
‘সংস্কার চলছে-বিকল্প পথে চলুন’ রাস্তায় হরহামেশাই এমন সাইনবোর্ড চোখে পড়ে। কোনো রাস্তা সংস্কারকাজে মূল রাস্তাটি বন্ধ রাখায় পথচারীদের অন্য পথে চলাচলের পরামর্শ দেয়া হয়। অন্তর্বর্তী সরকার এখন যেন সংস্কার নিয়ে ব্যস্ত। ফলে জনগণের ভোটের অধিকার ‘নির্বাচন গৌণ’ বোঝাচ্ছে। সংস্কার ইস্যুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দিনের পর দিন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ চলছে। সংলাপের কোথায় লেজ আর কোথায় মাথাÑ জাতি বুঝতে পারছে না।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এজেন্ডায় কি কেবল ‘সংস্কার ইস্যু’ ছিল? রাষ্ট্র মেরামতের অজুহাতে আয়োজিত এ সংলাপে অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী সংগঠন, আইনজীবী সমাজ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, কৃষক ও প্রান্তিক জনগণের প্রতিনিধির মতামতের প্রয়োজন নেই? সংলাপে অংশ নেয়া বিএনপি, জামায়াতসহ কয়েকটি দল ছাড়া প্যাডসর্বস্ব রাজনৈতিক দলগুলোর কি গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ ছিল? যারা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রয়েছেন আন্দোলনে তাদের ভূমিকা কি ছিল? রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে সংলাপে যারা অংশ নিচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই অপরিচিত মুখ।
প্রশ্ন হচ্ছে, এ সংলাপ কতদিন চলবে? সংলাপে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্য কী? এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এমন দীর্ঘমেয়াদি সংলাপ কেউ দেখেনি। অবশ্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ গতকাল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৫তম দিনের আলোচনায় দাবি করেছেন, ‘৩১ জুলাইয়ের মধ্যে একটি সনদের জায়গায় যাওয়া। যেটি আপনাদের-আমাদের সবার ইচ্ছা ও প্রচেষ্টা। দেশের জনগণও সেটিই প্রত্যাশা করছেন।’ শেখ হাসিনার পালানো এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য অটুট ছিল। বিশেষ করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সবাই ছিলেন একাট্টা। হাসিনার পক্ষে ভারত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করলে সব দল ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করে। শুধু তাই নয়, ভারত বাংলাদেশকে নানাভাবে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টায় জুডিশিয়াল ক্যু, সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভুয়া প্রচারণা, গার্মেন্টসে অস্থিরতা, পাহাড়ে অশান্তিসহ নানা অপপ্রচার চালালে সব দল ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করে। কিন্তু জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন এবং সংস্কার ইস্যুতে আলোচনা শুরু হওয়ার পর হঠাৎ করে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন এবং ছাত্রদের দল এনসিপি ‘পিআর পদ্ধতির নির্বাচন’ এবং ‘সংস্কারের পর নির্বাচন’ দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠে। ফলে গণ-অভ্যুত্থানের রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ দেখা দেয়।
জানতে চাইলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় একাধিক দিন অংশ নেয়া আম-জনতার দলের সিনিয়র নেতা তারেক রহমান বলেন, মূলত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ শুরু হলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। তারা এনসিপির এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। একদিকে কমিশন যতদিন থাকবে দায়িত্বপ্রাপ্তরা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। সরকারি বাসা-গাড়ি, বেতন ভাতা পাবেন। এ জন্য আলোচনা দীর্ঘমেয়াদি করছেন। অন্যদিকে, এনসিপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় এনসিপি নেতারা যে প্রস্তাব দেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সেটিকে কেন্দ্র করে আলোচনা এগিয়ে নেয়। মূলত কমিশন দীর্ঘদিন থেকে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোকে এনসিপির দাবি মেনে নেয়ার চেষ্টা করছে। এনসিপির প্রস্তাবে রাজি না হওয়া পর্যন্ত আলোচনা চলতেই থাকে। এনসিপির দাবি মেনে নিতে অন্যান্য দলকে ম্যানেজ করতে চায়।
জুলাই আন্দোলন ছিল কার্যত সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার ইস্যুতে। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরে আবু সাঈদ পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়ে শহীদ হওয়ার পর শেখ হাসিনার পতনের এক দফার আন্দোলন শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে আন্দোলন দমাতে হাসিনা গং বেপরোয়া হয়ে উঠায় বিএনপি-জামায়াতসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল মাঠে নামে। ওই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা। সংস্কার, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (পিআর) নির্বাচন, সংসদের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট এমন ইস্যু ছিল না। শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিলেও কৃষক, শ্রমিক, রিকশাচালক, মুটে-মজুর, শিক্ষক সমাজসহ বিভিন্ন পেশাজীবী আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করে। ৫ আগস্ট হাসিনা পালানোর পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফ্রান্স থেকে এসে প্রধান উপদেষ্টার শপথ গ্রহণ করেন। উপদেষ্টা পরিষদে যাদের নেয়া হয় তাদের বেশির ভাগই বিদেশি নাগরিক, এনজিও কর্মকর্তা এবং এদের দু’-একজন ছাড়া কারোই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ ছিল না। পশ্চিমাদের সহায়তায় এরা অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসেন। অতঃপর সংস্কার, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন, সংসদের নারী আসনে সরাসরি ভোটÑ ইত্যাদি ইস্যু সামনে এনে জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নির্বাচনকে অনিশ্চিত করে তোলে। সংস্কার কমিশনে আটকে থাকা সংস্কার ইস্যু নিয়ে অভ্যুত্থানের স্টেকহোল্ডারদের বিরোধ দিল্লিতে পলাতক শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে উজ্জীবিত করছে। আগামী সংসদে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে দিল্লির এজেন্ডাÑ পিআর পদ্ধতির নির্বাচন বাস্তবায়নে জামায়াত-এনসিপির ঐক্য নির্বাচন পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করে তোলে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় এনসিপি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালনা করছে। ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ দেয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত দলটি অন্তর্বর্তী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আওয়ামী লীগের মতো বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচারণায় চালাচ্ছে। এতে উজ্জীবিত হয়ে আওয়ামী লীগ সারাদেশে হরতাল কর্মসূচি দেয়ার মতো স্পর্ধা দেখাচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পদপদবি দখল করা সুবিধাভোগীরা কি নির্বাচন বিলম্বিত করে আওয়ামী লীগকে দেশে ফেরাতে চায়?
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তিদের সম্পর্কে সাংবাদিক এম এ আজিজ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে ১৭ জন বিদেশি নাগরিক। এদের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। ড. ইউনূসও দুটি দেশের নাগরিক এবং তিনি প্রধান উপদেষ্টার পদে বসে ব্যবসায়ীর মতোই নিজের সুবিধা আদায় করে ব্যবসা করছেন। অন্যদিকে, এনসিপি যারা গঠন করেছেন সেই ছাত্ররা নির্বাচন হলে একটি আসনও পাবে না। ফলে নির্বাচন বিলম্বিত করতে নানা কা- করা হচ্ছে।
জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার গঠন করার পর জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নির্বাচন দেয়ার বদলে বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তিনি প্রায় ১১টি সেক্টরে সংস্কারের জন্য কমিশন গঠন করেন। কমিশনগুলো রিপোর্ট দেয়ার আগেই গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে সাত সদস্যের ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ গঠন করা হয়। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান এবং দীর্ঘ তিন দশক থেকে আমেরিকায় বসবাসকারী প্রফেসর ড. আলী রীয়াজকে এই কমিশনের সহসভাপতি এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফররাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামানকে সদস্য করা হয়। এ কমিশন ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এই কমিশন কাজ শুরু করে।
প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিতে এ কমিশন সংস্কারের ১৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ নিয়ে ছক আকারে পাঠায় এবং নেয়। এরপর দলগুলোর সঙ্গে এ কমিশনের আলোচনা শুরু করে। ২০ মার্চ থেকে শুরু হওয়া প্রথম ধাপের আলোচনা চলে ১৯ মে পর্যন্ত। অতঃপর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গত ২ জুন দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু করে। গতকাল ছিল সংলাপের ১৫তম দিন। আলোচনায় অংশ নেয়া নেতাদের বেশির ভাগই অপরিচিত এবং জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। নির্বাচন করলে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হতে পারবেন নাÑ এমন নেতাদের সংস্কার সংলাপে গুরুত্ব দিয়ে কালক্ষেপণ চলছে। ছয় বছর আগে গণভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে হাসিনার সংলাপের মতো। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার গণভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপের কথা মনে আছে? ওই বছরের নভেম্বর মাসে আয়োজিত সংলাপে দেড়শ’ দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ওই সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন কি খেতে পছন্দ করেন তা গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ খবরে পরিণত হয়েছিল। বর্তমানের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছিলেন, ‘সংলাপে আলোচনার চেয়ে খানাপিনা বেশি হয়’।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে অংশগ্রহণ করেছেন এমন কয়েকজন নেতা জানান, দিনের পর দিন ধরে সংলাপে তারা বিরক্ত। তবে সংলাপে সুযোগ পাওয়ায় তারা খুশি। কিন্তু তারা মনে করেন, এমন সংলাপ জাতির কোনো উপকারে আসবে না; বরং সংলাপ দীর্ঘমেয়াদি করা, এনসিপিকে প্রতিষ্ঠিত করাই কমিশনের নেপথ্যের এজেন্ডা। হঠাৎ করে পিআর পদ্ধতি আলোচনায় এনে বিএনপিকে ‘সাইজ’ দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়নে জামায়াত-এনসিপি-ইসলামী আন্দোলন ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক প্রচার শুরু হয়েছে। হাসিনার পালানোর পর থেকে ভারত সারাবিশ্বে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছেÑ এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে। অতঃপর যুক্তরাষ্ট্রের ‘জামায়াত মডারেট ইসলামী দল’ সার্টিফিকেট নিয়ে জামায়াত-শিবির ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালাচ্ছে। জনগণের মধ্যে তেমন সাড়া ফেলতে না পারলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় জামায়াত ব্যাপক প্রচারণায় রয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশ ‘মৌলবাদের উত্থান’ ঘটছেÑ এমন খবর প্রচার করছে। বিশেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশে বিএনপিকে বাইরে রেখে অন্য দলগুলোকে আমন্ত্রণ এবং একই স্থানে জামায়াতের সমাবেশে বিএনপিকে বাদ দিয়ে অন্য দলগুলোকে একত্রিত করার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এটিকে মৌলবাদের উত্থান প্রচার করছে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে এমন প্রচারণা চলতেই থাকবে। অথচ সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক দেশ। নির্বাচন বিলম্ব করে এমন প্রচারণা উসকে দেয়ার মাধ্যমে কী দেশের লিবারেল ডেমোক্রেটিক দেশের পরিচিতির ব্র্যান্ডিং চেঞ্জ করার অপচেষ্টা চলছে?
জামায়াতের প্রচারণা দেখে প্রবীণ রাজনীতিক এবং চিন্তক বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচারণা দেখে মনে হচ্ছে বর্তমানে বিএনপিই একমাত্র প্রগতিশীল দল। ছাত্ররা নতুন দল গঠন করে রাজা-বাদশাহের মতো কথাবার্তা বলছে। জামায়াত কিছু সিট পেলেও সরকার গঠনের অবস্থা হবে না। তারপরও তারা এমন প্রচারণা চালাচ্ছে যে, দেশ মৌলবাদীর দিকে ধাবিত হচ্ছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের আলোচনার চিত্র তুলে ধরে আম-জনতা দলের তারেক রহমান বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি থেকে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন নিয়ে দাবি তোলা হয়। আমি দাঁড়িয়ে বললাম, সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সংসদে অর্ধশত নারী আসনে নারীরা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচিত হন। আর পুরুষ জনগণের সারাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়। এখন আপনারা (জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি) দাবি করছে, নারী আসনে সারাসরি ভোট হবে। কিন্তু পুরুষ আসনে পিআর পদ্ধতির ভোট হতে হবে। তাহলে নারীদের সারাসরি প্রার্থী করে নির্বাচন এবং পুরুষদের আগের সংরক্ষিত আসনের মতো পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চাচ্ছেন। আবার নারীদের পর্দাও দাবি করছেন। আপনারা আসলে কী চাচ্ছেন? আমার প্রশ্ন শুনে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চাওয়া দলগুলোর নেতারা একের অন্যের মুখের দিকে চাওয়াচাওয়ি করেন। এ সময় সভাপতি ড. আলী রীয়াজ আমাকে বসার অনুরোধ করে তাদের রক্ষা করেন।
সিপিরি উপদেষ্টাম-লীর সদস্য মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, জামায়াত প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অনেক কিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে। বিশাল সমাবেশ করছে। জামায়াতকে নিয়ে আলোচনা করতে হবেÑ জাতির জন্য এটি ট্র্যাজেডি। দ্রুত নির্বাচন না করা হলে দেশকে চরম মূল্য দিতে হবে। অথচ সংলাপের নামে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দিনের পর দিন সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।