ সদস্যের মেডিকেল টিম পাঠিয়েছে চীন। দেশি-বিদেশি চিকিৎকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলেই তাকে লন্ডনে নেয়া হবে। এরইমধ্যে তার দেশীয় চিকিৎসক টিম এবং অন্য সফরসঙ্গীরা ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ভিসাপ্রার্থীদের অনুকূলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নোট ভারবাল ইস্যু করেছে। মেডিকেল বোর্ডের সবুজ সংকেত পাওয়ামাত্রই তাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাতার আমীরের সেই বিশেষ এম্বুলেন্সটি চাওয়া হয়েছে। ক’মাস আগে তিনি ওই এম্বুলেন্সে চড়েই লন্ডনে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং সুস্থ হয়ে দেশে ফিরেছিলেন। গত সপ্তাহে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এম্বুলেন্স পাঠানোর অনুরোধ সংক্রান্ত চিঠি পৌঁছেছে বলে সরকারি এবং বিএনপি’র দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য চাওয়ামাত্র যেকোনো সহায়তায় সরকার প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। গতকাল গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে নেয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে তার চিকিৎসক টিম, পরিবার ও দল। তাদের প্রস্তাব মতে, সরকার তার করণীয় অর্থাৎ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর আগে গত ৩০শে নভেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে কূটনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ডিকাবের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানের সাইডলাইনে তৌহিদ হোসেন মানবজমিনকে বলেন, বেগম জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা সহায়তায় সরকারের তরফে নোট ভারবাল ইস্যু করা হয়েছে।
তারেক রহমান এখনো ট্রাভেল পাস চাননি: এদিকে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার জন্য এখনো ‘ট্রাভেল পাস’-এর আবেদন করেননি বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। মঙ্গলবার সেগুনবাগিচায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের ট্রাভেল পাস বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, উনি চাইলেই ইস্যু হবে। তবে আমার জানা মতে এখনো তিনি চাননি। তারেক রহমানের পাসপোর্ট আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, উনার পাসপোর্ট আছে কিনা এটা আমি বলতে পারবো না। তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই বলে দাবি করেন উপদেষ্টা।
ধারণা করা হচ্ছে, চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেয়ার মতো অবস্থা আছে কিনা? সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হয়তো তারেক রহমানের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত হবে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের ভাষ্য মতে, তারেক রহমান দেশে আসতে চাইলে সরকারের তরফে কোনো বাধা নেই। পাসপোর্ট মেয়াদোত্তীর্ণ বা অনুপস্থিত থাকলে একদিনের মধ্যে ওয়ান-টাইম ট্রাভেল পাস ইস্যু করা সম্ভব। উনি আজ যদি বলেন আসবেন, আমরা কাল পাস দিতে পারি; পরশুদিনই উনি প্লেনে উঠতে পারবেন।
খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ: সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করার পর স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) নিরাপত্তা দেয়া শুরু করেছে। বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে এসএসএফ সদস্যরা তাকে নিরাপত্তা দেয়া শুরু করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকার জানায়, খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকরের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের একটি বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয় এবং জাতির কাছে তার জন্য দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় হাসপাতালে তার নির্বিঘ্ন চিকিৎসা, প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা, তার নিরাপত্তা ও যাতায়াতের সুবিধা এবং উচ্চ মর্যাদা বিবেচনায় তাকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকরের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে নির্দেশনা দেয়া হয়। এ বিষয়ে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার এবং দল অবগত রয়েছে বলেও জানানো হয়।
বৈঠকের পর এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিং করেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বৈঠকে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয় এবং জাতির কাছে তার জন্য দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়।