‘সফল হবো নাকি ব্যর্থ হবো, এই ভেবে আন্দোলন-সংগ্রাম করা যায় না’
23 September 2019, Monday
কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ফজলুর রহমান খোকন
দীর্ঘ সাতাশ বছর পর কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করেছে বিএনপির ভ্যানগার্ড বলে পরিচিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এতে কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ফজলুর রহমান খোকন। বগুড়ায় জন্ম নেয়া খোকন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৩-০৪ সেশনের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ২০১০ সালে তিনি স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। এর আগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিনি গণশিক্ষা বিষয়ক সহ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে ছাত্র রাজনীতি করে আসা খোকনের বিরুদ্ধে বর্তমানে কুড়িটিরও বেশি মামলা রয়েছে। সংগঠনের দায়িত্ব নেয়ার পর ছাত্রদলের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা, দেশনেত্রীর মুক্তি, ক্যাম্পাসগুলোর সংকট নিয়ে আরটিভির সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার সিয়াম সারোয়ার জামিল।
আরটিভি: ভোটের মাধ্যমে ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এখন কীভাবে সংগঠনকে এগিয়ে নেবেন?
ফজলুর রহমান খোকন: এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অধিকাংশ ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের সহাবস্থান নেই। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও নেই। আমার প্রথম পদক্ষেপ হবে, ক্যাম্পাসগুলোতে সহাবস্থান নিশ্চিতে কাজ করা। এজন্য প্রশাসনের সঙ্গে সহাবস্থানের বিষয়ে আলাপ আলোচনা করবো আমরা। পরে প্রশাসনের আচরণ দেখে নিজেরা আলোচনা করে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবো।
আরটিভি: দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম কোন কাজে হাত দেবেন?
ফজলুর রহমান খোকন: দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বর্তমান সরকার অন্যায়ভাবে জেলে আটকে রেখেছে। দেশে এই মুহূর্তে ভোটাধিকার নেই। গণতন্ত্র নেই। বাক স্বাধীনতা নেই। এই অবস্থায় আমাদের একমাত্র ও প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, দেশনেত্রীকে জেল থেকে বের করা আনা। পাশাপাশি ছাত্রদের অধিকার রক্ষায়ও আমরা কাজ করে যাব।
আরটিভি: ছাত্রদল একটি ছাত্রদের সংগঠন। তাহলে প্রধান লক্ষ্য খালেদা জিয়ার মুক্তি কেন? ছাত্রসমাজের অধিকার রক্ষা করাটাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত না?
ফজলুর রহমান খোকন: দেখুন, দেশে ভোটাধিকার নেই। গণতন্ত্র নেই। বাকস্বাধীনতা নেই। দেশনেত্রী জেলে। একমাত্র বেগম জিয়ার নেতৃত্বেই দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তাই নেত্রীকে জেল থেকে মুক্ত করাই ছাত্রদলের প্রধান লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নেত্রীকে মুক্ত করে তার নেতৃত্বে গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, বাকস্বাধীনতা, ক্যাম্পাসগুলোতে সহাবস্থান ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
আরটিভি: বেগম খালেদা জিয়া ২ বছর ধরে কারাগারে। অভিযোগ আছে, তার মুক্তির আন্দোলন পূর্বের ছাত্রদল নেতারা সেভাবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেননি। আপনি কীভাবে সফল হবেন?
ফজলুর রহমান খোকন: স্বীকার করতেই হবে যে, নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে ছাত্রদলের ব্যর্থতা আছে। সেভাবে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারিনি আমরা। তবে দায়িত্ব যখন এবার নিয়েছি, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেবো আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নেত্রীকে জেল থেকে মুক্ত করার। এবং ইনশাল্লাহ আমরা সেটা পারবো।
আরটিভি: দেশের যে পরিস্থিতি এখন, তাতে কতটা সফল হওয়া সম্ভব বলে মনে হচ্ছে?
ফজলুর রহমান খোকন: দেখুন, এখানে মনে হবার কিছু নাই। সফল হবো নাকি ব্যর্থ হবো, এই ভেবে আন্দোলন-সংগ্রাম করা যায় না। দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্যই আমাদের সংগ্রাম। সেজন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলতে আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এই লক্ষ্যে ছাত্রদল কর্মীরা নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রত্যেকেই কাজ করছে। পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী এই বিষয়ে সহযোদ্ধাদের আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা আন্দোলন সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
আরটিভি: বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে কী ধরনের পরিকল্পনা নিয়েছেন?
ফজলুর রহমান খোকন: দেখুন, আমরা মাত্র কদিন হলো দায়িত্ব নিয়েছি। শিগগিরই আমরা দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিব। কর্মপরিকল্পনা ঠিক করবো। এরপরে শিগগিরই আপনাদের এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
আরটিভি: পূর্বের কমিটির কী কী ব্যর্থতা আছে বলে মনে করেন?
ফজলুর রহমান খোকন: সরকারের দমন পীড়নের কারণে পূর্বের কমিটির অনেক কর্মসূচি হয়তো সফলতা পায়নি। এগুলোকে ব্যর্থতা বলা উচিত হবে না। এই সময়কালে মিছিলে হামলা করা হয়েছে, গুলি করা হয়েছে, নেতা-কর্মীদের নামে শত শত মামলা হয়েছে। এতে ছাত্রদলের আন্দোলনের সফলতা কিছুটা ম্লান হয়েছে। এসব থেকে শিক্ষা নিয়ে অবশ্যই আমরা সামনে এগিয়ে যাব।
আরটিভি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন