যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় ফ্রাঙ্কলিন মার্শাল কলেজে অবস্থানকালে ১৯৯০ সালে মার্চের শুরুর দিকে খ্যাতিমান কাশ্মিরী আমেরিকান কবি আগা শহীদ আলী সাংবাদিক স্ট্যাসি চেসকে এই সাক্ষাকারটি দেন। তখন শহীদ আলী ৪১ বছরে পা রাখছিলেন এবং মধ্য নিউইয়র্কের হ্যামিল্টন কলেজে ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ক্যাফে রিভিউ ম্যাগাজিন থেকে জবানের জন্য বাংলায় তর্জমা করেছেন শোয়েব আব্দুল্লাহ।
স্ট্যাসি চেস: শোনা যায় আপনি নিজেকে (ট্রিপল-এক্সাইল) ‘তিন স্তরে নির্বাসিত’ বলে থাকেন। আসলে এটা বলতে আপনি কি বুঝাতে চান?
আগা শহীদ আলী: হ্যা, এটি আসলে আমার নিজের তৈরি একটি মিথ। সহজভাবে যদি বলি আমি কাশ্মির থেকে দিল্লি, দিল্লি থেকে পেনসিলভানিয়া এবং পেনসিলভানিয়া থেকে এরিজোনায় এসেছি। এবং এখন আমি এরিজোনাও ত্যাগ করতে যাচ্ছি। সুতরাং, আমি নিজেকে ‘বারবার নির্বাসিত’ হিসেবে দেখি। এরিজোনা ছাড়ার পর আপনি আমাকে তো ‘চৌঠা নির্বাসিত’ বলতে পারেন নাকি?
এমনকি আপনি যখন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাচ্ছেন,সেটাকেও নির্বাসন বলছেন?
শহীদ আলী: আমি যখন নিজেকে নির্বাসিত বলি; মানে আমি সম্পুর্ণ একটি নতুন ভৌগলিক পরিবেশকে বোঝাই। একটি সম্পুর্ণ নতুন স্পর্শকাতরতাকে বোঝাই যা আমার কবিতার মধ্যেও উপস্থিত থাকে। [দীর্ঘ বিরতি] আমি নির্বাসনকে এভাবেও ব্যবহার করি যে, ধরুন আপনি ভারতে থেকেও ইংরেজিতে লেখালেখি করেন। মানে আপনি কোন না কোনভাবে আপনার ভূমি থেকে নির্বাসিত। আমি জানি আমি হয়তো একটু রোমান্টিসাইজ করছি।
আপনি নিজেকে ‘প্রবাসী’ বলেছেন কোন কোন সময়। অবশ্য সেটা কোন লেখায় না, আমার সাথে নানা আলাপে। এই প্রবাস আসলে নির্বাসন থেকে কতটা আলাদা?
শহীদ আলী: এক্সপেট্রিয়েট বা প্রবাসী হলেন সেই ব্যক্তি যে স্বেচ্ছায় অন্য দেশে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হতে পারে সেটা পেশাগত বা ব্যক্তিগত কারণে। কিন্তু ‘এক্সাইল’বা নির্বাসন হচ্ছে যা রাষ্ট্র দ্বারা চাপিয়ে দেয়া হয় বা জোর করে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য করা হয়। আমি ‘এক্সাইল’ বা ‘নির্বাসনে বাধ্য করা’ পদটিই ব্যবহার করি যার পেছনে অবশ্য অনেক কারণ রয়েছে। আবার আমি মানসিকভাবেও নিজেকে নির্বাসিত মনে করি; ‘প্রবাসী’ মনে করি না।
তাহলে কি আপনি কাগজে কলমে ‘প্রবাসী’ এবং মানসিকভাবে ‘নির্বাসিত’?
শহীদ আলী: ঠিক, অনুভবের দিক থেকে আমি এমনটাই ভাবি। আর আমার বর্তমান অবস্থাও নির্বাসনের কাছাকাছি বটে।
এভাবে চিন্তা করলে প্রবাসী মানে দাড়ায় নিজভূমিরপ্রতি আনুগত্য অস্বীকার করা। সেটা কি আপনি অনুভব করেন?
শহীদ আলী: আমি কিছু অস্বীকার করেছি বলে মনে করি না। সাধারণতই এই দূরে থাকাটা আমার নিজেকে একজন ভারতীয় হিসেবে শাণিত করছে। যার ফলে আমেরিকাকেও আমি একইভাবে অনুভব করছি। কখনো মনে হয়; পুরো দুনিয়াটাই আমার কাছে নিজের ঘরের মত।
তার মানে আপনি বলছেন কিছু ক্ষেত্রে আপনার সব জায়গাকেই নিজের কাছে আপন মনে হয়। কখনো কি তার উল্টো ঘটেছে, কোন জায়গাকেই নিজের আপন মনে হচ্ছে না?
শহিদ আলী: যখন আমি মাঝেমাঝে একা থাকি, তখন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। কিন্তু যে সময়টা আমি মানুষের সাথে থাকি, আমি নিজের ঘরের স্বাদ অনুভব করতে থাকি। আমি মানুষের সাথে থাকতেই পছন্দ করি।
আর আমি যখন মানুষের সাথে থাকি, তখন আমার ভেতরের নাটকীয়তা বের হয়ে আসে, লজ্জা কমে যায়, ভেতরের অবাস্তব সব চিন্তা বের হয়ে আসে। এই বিষয়টা আমাকে ‘পারফর্ম’ করার সুযোগ দেয়। সেটা যে রকমই হোক না কেন। আমি আসলে মানুষকে আনন্দিত করতে ভালোবাসি এবং আনন্দিত হতেও।আমি তখন নিজেকে মেলে ধরতে থাকি। আচ্ছা এটা কি নির্লজ্জতা? (হাসি)
আপনার অন্যতম প্রিয় কবি গ্যালওয়ে কিনেল (Galway Kinnell) ক্রমাগতভাবে নিজের সাথে প্রকৃতির সখ্যতা নিয়ে ভাবছেন তার বিপরীতে আপনি কি মানুষের মাঝে আপনার অবস্থানকে অনুভব করেন?
শহীদ আলী: সত্যি বলতে গেলে প্রকৃতি আমাকে নিরস করে তোলে। আমি তার চেয়ে কোন একদিন এক শহরে ঘুরে বেড়াতে চাই। সেখানে হয়ত আমি কিছু বার, বইয়ের দোকান, রেস্টুরেন্ট, মানুষ দেখব, আর কল্পনায় দেখব নিউ ইয়র্কের প্রতিটি এপার্টমেন্ট জুড়ে চলছে যৌনতার বাহার। ম্যানহাটনেও আমি প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে চাই না। এর একটি কারণ হতে পারে আমি কাশ্মিরী এবং কাশ্মিরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের কারণে প্রকৃতি সবসময়ই আমাকে ঘিরে রাখে। কাশ্মিরকে আমি ভালবাসি। এবং এই কাশ্মির আমার রিদয়ে থাকার কারণে আলাদাভাবে আমাকে আর প্রকৃতির কাছে ছুটে যেতে হয় না। প্রকৃতিই আমার চারপাশে ঘিরে থাকে।
আপনি আপনার প্রথম সম্পুর্ণ সংগ্রহের নাম রেখেছেন ‘হাফ ইঞ্চ অব হিমালয়’, যার সাথে পর্বতের যোগাযোগ। এরমানে কি আগেও আপনি প্রকৃতি ঘেরাই ছিলেন?
শহীদ আলী: আমি যখন কাশ্মির নিয়ে ভাবি, তার জন্যে আলাদা করে প্রকৃতি নিয়ে ভাবতে হয় না। এটি আমার বেড়ে ওঠার সাথেই যুক্ত। তাই এটি আলাদা কোন ইস্যু না।
তাহলে কাশ্মীর নিয়ে চিন্তা করার সময় আপনি আসলে কী চিন্তা করেন?
শহীদ আলী: আমি যখন কাশ্মির নিয়ে ভাবি আমি আমার বন্ধুদের ভাবি, ভাবনায় আনি যেখানে আমরা নিয়মিত হাটতে যেতাম। আমি পাহাড় নিয়ে চিন্তা করি এবং সে জায়গার কথা ভাবি যেখানে বসে সুর্য্যের আলো উপভোগ করতাম আমরা। আমি দুরান্তের দিকে পা বাড়াই যা আবেগের সাথে মিলে মিশে একাকার এবং অবশ্যই তার অনেক কিছুই আমার কবিতায় ফুটে উঠেছে নানা সময়ে। তবে আপনি লক্ষ্য করবেন আমার কবিতায় প্রকৃতিকে কখনোই আমি প্রকৃতির মতে করে ভাবি না।
এই মুহুর্তে তেমন কবিতা মনে করতে পারছি না।
শহীদ আলী: সেটা না। আমি তো উইলিয়াম ওর্ডস ওয়াথ নই। আর আমি ড্যাফোডিল ফুল নিয়ে তার মত কবিতাও লিখি না।আমি তাকে ছোট করার জন্যে বলছি না, সে খুব বিখ্যাত কবি, মহান কবি।
আমি ‘টিনটার্ন অ্যাব্বে’ কবিতাটি বেশ পছন্দ করি। ‘ইন্টিমেশন’ আর প্রিলুড’ কবিতা দুটির কিছু অংশও ভাল লাগে আমার। কিন্তু তাই বলে আমি অবশ্যই ডেফোডিল কবিতার পক্ষ নিতে পারব না; সেটা যে যাই বলুক। আমার কাছে ডেফোডিল মানে সর্বোচ্চ হলুদ রঙের কিছু একটা যাদের মাথা দুলছে সবসময়। এর বেশি কিছু না।
আমি সহমত। সেটা অবশ্য আমাকেও তেমন ছুয়ে যায়নি। অবশ্য ডেফোডিল একটা বিস্তৃত চিত্র তুলে এনেছে কিন্তু…
শহীদ আলী: সেসব কে আজ আর আলাপ করে!
আপনার পিতামাতা কয়টি ভাষা জানতেন?
শহীদ আলী: আমার পিতামাতা ইংরেজিতে কথা বলতেন; তারা উর্দু এবং কাশ্মিরিও জানতো। এবং তিনটি ভাষায়ই তারা খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করত।
আপনি কোন ভাষা শুনে বড় হয়েছেন?
শহীদ আলী: তিনটি ভাষাই।
আপনার দখল আছে তিনটিতেই?
শহীদ আলী: তাহলে বলতে হয় আমার কাশ্মীরি খুব ভালো নয়। তবে আমি উর্দু আর ইংরেজিতে বেশ ভাল।
আপনি সব সময় ইংরেজিতেই কবিতা লেখেন?
শহীদ আলী: হ্যা সব সময়।
ইংরেজিতেই কেন?
শহীদ আলী: এটা আসলে এমনিতেই হয়ে গিয়েছিল। কিছু কারণে আমি উর্দুতে কবিতা লিখতে চাইতাম সবসময়। তবে আমি প্রথমে ক্যাথলিক স্কুলে গিয়েছিলাম। পরে আমি সেটার বালক শাখায় মাধ্যমিক পড়াশোনা করি যা ‘বার্ণ হল স্কুল’ নামে পরিচিত। সেখানে আইরিশ এবং ডাচ ফাদাররা আমাদের পড়াতো। সুতরাং আমার শৈশবটা ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে পার হয়েছে। তাই আমি যখনই কিছু লেখার জন্য কলম ধরতাম, সহজাতভাবেই ইংরেজি চলে আসত।
এটা আপনার প্রাইভেট স্কুলে পড়ার কারণেই হয়েছিল?
শহীদ আলী: আমি আসলে এটা উচ্চবিত্ত ভারতীয়দের সাধারণ অভিজ্ঞতা থেকেই বলেছিলাম। আমি জানি না এখন কি হচ্ছে, কিন্তু এটা ব্রিটিশ সময়টাতে এমনই বেশি দেখা যেত।
সেই ক্যাথোলিক স্কুল থেকে খ্রীষ্টবাদ দ্বারা তাড়িত হননি?
শহীদ আলী: যদি তারা সেটার চেষ্টা করত তাহলে আমি অবচেতন ভাবেই মেনে নিতাম। কিন্তু আপনি হয়ত জেনে থাকবেন সেগুলো কোন ধর্মান্তরিত করার প্রতিষ্ঠান ছিল না।
আপনি কখনও প্রার্থনা করতেন না কিংবা আচার-অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতেন না?
শহীদ আলী: না। তবে কখনও কখনও আমি সিস্টারদের মুগ্ধ করতে চেষ্টা করতাম। তাই আমি চ্যাপেলে যেতাম এবং পবিত্র পানিতে আমার হাত ডুবিয়ে রাখতাম। এই মুগ্ধকর দৃশ্য আমার কাছে ছিল এক প্রচন্ড আবেগ-তাড়িত বিষয়। বুঝতে পেরেছেন তো? তবে আমি অবশ্যই বলব শিক্ষকদের খুব ভালোবাসতাম। এবং অবশ্যই ফাদার এবং সিস্টারদেরও।
এই ভালবাসার পেছনে বিশেষ কারণ আছে নাকি?
শহীদ আলী: তারা ছিলেন চমৎকার শিক্ষক। এবং আমি বলতে পারি এটা হয়ত আমার স্মৃতিকাতরতার অংশ এবং এরাই আমার কৈশোরের অংশ। ঐ বয়সে তারা আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার ছিলেন। তাঁদের পোশাক, জীবনধারা সবই আমার কাছে অবিশ্বাস্য ছিল।
(মজা করে) কখনো তাদের হাতে মার খাননি?
শহীদ আলী: তারা অবশ্য খুব মারত আমাদের।
ঠিক কখন আপনি আপনার কবিতার ব্যপারে সচেতন হতে লাগলেন?
শহীদ আলী: নয় বছর বয়সে আমি প্রথম কবিতা লিখেছিলাম, এবং অবশ্যই তা ছিল ইংরেজিতে। আমি সেটা আমার মা কে দেখিয়েছিলাম এবং সে প্রচুর উৎসাহ দিলেন। ১২ বছর বয়সে আমার এখনও মনে আছে আমি ‘যিশু খ্রিষ্ট’কে নিয়ে কবিতা লিখেছিলাম। এটা এমন একটি কবিতা যার জন্য অবশ্য আমি বিব্রত নই। কারণ এরপরের অনেক কবিতা আমাকে বিব্রত করেছে।এমন একটি কবিতা ‘দ্যমেন’। যেটা আমি আমার বাবাকে দেখালাম এবং তিনি আমার জন্য একটি চামড়ার নোটবুক কিনে এনে জিজ্ঞেস করলেন আমি কেন আমার কবিতাগুলো সেখানে লিখছিনা? সেখান থেকে আমি প্রচন্ড উৎসাহ পেয়েছি যার সাথে কোন কিছুরই তুলনা হয় না। আর আমাদের বাসায় সবসময় কবিতার আলাপ হতো, ফার্সী, উর্দু, কাশ্মীরি এবং ইংরেজি কবিতা নিয়েও।
শুনেছি আপনি কখনো কখনো নিজেকে ‘কালচারাল মুসলিম’ বলে দাবি করেছেন, আবার কোথাও নিজেকে পরিচয় দেন ‘সেক্যুলার মুসলিম’। নিজেকে আসলে কেমন মুসলিম বলে মনে করেন?
শহীদ আলী: আমি একটি মুসলিম পরিবেশে বড় হয়েছি। আমাদের কাশ্মীরে আমাদের পরিবার মুসলিম পরিবার হিসেবে বেশ পরিচিত ছিল। পরবর্তী কিছু প্রজন্মের জন্য এই আগা পরিবার বেশ গুরূত্বপূর্ণ মুসলিম পরিচয় বহন করে চলেছে। আমার পিতামহ ছিলেন একজন স্বনামধন্য পদার্থবিদ। এবং তিনি মহারাজার মন্ত্রিত্ব থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন।
আপনি কি নিজে নিজেই মুসলিম পরিচয়টি গ্রহণ করেছেন?
শহীদ আলী: ধর্ম আমার পরিবারের কাছে খুব বড় ব্যাপার কোনকালেই ছিল না। কিন্তু কেউ যদি আমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমি কে? আমি বলব ‘আমি একজন মুসলিম’। কারণ এটা আমার নামের মধ্যেও আছে এবং এটাই সাধারণ ভাবেই চলে আসবে। এটা এর থেকে বেশি কিছু নয়।
তাহলে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি নিজেকে মুসলিম বলবেন?
শহীদ আলী: রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমি নিজেকে একজন মুসলিম হিসেবে দাবি করি। এবং আমি এটা মার্কিনমুল্লুকে আসার পর আরও প্রচন্ডভাবে অনুভব করেছি। এখানকার মিডিয়া ব্যঙ্গাত্মকভাবে ইসলামকে উপস্থাপন করছে। এটা আমার কাছে খুব বর্ণবাদী আচরণ হিসেবে মনে হয়েছে।
আপনার দু’টি কবিতায় আপনি ঈসা থেকে খ্রিস্টীয় বাইবেলের এপিগ্রাফ ব্যবহার করেছেন। কেন আপনি এই খ্রিষ্টীয় ছবিগুলো ব্যবহার করছেন?
শহীদ আলী: আমি আসলে বাইবেলকে সাহিত্যের বিচারে ব্যবহার করেছি। বাইবেলে অনেক স্বতন্ত্র লাইন আছে এবং স্বতন্ত্র বাক্য আছে যা আমার কাছে গতিশীল লেগেছে। যেমন আমার প্রিয় একটা লাইন হল “এবং যীশু কাঁদলেন”। আমার কাছে লাইনটা চমৎকার লেগেছে কেন আমি জানি না তবে আমার কাছে এর গতিশীলতা অত্যন্ত চমৎকার লেগেছে। তবে অবশ্যই আমি পুনরুত্থান এবং তার পেছনের ধর্মতত্ত্বে বিশ্বাস করি না। আমার মনে হয় সেই লাইনটিতে একটা সরল উচ্চারিত সত্য আছে। মনে হয়েছে একটি গতিশীল সত্যকে অলংকৃত করে জোর গলায় ঘোষণা করা হল। মাঝে মাঝে এটা পপ গানের ক্ষেত্রেও ঘটে থাকে। যা আমি খুব পছন্দ করি। আমার মনে হয় এই লাইনগুলো আমার ভেতর ভয়ানক ভাবে নেমে আসছে। যেমন এলভিস প্রিসলির “হার্ট ব্রেক হোটেল” শিরোনামের গানে একটি লাইন আছে “আই গেট সো লোনলি, আই কুড ডাই” অথবা “টকিং হেড” ব্যান্ড এর “সাইকোকিলার” গানের “আই অ্যাম স্যাডার দ্যন ইউ উইল এভার নো” এগুলো অসাধারণ।
যীশু তো একজন ঐতিহাসিক চরিত্র। আপনি কি এটা বিশ্বাস করেন যে তিনি একজন মানুষ ছিলেন যিনি পৃথিবীর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন?
শহীদ আলী: আমি আসলে বিশ্বাস অবিশ্বাস কোনটাই করি না। আমার কাছে যথেষ্ট তথ্যও নেই। তবে আমি মনে করি যীশু একজন ঐতিহাসিক চরিত্র ছিলেন। তবে তিনি কি করেছেন না করেছেন সেটা আমার কাছে অপ্রাসঙ্গিক। মানুষ কি ভাবে সেটা তাদের বিষয়।
মুসলিমরা বিশ্বাস করে মুহাম্মদ একজন নবী ছিলেন কিন্তু এখন নেই তাই না? ঠিক যেমন খ্রিষ্টানরা মনে করে যিশু ইশ্বরের পুত্র?
শহীদ আলী: মুহাম্মাদকে সর্বশেষ নবী মনে মনে করা হয়। এবং তারা (মুসলিমরা) শেষ বিচারের দিনের জন্য অপেক্ষা করে যেমনটি করে থাকে খ্রিষ্টান ও ইহুদিরা। তারা তিন পক্ষই এটা করে থাকেন সুতরাং তাদের অপেক্ষা করতে দিন।
আপনি তাহলে নিজেকে কি হিসেবে পরিচয় দিবেন সংশয়বাদী না নাস্তিক?
শহীদ আলী: অবশ্যই নাস্তিক।
যৌনতাকে কিভাবে দেখেন, এটা কি আপনার ধর্মবিশ্বাসের পর্যায়ের কিছু?
শহীদ আলী: (হাসির সাথে) সেটা অবশ্য আপনি বলতে পারেন। (এবার একটু গম্ভীর ভাবে) যৌনতা অবশ্য আমার চিন্তার কেন্দ্রে রয়েছে; যার দ্বারা আমি দুনিয়াকে দেখি। কিন্তু আপনি এটাকে ধর্ম বলতে পারেন না।
আমেরিকাতে ভারতীয়-ইংরেজ কবিরা আসলে কতটা সংখ্যালঘু?
শহীদ আলী: তারা আসলে এখনো সেভাবে সামনে আসেনি।
তারপরও যদি বলতে হয়?
শহীদ আলী: সংখ্যাটা সর্বমোট আট অথবা ছয় জন হবে। হয়তবা পাচ।
এখন ভারতীয় ইংরেজি কবিদের মধ্যে আপনার আওয়াজকে কিভাবে আলাদা হিসেবে খুজে পাবো?
শহীদ আলী: হিন্দু, মুসলিম এবং পাশ্চাত্য এই তিনটি বড় কিন্তু আলাদা সংস্কৃতি আমার ভেতরে আছে। এগুলো আসলে আমার চিন্তা ও আবেগকে সংগঠিত করেছে। তবে এগুলোর কোন যথেচ্ছ ব্যবহার কখনো করতে চাই না। তারা যেভাবে আছে; সেভাবেই আমার জীবনের অংশ হয়ে থাকুক। এবং আমি মনে করি এগুলো আমার সৌভাগ্যেরই একটা অংশ। আমি বলতে চাচ্ছি আমেরিকান কবিরাও তাদের গন্ডির বাহিরে লিখতে পারেন। তবে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে যে আপনি কী লিখছেন। কখনো আমি মুসলিম মিথ নিয়ে কবিতা লিখতে পারি; হিন্দু অথবাগ্রিক মিথ নিয়েও। এগুলো আমার কাছে বেশ স্বাভাবিক মনে হয়।
আপনি কি আপনার আওয়াজকে আলাদা ভাবে সনাক্ত করতে পারেন?
শহীদ আলী: আমি বলবো আমার কবিতার ভিত্তিমূল অনেক গভীর; আমার আওয়াজের মধ্যে জাগতিক এবং আন্তর্জাতিক আকাঙ্ক্ষা ফুটে ওঠে। এটা হয়তো একটা বিশেষ কারন। আবার এর পিছনে আরোনানাব্যাপারপ্রয়োজনহতেপারে।
আপনার আমেরিকার অভিজ্ঞতায় এই আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক মিশ্রণকে কিভাবে দেখছেন?
শহীদ আলী: আসলে জানি না। যেমন ধরা যাক আমার কবিতা স্নো অন দ্য ডেজার্ট। এই কবিতায় নির্বাসন, স্মৃতিকাতরতা আর প্রবাস জীবনের সব উপকরণই তিনটি সংস্কৃতির আলোকে আলাদা করে বোঝানো হয়েছে। এটা আমার প্রথম দিকের ধারণা থেকে একেবারেই আলাদা। এবং আমি এখন এটিকে ভাষার সংগীত হিসেবে ধারণ করি তা পুরোপুরি আমেরিকার সাথে যায় না। এটা আসলে তারচেয়েও জটিল একটা বিষয়।
আপনি কি আপনার শিল্পের মধ্যেও এই জটিলতা দেখতে পান?
শহীদ আলী: হ্যা, মাঝে মাঝে পাই। কখনো এই জটিলতার একটি আরেকটির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তা অবশ্য আমার মন মেজাজ আর নির্দিষ্ট সময়ের উপর নির্ভর করে। কিন্তু যখন আমি লিখি তখন এসব নিয়ে চিন্তা করি না। পেছনের প্রশ্নগুলিকে যুক্তিসংগত ভাবেই তুলে ধরার চেষ্টা করি। এবং আমি কবিতা লেখার সময় আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে লেখার চেষ্টা করি। আমি যখন কৌতুক করার মেজাজে থাকি তখন আমি ওটা নিয়ে লেখার চেষ্টা করি আবার স্মৃতিকাতরতা বা ঐতিহাসিক মেজাজে থাকার সময় সেরকম কিছু। আবার উটকো মেজাজে থাকার আমি জর্জিয়া ওকিফের উপর কবিতা লিখতে চাই। আমি জর্জিয়া ও’কিফের ওপর কবিতা লিখতে চাই এবং তার যোনি প্রদর্শনকৃত সেইসব পেইন্টিংগুলি নিয়েও। আমি ওকিফের যৌনতার উপরও কবিতা লিখতে চাই।
আমার মনে আছে আমরা যখন এমলএতে বসেছিলাম তখন আপনি আমাদের টেবিলে বসে সমালোচকদের জন্য পাঁচজন উল্লেখযোগ্য সমসাময়িক আমেরিকান কবি- অ্যাডরিয়েন রিচ, গিনসবার্গ, মেরিল, আশবেরি, মরউইনকে চিহ্নিত করেছিলেন। আপনি কিভাবে সেই তালিকায় আসবেন?
শহীদ আলী: আমি এসব কবিকে কোনো না কোনোভাবে খুজে পেয়েছিলাম। এবং তাদের কাজের সাথে মিলিয়ে কিছু কাজ করতে চেয়েছিলাম যদিও তারা আমার কাছে খুব প্রিয় ছিলো না তবে পছন্দ করতাম। মানে আমি বোঝাতে চাচ্ছি অন্য অনেক কবি আছে আমার কাছে যারা অত্যন্ত প্রিয় যাদের কবিতা আমার কাছে চমৎকার লাগে। যেমন গ্যালওয়ে কিনলেকে আমি সব সময় প্রশংসা করে থাকি। আবার মাইকেল পালমার নামে একজন কবি আছেন যার কাজকে আমি অসম্ভব পছন্দ করি। কিন্তু আমার মনে হয় না আমি কিনলে বা পালমারের মত কখনো লিখতে পারবো। কিন্তু আমি পারবো (কথা থেমে) এইক্ষেত্রে আমার জেমস ম্যারিল জন অ্যাশবেরি ডব্লিউ মেরিউনদের খুব জিনিয়াস মনে হয়। আমি মনে করি তারা আমেরিকান কবিতার বিভিন্ন স্রোতের প্রতিনিধিত্ব করেন। এবং আমার মতে তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এ্যালেন জিন্সবার্গের মত সামাজিক প্রতিবাদের কবিতা লিখতে পারবেন যা হয়তো খুব চমৎকার নয় বা খুব কাব্যিক নয় তবে যা বলতে চাওয়া হচ্ছে তা বলা সম্ভব। যেমন একটি লাইন আছে “আমেরিকা গো ফাক ইউরসেল্ফ উইথ ইউর অ্যাটম”। আমিও এরকম একটি লাইন লিখতে চাই; তবে জানি না আমি পারবো কিনা।
আপনি আপনার ভক্তদের কোন অংশে বিবেচনা করেন? প্রাচ্যের নাকি পাশ্চাত্যের?
শহীদ আলী: আসলে আমার ভক্তরা দুই প্রান্তেই আছে। কখনো কিছু কবিতায় ভারতীয় বিশ্লেষণ উঠে আসে যা ভারত সংশ্লিষ্ট হলে যে কেউ সহজেই চিনতে পারেন বা কবিতার সাথে মিশে যেতে পারেন। তবে আমি মনে করি না যে ইংল্যান্ড বা আমেরিকান কেউ ভারতীয় অভিজ্ঞতা না থাকলেই এসব থেকে বঞ্চিত হবেন না।
আপনিও কি সালমান রুশদীর মত বলবেন যে আপনার বইগুলির মধ্যে আগাগোড়া “ভারতীয়তা” আছে?
শহীদ আলী: আমার ‘হাফ ইঞ্চি হিমালয়’এর কবিতাগুলি পড়লে আপনি এমন এক ধরনের সংবেদনশীলতা খুজে পাবেন যা শুধু এমন কারো কবিতায় পাওয়া সম্ভব যাকে উর্দু কবিতা চারদিক দিয়ে আবৃত করে রেখেছে। আমার ভাষায় এটা আমার হাড়ের সাথে মিশে আছে। আমি এর মধ্যেই বড় হয়েছি। এবং আমি মনে করি আপনি যদি আমার কবিতাগুলি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে এমন সুর আর সংবেদনশীলতা যা কোন আমেরিকান ইংরেজি বা ব্রিটিশ ইংরেজি কবিতার লাইনে খুজে পাবেন না। আমি মনে করি একজন উর্দুভাষী আমার ইংরেজির পেছনে এই উর্দু সুরটিই খুজে পাবেন। অন্তত আমি এমনটাই মনে করি।
এই দেশে দীর্ঘ অবস্থান সত্ত্বেও আপনার এই (উর্দু) সুরটি ধরে রাখা কি খুব কঠিন?
শহীদ আলী: আমি তেমনটি মনে করি না। কারণ আমি উর্দু অনুবাদ করি। আমি উর্দু কবিতা প্রায়শই শুনি এবং আমি জানি এটা সব সময় আমার হৃদয়ে থাকে। সুতরাং আমি কখনো এটার অনুপস্থিতি অনুভব করি না। প্রত্যেক গ্রীষ্মে আমি ভারতে যাই; মা বাবার সাথে দেখা করতে। আমার বন্ধুদের সাথে দেখা করতে। এটা এক কথায় তাদের সাথে এক ধরণের যোগাযোগ রাখি। এবং সত্যিই আমি একে আপন… (এবার নিজেকে সংশোধন করে) আমি জানি না যে আমি আসলে কি আপন করে বেচে থাকি। তবে আমার মনে হয় আমি এই ক্ষেত্রে ভারত এবং আমেরিকা উভয়কেই আপন মনে করি। তারা আমার অন্তর্গত আমিও তাদের অন্তর্গত। আমি এমন অনেক আমেরিকান দেখেছি যাদের আমার কাছে অসম্ভব ভালো মনে হয়েছে। (মুচকি হেসে) এগুলোর অনেক কিছুই আমি আকর্ষণের জায়গা থেকে করি। নাকি সবকিছুই ব্যক্তিগত আকর্ষণের জায়গা থেকে করা উচিত?
আপনার কবিতায় কোন কোন বিষয় বার বার ফিরে আসে?
শহীদ আলী: কোনো বিষয় থেকে চেতনা মুখ্য একটা কারণ। এই চেতনা আমাকে কোনো জিনিস নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া থেকে মনে করিয়ে দেয়। এবং এটা ভাষার সাথে যুক্ত হয়; প্রকৃতির সাথে যুক্ত হয়। যুক্ত হয় ইতিহাসের সাথে এবং নানা মিথ এবং বিরাট ব্যক্তিত্বের সাথে। অতীতের অপ্রতিরোধ্য সব কিছুতে আমি এক ধরনের শূন্যতা বোধ করি। আমি মনে করি এটাই আমাকে লিখতে অনুপ্রাণিত করেছে।
আপনার কবিতা কি আপনার সম্পর্কে আলাপ তুলে?
শহীদ আলী: না না সেরকম নয়। আমি নিজের ব্যাপারে আত্ম-স্বীকারোক্তিমূলক কবিতা লিখতে মোটেই আগ্রহী না। যদিও আমি এমন কবিতাকে বেশ প্রশংসা করি তবে আমার জীবনকে এসব কবিতায় ধরে রাখতে আগ্রহী নই আমি। আমার জীবনকেই আমি একটি আত্মজীবনী মনে করি। আমি আত্মজীবনী আলাদা ভাবে লিখে আমার চিন্তা-চেতনার প্রতি আলোকপাত করতে চাই। কিন্তু আমি চাই না লোকজন আমার কবিতা পড়ে বলুক “এই কবিতা তো শহীদের ব্যক্তিগত বাতুলতা বা এই রকম কিছু একটা”, এরকম সমালোচনা হোক। তবে আমি জন বেরিম্যান, সিলভিয়া প্লাথ বা অন্য অনেকের প্রচুর প্রশংসা করে থাকি। কখনো কখনো অটোবায়োগ্রাফিকাল ব্যাপারটা একটু বিরক্তি তৈরি করে সেটা অবশ্য আলাদা আলাপ।
আপনার নতুন কবিতার ব্যাপারে কিছু বলুন।
শহীদ আলী: নতুন সংগ্রহের উপর আমি কাজ করছি (নস্টালজিস্ট’স ম্যাপ অব আমেরিকা, যেটি ১৯৯১ সালে প্রকাশিত হয়েছিলো)। যেখানের অধিকাংশ কবিতাই আমেরিকাকে কেন্দ্র করে নির্মিত; বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মরুময় এলাকার উপর। আমার মতে আমার এই এরিজোনাতে চলে আসাটা এক দিকে ভালো ছিলো এখানে আমি এমন এক ভূপ্রকৃতি খুজে পেয়েছিলাম যা আমার নির্বাসিত জীবনের চিন্তা- উদ্বেগ-স্মৃতিকতরতা সব কিছু ধারণ করছিলো। এবং আমার রাজনৈতিক চিন্তাগুলো।
নস্টালজিস্ট’স ম্যাপ তাহলে সবসময় আপনার ঘরকাতরতা (হোমসিকনেস) থেকে আবির্ভুত?
শহীদ আলী: আমার কবিতাগুলো ঘরকাতরতা কি চলে যাচ্ছে বা কি হারিয়ে যাচ্ছে এই অর্থে। যা হারিয়ে যাচ্ছে তার মধ্যদিয়েই একধরণের কাতরতা প্রকাশ পায় আমার কবিতায়। কখনো কখনো এই কাতরতা অন্যের কোনকিছুর প্রতি স্মৃতিকাতরতাও হতে পারে। মাঝে মাঝে আমার কবিতায় আমি আমার পিতার যৌবনের এবং তার পূর্বপুরুষদের স্মৃতিকল্পনা করে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি।
এই ইতিহাস এবং স্মৃতিকাতরতা একে অন্যের হাত ধরে তাহলে চলছে তাহলে?
শহীদ আলী: একটি চমৎকার ইতিহাস একটি স্মৃতিকে উদ্ধার করে করে সমৃদ্ধ করে তোলে। এমন অনেক জিনিস আছে যা সমগ্র মানবজাতি বা অন্তত একটি জাতির ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করে। ইতিহাস হলো স্মৃতিকে তরতাজা এবং শক্ত করার একটি অভিনব উপায়। ব্যক্তিগত একটি সাধারণ ব্যাপার থেকে ইতিহাসকে নতুন মাত্রা দেওয়া। আমি বলতে চাচ্ছি মানুষ যেকারণে অতীতের দিকে ফিরে তাকায়, হয়তো সেটার মানবিক প্রয়োজন আছে।
আপনি কি জানেন কেন “আপনার” এই আলাদা চিন্তা-চেতনা আপনার উপরে কাজ করে? আবিষ্ট করে রাখে?
শহীদ আলী: আমি সত্যিই জানি না। এইসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া বেশ কঠিন। আমি মনে করি এই উত্তর খুঁজতে কবিতার মনঃবিশ্লেষণ হওয়া উচিত। আর যদি রাজনৈতিক গুরুত্বের আলোকে বলি, তাহলে দুনিয়ার এভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া আমাকে পীড়িতকরে, যুদ্ধ এবং মানুষের অধিকার আমাকে ভাবিয়ে তুলে। আরো ভাবিয়ে তুলে মানুষের হঠকারিতা।
আপনার কাছে মনে হয় কবিতাই এসব কিছু থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারবে?
শহীদ আলী: হ্যা আমি সেটাই মনে করি। কবিতা হলো কিছু ব্যক্তিগত কথা সাজিয়ে গুছিয়ে প্রকাশ করা। আমি মনে করি ডব্লিউ এস মারউইন এই দুনিয়ার ঘোরে মজে ছিলেন। এটা অনেকটা বনের বৃষ্টির আবহাওয়ার মত। এমন কেন? তাহলে বলি ধরুন আপনি বুঝতে পারছেন কিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আপনি তা ধ্বংস হতে দিতে চান না। কবিদের প্রকাশভঙ্গি হয়ত খুব জটিল, কিন্তু চাওয়াটা খুবই সরল।
আর আমাদের সকলের চাওয়া তো একটি চমকার পৃথিবী। তাই না?
https://thejoban.com/article/2018/02/04/রাজনৈতিক-দৃষ্টিকোণ-থেকে/
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন