
রংপুর নগরীর জাহাজ কোম্পানি থেকে সাতমাথা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দের কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বড় বড় গর্তে প্রতিদিনই ছোট বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন যাত্রীরা। সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এলাকাবাসী। এই অবস্থায় সিটি কর্পোরেশনকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে গায়েবানা জানাজা পড়ে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
রোববার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নগরীর সাতমাথা রেল গেট এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এতে অংশ নেন সাতমাথার বাসিন্দা রাজিমুজ্জামান হৃদয়, প্রান্ত হোসেন, মো. নাঈম, সাকিব হোসেন, মোহাম্মদ হাসান, হোসাইন, সৈকত ইসলাম, তানবীর ইসলাম, নাঈম হক, মাহিম প্রমুখ। প্রতীবাদস্বরূপ গায়েবানা জানাজা পরিচালনা করেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রাহুল ইসলাম। তবে যুবক শ্রেণির অংশগ্রহণ বেশি লক্ষ্য করা যায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রশস্ত এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। কোথাও কোথাও গর্তে জমে থাকা পানি দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি করছে। আবার কোথাও ধুলার ঝড় অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
রিকশা, অটোরিকশা ও ভ্যানচালকরা বলছেন, প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে, আর যানবাহনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে বারবার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সিটি কর্পোরেশন শহরের মধ্যে থাকলেও রাস্তার অবস্থা দেখে মনে হয় ইউনিয়নের ভাঙা রাস্তা দিয়ে চলছি। এ নিয়ে বহুবার সিটি কর্পোরেশনকে বলার পরেও তারা কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে মানুষজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন।
অটোরিকশা চালক জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, এই রাস্তা বহুদিন ধরে ভাঙা। গাড়ি প্রতিনিয়ত গর্তে পড়ে ঝাঁকুনি খায়, মনে হয় উল্টে যাবে। গাড়ির ক্ষতি হয় প্রতিদিন।
একই ধরনের অভিযোগ করেন ভ্যানচালক শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘প্রায়ই ভ্যানের বিয়ারিং, ঝালাই ভেঙে যায়। যাত্রী পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। গর্ত শেষ না হতেই শুরু হয় আরেকটা।’
আশরাফুল ইসলাম নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘ছেলে-মেয়েকে স্কুলে আনা-নেওয়া করি এই রাস্তা দিয়ে। প্রতিদিন ভয় লাগে। কখন বিপদে পড়ি।’
গায়েবানা জানাজায় অংশ নেওয়া রাজিমুজ্জামান হৃদয় বলেন, ‘নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের কোনো মাথাব্যথা নেই। নাগরিক দুর্ভোগে অতিষ্ঠ মানুষজন। বারবার বলার পরেও সংস্কার করা হচ্ছে না। যে কারণে আমরা এই প্রতিবাদ জানিয়েছি। দ্রুত সংস্কার না হলে নাগরিক ভোগান্তি আরও চরমে পৌঁছাবে।’
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা বলেন, ‘পুরো সিটি এলাকায় প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পাকা সড়ক ভাঙাচোরা হয়ে গেছে। এজন্য ২১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার একটি প্রকল্প স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।’