Image description
 

রাজধানীতে জাতীয় ঈদগাঁহ মাঠ সংলগ্ন ফুটপাত থেকে বৃহস্পতিবার ড্রামে ভরা খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে উদ্ধার হলেও পরে তার পরিচয় মিলেছে। নিহত ব্যক্তি হলেন রংপুরের বদরগঞ্জের বাসিন্দা আশরাফুল হক। তিনি তিন দিন আগে ঢাকায় গিয়েছিলেন বন্ধুর সাথে। জরেজ নামে ওই বন্ধু আশরাফুলের কাছে মোটা অংকের টাকা ধার চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পরিবার।

জানা গেছে, কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক তিন দিন আগে অসুস্থ বাবাকে হাসপাতালে রেখে বন্ধু জরেজ মিয়ার সাথে ঢাকা যান। এরপর থেকে স্ত্রী লাকী তাকে ফোন করলে জরেজ ফোন রিসিভ করতেন। বলতেন, আশরাফুল বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত আছেন। ফোনে স্বামীকে না পেয়ে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয় স্ত্রীর কাছে। পরে থানায় যান স্ত্রী লাকী বেগম। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, ঢাকায় তার খণ্ডিত লাশ উদ্ধারের কথা।

আশরাফুল হকের (৪২) বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে। বাবা মো. আব্দুর রশিদ ও মা মোছা. এছরা খাতুন। আশরাফুল ভারত ও মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ ও আলু আমদানির ব্যবসা করতেন। এ কাজে তার সরকারি লাইসেন্সও ছিল।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে নীল রঙের দুটি ড্রামের ভেতর থেকে ২৬ টুকরা খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে পরিচয় শনাক্ত করা না গেলেও পরে ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশ্লেষণ করে তার পরিচয় বের করে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট।

খুন হওয়া আশরাফুলের শ্যালক আব্দুল মজিদ বলেন, “আমার বোন জামাই তার বাবাকে রংপুরে একটি হাসপাতালে রেখে মঙ্গলবার মালয়েশিয়া ফেরত বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে ঢাকায় যান। বুধবার বিকেল ৫টায় আশরাফুলের সঙ্গে বোনের শেষ কথা হয়। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি।”

আব্দুল মজিদ আরও জানান, শেষ কথায় বাবাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসার কথা বলেন আশরাফুল। এরপর থেকে আশরাফুলকে কল দিলে তার বন্ধু জরেজ ধরে বলতো, আশরাফুল ব্যস্ত আছে, কালেকশনে গেছে।

তিনি আরও বলেন, “বৃহস্পতিবার দুপুরেও ফোন দেয়ার পর জরেজ ফোনটি রিসিভ করেন। কিন্তু তিনি আশরাফুলকে ফোনটি দিচ্ছিলেন না। এ জন্য আমার বোন জরেজের স্ত্রীর কাছে যায়। তিনি জরেজকে ফোন দিলে জরেজ তার স্ত্রীকে বলেন, আশরাফুলের ফোন ড্রেনে কুড়ায় পাইছে। এরপর বোনসহ থানায় আসি। এসে শুনি তাকে খুন করেছে। তার মরদেহ উদ্ধার হয়েছে ঢাকায়।”

বদরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আতিকুর রহমান জানান, নিহত আশরাফুল হকের স্ত্রী ও স্বজনেরা থানায় এসেছিল। তাদের কাছ থেকে আমরা বিভিন্ন প্রকার তথ্য নিয়েছি। সেগুলো দিয়ে ওসি রমনা ও শাহবাগকে সহযোগিতা করছি। এ ঘটনায় ঢাকাতে মামলা হচ্ছে। নিহতের পরিবার সেখানে যাচ্ছে।

পরিবার সূত্রে জানান গেছে, আশরাফুল হক দিনাজপুরের হিলি থেকে কাঁচামাল কিনে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় পাইকারি বিক্রি করতেন। তার বন্ধু জরেজ মিয়া শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় ছিলেন। দেশে আশার পর আশরাফুল হকের সঙ্গে ঘুরতেন। তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ধার চেয়েছিলেন।

শীর্ষনিউজ