Image description

আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে ২০২৪ সালের ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা সদরে পুলিশের হাতে আটক হয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন আসাদুল হক (২৫) নামের এক লেপ-তোশক দোকানের কর্মচারী। সেই ঘটনার স্মৃতি মনে পড়লে এখনও কেঁদে ফেলেন তিনি।

আসাদুল নেত্রকোনার মদন উপজেলার হাজরাগাতি গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে। তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে নান্দাইল বাজারে একটি লেপ-তোশকের দোকানে কাজ করছিলেন।

কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ছিল না।

ওই দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে আসাদুল জানান, ‘সে দিন অনেক ছাত্র মিছিলে অংশ নিচ্ছিল। রোদের মধ্যে তারা পানি খুঁজছিল। আমি শুধু একজন ছাত্রকে আমার দোকান থেকে পানি দিছিলাম।

 
এরপর ওসি আমারে দৌড়াইয়া ধইরা মাটিতে ফালাইয়া পিটাইছে। আমি কইছিলাম, আমি নিরীহ, দোহানে কাম করি, তাও শুনলো না। থানায় নিয়ে যা পিটাইছে, মনে অইলে আজও কান্দন আসে। পরে জেলে পাঠাইছে।
 
হাসিনা সরকার ক্ষমতা ছাড়ার কয়েকদিন পর ছাড়া পাই। এখনো ঠিকমতো সোজা হয়ে দাঁড়াইতে পারি না।’

কারাগারে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আসাদুল বলেন, ‘ওই সময়টার কথা আমি কোনোদিন ভুলবো না। মনে হইছিল, আমি হয়ত বাঁচবো না।

থানায় নেওয়ার পরও শুনছিলাম, আমাকে গুলি করে মাইরা ফেলার প্ল্যান করছে।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, সে দিন নান্দাইল বাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে ছাত্ররা মিছিল করছিল। বিএনপির মিছিলও একই সময়ে বাজার এলাকায় চলছিল। দুপুরের দিকে ওই মিছিল ভূমি অফিসের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছুড়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

ছাত্রদের একটি দল ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফের একটি মিছিল বের হয়। তখন তীব্র গরমে ক্লান্ত অনেক ছাত্র পানি খেতে আশপাশের দোকানে যায়। সেই সময় আসাদুল হক নামের ওই যুবক একজন ছাত্রকে পানি দেন। ঘটনাটি দূর থেকে দেখে তৎকালীন নান্দাইল থানার ওসি আব্দুল মজিদ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্সসহ এসে তাকে ধরে মারধর করে এবং থানায় নিয়ে যায়। পরে তার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ এনে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।