অর্থনীতিবিদ ও লেখক ড. মাহবুব উল্লাহ্ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে ২০০৫ থেকে ২০১১ সাল এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ১৯৭৬ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত অধ্যাপনা করেছেন। পাশাপাশি ১৯৯৩-৯৭ মেয়াদে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য এবং ২০০৩-২০০৬ মেয়াদে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর, ১৯৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৯০ সালে ভারতের জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। মাহবুব উল্লাহ্র জন্ম ১৯৪৫ সালে, নোয়াখালীতে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সমকালের সহকারী সম্পাদক সাইফুর রহমান তপন।
সমকাল: অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হলো। এ বিষয়ে আপনার সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা জানতে চাই।
মাহবুব উল্লাহ্: প্রথম কথা হলো, যখনই একটা সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হয়, অথবা তিন মাস যায়, আপনারা সাংবাদিকরা ওই সরকার ওই সময়ে কী কী কাজ করল, কিংবা তার কাজকর্মের গতি-প্রকৃতি মূল্যায়ন করার কাজটি করে থাকেন। কিন্তু সব সরকার তো এক রকম নয়। দেশে এখন যে সরকার আছে, যাকে অন্তর্বর্তী সরকার বলা হচ্ছে, তার বৈধতা এসেছে ৫ আগস্ট সংঘটিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান থেকে। এ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্য উপদেষ্টাদের নাম ঘোষণার পর জনগণ তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলেনি। কাজেই আমরা ধরে নেব, তাদের বৈধতার উৎস গণঅভ্যুত্থান। এই যে একটা কঠিন সময়ে তারা দায়িত্ব নিলেন, তখন সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, দেশের সব প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত অবস্থায় আছে। পুলিশ, আমলাতন্ত্র, বিচার বিভাগ– সবখানেই আবর্জনা ছিল। একটা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে না চললে, যথেষ্ট দক্ষ না হলে সে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়ে যায়। আমরা এখন জানতে পারছি, বিগত সরকার কত ধরনের সর্বনাশ এ দেশটার করে গেছে। তা ছাড়া লুটতরাজ, চুরি-দুর্নীতি, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার, এগুলো আমরা এখন সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে দেখছি। এ রকম একটা প্রেক্ষাপটে বর্তমান সরকারকে কাজ করতে হচ্ছে। ফলে মাত্র তিন মাসে তার মূল্যায়ন সঠিকভাবে করা যায় না।
সমকাল: তার পরও তো প্রত্যাশা-প্রাপ্তির একট হিসাব জানার আগ্রহ জনগণের থাকবে।
মাহবুব উল্লাহ্: হ্যাঁ, তবে মাপকাঠিটা ঠিক হতে হবে। নইলে সরকারের প্রতি সুবিচার হয় না। এ সরকারের প্রথম যে কাজটা বেশ চোখে পড়েছে তা হলো, গণহত্যার দায়ে বিগত সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার প্রয়াস। ইতোমধ্যে এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বেশ কিছুদূর এগিয়েছে। যে পুলিশ বাহিনী পালিয়ে গিয়েছিল, সেটাকেও কিছুটা কর্মক্ষম করার জন্য কাজ হয়েছে এবং সেটা অব্যাহত। বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি ও নেতা অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে একটা প্রশ্নের উত্তর আমরা পাইনি; সেটা হলো– ৫ আগস্টের পর বলা হয়েছিল, বিগত সরকারের সঙ্গে যুক্ত এবং আওয়ামী লীগ নেতা– এমন ছয়শর বেশি লোক ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কোন ক্যান্টনমেন্ট, সেটা আমরা জানি না। কিন্তু তাদের মধ্যে ৫-৬ জন বাদে বাকিরা নাকি নিজ উদ্যোগে চলে গেছেন। তারা চলে গেলেন কোথায়? নিজ বাসস্থানে, না ভারতে? এটাকে কেন্দ্র করে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে বর্তমান সরকার সম্পর্কেও প্রশ্ন উঠেছে। তারা ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে প্রকৃত অর্থে পদক্ষেপ নিতে কতটা আন্তরিক?
সমকাল: ইতোমধ্যে নির্বাচনের দাবিও তো উঠতে শুরু করেছে?
মাহবুব উল্লাহ্: নির্বাচনের দাবি বিএনপি করেছে। অন্যান্য দলের মধ্যে জামায়াত বলেছে, এ সরকার যেভাবে কাজ করছে তার সঙ্গে তারা থাকবে। আর বিএনপি মনে করে, নির্বাচন পিছিয়ে গেলে বা বিলম্বিত হলে হয়তো দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হবে। এতে স্থিতিশীলতার সমস্যা হতে পারে। লন্ডনভিত্তিক দ্য ইকোনমিস্ট সাময়িকীর মূল্যায়ন– এ সরকার অনেকটাই স্থিতিশীলতা নিয়ে এসেছে। এর পর কী হবে, তারা তা জানে না। এটাকে আমরা বলতে পারি, আনসার্টেনিটি বা অনিশ্চয়তা। অনিশ্চয়তা নিয়ে একটা দেশ এগোতে পারে না। তাই তা কাটাতে এ সরকারকে প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে বলে আমি মনে করি।
সমকাল: দ্রব্যমূল্যও তো বাড়ছে।
মাহবুব উল্লাহ্: বলছি, খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের জন্য এটা একটা কঠিন পরিস্থিতি। এটা অব্যাহত থাকলে বহু লোকের জীবন নির্বাহই কঠিন হয়ে পড়বে। তবে মূল্যস্ফীতির সমস্যা এ সরকার তৈরি করেনি। এটা শুরু হয় বিগত সরকারের সময়ে। অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, কর-শুল্ক কমিয়েও তারা দ্রব্যমূল্য কমাতে পারছেন না। মূল্যস্ফীতি তখনই ঘটে যখন বাজারে পণ্যের তুলনায় টাকার প্রবাহ অনেক বেশি হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনার আমলে যেসব মেগা প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর ব্যাপারে সবাই মোটামুটি একমত– যত টাকা এগুলোর পেছনে ব্যয় হয়েছে, এর এক-তৃতীয়াংশ দিয়েই প্রজেক্টগুলো বাস্তবায়ন করা যেত। তার মানে, দুই-তৃতীয়াংশ অর্থ চলে গেছে কিছু অবাঞ্ছিত লোকের পকেটে এবং এভাবে প্রজেক্ট করার ফলে প্রচুর অপ্রয়োজনীয় অর্থ বাজারে ঢুকে গেছে। এগুলো যে ধরনের প্রজেক্ট সেগুলোর আর্থিক রিটার্ন আসে অনেক দেরিতে। ফলে প্রজেক্ট ক্রয়ের টাকা চলে এসেছে বাজারে। তবে এগুলোর সুফল হিসেবে যে সম্পদ উৎপাদন হওয়ার কথা, তা হয়নি। মূল্যস্ফীতি বাড়ার পেছনে এটাও একটা বড় কারণ। এখানে আরেকটা ঘটনা ঘটেছে। প্রজেক্টগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য সরকার দেশীয় উৎস থেকে যখন ঋণ নিতে গেছে, তখন ব্যাংকগুলো টাকা দিতে পারেনি। তাই নতুন করে টাকা ছাপানো হয়েছে, যা মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আমার মনে হয়, অন্তত অদূর ভবিষ্যতে এ মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভবপর হবে না।
সমকাল: এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে কি তা সমাজে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করবে না?
মাহবুব উল্লাহ্: মূল্যস্ফীতি সমস্যার সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছে সাধারণ শ্রমজীবী, গরিব মানুষ। গরিব মানুষ একটা কঠিন পরিস্থিতিতে আছে। ক্ষুধার এ সমস্যা শেষ পর্যন্ত কোথায় যাবে, এখনই বলা যায় না। তবে মানবিক দিক থেকেও যদি বিচার করি, সাধারণ মানুষের অবস্থা কিন্তু ত্রাহি হয়ে আছে– এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
সমকাল: সরকারের সংস্কার কমিশনগুলোর কার্যক্রম নিয়ে বেশ আলোচনা আছে। বিশেষ করে সংবিধান নিয়ে নাগরিক সমাজে বিতর্কও দেখা যাচ্ছে। কেউ বলছেন, সংশোধন করা যায়। কেউ বলছেন, নতুন করে সংবিধান লিখতে হবে। আপনার অবস্থান কী?
মাহবুব উল্লাহ্: ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করি, আমাদের সংবিধান যেটা আছে, তা আর ব্যবহারযোগ্য নয়। নানা সংশোধনীর ফলে এটার যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তাতে নিছক সংস্কার করে এটাকে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেওয়া যাবে না।
সমকাল: আপনার পরামর্শ কী?
মাহবুব উল্লাহ্: আমি মনে করি, সংবিধান সংস্কার কমিশনের বিভিন্ন সুধীজন ও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন একটা যুগোপযোগী সংবিধানের খসড়া তৈরি করা উচিত। সেখানে সংসদের দুটি হাউস, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে প্রস্তাব থাকতে পারে। ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে আমাদের এমপিরা প্রাণ খুলে কথা বলতে পারেন না। এটার পরিবর্তন দরকার। তবে পরিবর্তনটা এমন হতে পারবে না, যাতে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। সরকারের বিরুদ্ধে যখন অনাস্থা আসে, তখন সরকারি সদস্যরা তার পক্ষে কথা বলতে পারবেন না; সব ধরনের অর্থবিলের বিরুদ্ধে সরকারি দলের এমপিরা কথা বলতে পারবেন না। বাকি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ যত বিষয় আছে সেগুলোতে সরকারি দলের এমপিরা কথা বলতে পারবেন এবং প্রস্তাব আনতে পারবেন। সংসদীয় কমিটিগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে; যেমন বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় নিয়োগের ক্ষেত্রে সংসদীয় কমিটিগুলোর হিয়ারিং সিস্টেম চালু করতে হবে, আমেরিকায় যেমন দেখা যায়। আমার প্রস্তাব হলো, কমিশন এ দলিলটা তৈরির পর পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের হাতে তুলে দেবে। নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে যারা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন তারা একই সঙ্গে সংবিধান পাসের জন্য গণপরিষদ সদস্য এবং আইন প্রণয়নের জন্য সংসদ সদস্য হবেন। সেই গণপরিষদ পর্যাপ্ত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ওই খসড়া সংবিধান পাস করবে। পাস করার আগে তারা প্রয়োজন মনে করলে সেই খসড়ায় কিছু পরিবর্তন আনতে পারবে, যেহেতু নির্বাচিত সদস্য হিসেবে তাদের বৈধতা বেশি।
সমকাল: আপনি যে খসড়া সংবিধানের কথা বললেন, সে ব্যাপারে দেশের বর্তমানে বৃহত্তম দল বিএনপির অবস্থান কী হতে পারে বলে মনে করেন?
মাহবুব উল্লাহ্: অন্তর্বর্তী সরকার যদি দীর্ঘকাল বিলম্ব না করে এমন একটা দলিল তৈরি করে এবং তারা যদি নিজের থেকে বলে না দেয়– এটাই চূড়ান্ত সংবিধান, তাহলে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া আমরা দেখব। তা না হলে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ওই দলিল গ্রহণযোগ্য হবে না। এ সরকার নিজেরাই বলেছে, তারা এসেছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সহজ করা ও সহায়তা দেওয়ার জন্য। সংবিধান তৈরির ক্ষেত্রেও সেই সহায়তার কথাই আমি বলছি; অন্য কিছু নয়।
সমকাল: এখানে তো দীর্ঘদিন বিএনপি ও আওয়ামী লীগকেই সর্বাধিক ভোট পেতে দেখেছি। আওয়ামী লীগের এখন সাংগঠনিক কাঠামো বিপর্যস্ত; তবে তার কর্মী-সমর্থকরা বহাল আছেন। তাদের দিক থেকে কি কোনো বাধা আসতে পারে নতুন সংবিধান তৈরির প্রশ্নে?
মাহবুব উল্লাহ্: রাজনীতির যে গতিধারা, সেটা কীভাবে বিকশিত হবে তা আজকে বসে বলা যাবে না। অনেকে মনে করেন, যেভাবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছে, সেটা অভূতপূর্ব একটা ঘটনা। বাংলাদেশ তো বটেই, অন্য কোনো দেশে এর নজির আছে কিনা সন্দেহ। এ দেশে গণঅভ্যুত্থান আগেও বহুবার হয়েছে; কোনো গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশ বাহিনী পালিয়ে যায়নি। অল্প কয়েক দিনের মধ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। আমলাতন্ত্রের মধ্যেও অনেকে আছেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে এখনও সরে আছেন। এ রকম অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো একটা দলের পক্ষে সহজ নয়। দুর্ভাগ্যের বিষয়, এত এত অপরাধ করেও আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কোনো অনুশোচনা বা ক্ষমা প্রার্থনা নেই। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত তারা কী করতে পারে, না পারে।
সমকাল: আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বিএনপির বর্তমান অবস্থান কী বলে মনে করেন?
মাহবুব উল্লাহ্: বিএনপি গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের হাতে ভয়াবহ নির্যাতন ভোগ করেছে। গুম, খুন, পাইকারি জেল, মামলা-হামলা বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এসব অপরাধ ঘটেই চলেছিল এ সময়ে। বিএনপি এগুলো বলবে। বলাটাই সংগত। আবার বিভিন্ন মহল থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠলেও বিএনপি কিন্তু তাতে সায় দেয়নি। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের পরও বিএনপি এটাকে জোরালোভাবে সমর্থন করেনি। বিএনপি নেতারা বারবার বলছেন, আইনি পথে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে তারা নেই। তারা মনে করেন, জনগণ যদি মুক্ত ও স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার চর্চা করতে পারে, তাহলেই সেটা হয়ে যাবে। বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে অদূর ভবিষ্যতে কোনো সমঝোতারও সম্ভাবনা দেখছি না।
সমকাল: নির্বাচন কবে হতে পারে বলে আপনার ধারণা?
মাহবুব উল্লাহ্: সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। বর্তমান পুলিশ বাহিনী দিয়ে আপনি নির্বাচন করবেন? প্রশাসনে এখনও আওয়ামী লীগের লোকেরা বসে আছে। বলা হয়, নিয়োগকৃত জেলা প্রশাসকদের অধিকাংশ আওয়ামী লীগের। এরাই রিটার্নিং কর্মকর্তা হবেন। এদের দিয়ে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব? নির্বাচন চাইলেই হবে না। নির্বাচনটা সুষ্ঠু-স্বাভাবিক যাতে হয় সেটার জন্য কিছু সংস্কার লাগবেই। সেদিক থেকে বিচার করলে সরকারের তো মাত্র তিন মাস গেল। আমি আগেও বলেছি, দেড় বছরের মধ্যে আমরা নির্বাচন পাব। অর্থাৎ নির্বাচনটা হতে পারে ২০২৫ সালের শেষদিকে।
সমকাল: গণঅভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে বলে বিশেষত ছাত্রনেতারা বলছেন।
মাহবুব উল্লাহ্: গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে আজ পর্যন্ত যত সাক্ষাৎকার আমি দিয়েছি, যত কথা বলেছি, সবখানেই আমি অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর ঐক্য ধরে রাখার ওপর জোর দিয়েছি। এ সাবধানবাণীও আমি দিয়েছি, ছোট-বড় বহু রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত শক্তিতেই হয়েছে গণঅভ্যুত্থান। এর সুফল ঘরে তুলতে হলে শুধু ১০০ দিন নয়; অন্তত আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এদের ঐক্যটা ধরে রাখতে হবে। তা না হলে বিপদ। ভুল বোঝাবুঝি যা হচ্ছে সেগুলো অনতিবিলম্বে আলাপ-আলোচনার মধ্যমে ফয়সালা করার কথাও বলেছি।
সমকাল: ধন্যবাদ আপনাকে সময় দেওয়ার জন্য।
মাহবুব উল্লাহ্: ধন্যবাদ।
সমকাল
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন