Image description
 

ডায়াবেটিস এখন শুধু একটি রোগ নয়, বরং বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সংকট। শুধু ধনী বা শহুরে জীবনের নয়, শহর থেকে গ্রাম— সব জায়গায় এই ‘নীরব ঘাতক’ রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। তরুণরাও আক্রান্ত হচ্ছে ডায়াবেটিসে।

দেশে বর্তমানে এক কোটিরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রতি বছর এই সংখ্যায় যোগ হচ্ছে লাখো নতুন রোগী। এই অবস্থায় ডায়াবেটিস রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

চিকিৎসকরা বলছেন, পরিবর্তিত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাবই এই রোগের বিস্তারের মূল কারণ। আশঙ্কার বিষয়, অনেকেই জানেন না যে, তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, ফলে জটিলতা আরো বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক নগরজীবনের ব্যস্ততা, ফাস্টফুড নির্ভরতা এবং অনিয়মিত ঘুম ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আগে যেখানে বয়সভিত্তিক রোগ হিসেবে ধরা হতো, এখন কিশোর–যুবকরাও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

জাতীয় পুষ্টি ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ২৫ বছর বয়সের পর থেকেই ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিচ্ছে অনেকের শরীরে। বিশেষ করে যারা অফিসকেন্দ্রিক স্থির জীবনযাপন করেন, তাদের মধ্যে ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।

তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রায় এক কোটি ৩১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। রোগটিতে ২০ থেকে ৮০ বছর বয়সী ১৪ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ভুগছেন। উদ্বেগের কারণ হলো, দেশের শতকরা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষ জানেই না তারা রোগটিতে আক্রান্ত। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে অষ্টম। দেশে ১০ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয় ডায়াবেটিসে। এই রোগ প্রতিরোধে এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে ২০৪৫ সালে দেশে রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ২০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের রোগ নির্ণয় হচ্ছে না। এই সংস্থার যে চিত্র, তাতে দেখা যায়, রোগটি বাংলাদেশে ঊর্ধ্বমুখী।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি জানিয়েছে, বাংলাদেশে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের হার ৬ থেকে ১৪ শতাংশ। এছাড়া গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের টাইপ–২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, প্রায় ৫০ শতাংশ। গর্ভকালে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে শিশুদেরও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।