ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গুরু তেগ বাহাদুর (জিটিবি) হাসপাতালে বোরকা পরার কারণে এক মুসলিম নারীকে প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৭ নভেম্বর, যা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, তাবাসসুম নামের ওই নারী বৈধ গেটপাস নিয়ে সদ্য সন্তান জন্ম দেওয়া তার ভাবিকে দেখতে হাসপাতালে যান। কিন্তু প্রবেশদ্বারে দায়িত্বে থাকা নারী নিরাপত্তারক্ষীরা তার বোরকা নিয়ে আপত্তি তোলেন এবং ভেতরে ঢুকতে বাধা দেন।
ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, তাবাসসুম নিরাপত্তারক্ষীদের উদ্দেশে বলছেন, “আমার কাছে গেটপাস আছে, তবুও কেন ঢুকতে দিচ্ছেন না?” কিন্তু রক্ষীরা বলেন, “এই পোশাক পরে ভেতরে যাওয়া যাবে না।” অথচ অন্য দর্শনার্থীদের সহজেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।
তাবাসসুমের পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ ও ‘ধর্মীয় বৈষম্যের’ উদাহরণ বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের ভাষায়, “মুসলমানরা কি এখন হাসপাতালে অসুস্থ আত্মীয় দেখতে গেলেও অপমানিত হবে?”
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ইরফান আহমেদ বলেন, “এটা ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতার স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি। প্রথমে স্কুল, কলেজ—এখন হাসপাতাল পর্যন্ত! সংখ্যালঘুরা এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় স্থানেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।”
যদিও নিরাপত্তার কারণে মুখ দেখানোর শর্ত অনেক হাসপাতালে থাকতে পারে, জিটিবি হাসপাতালের নিয়মে বোরকা নিষিদ্ধ নয়। অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, এটি স্পষ্ট ইসলামবিদ্বেষী আচরণ, কোনো নিরাপত্তা প্রোটোকল নয়।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে এবং সরকারি হাসপাতালগুলোতে ধর্মীয় বৈষম্য রোধে কঠোর নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে। জিটিবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।