ব্যক্তিগত জীবনে ঝড়ের পর নিষেধাজ্ঞা। সেই নিষেধাজ্ঞা কাটানোর পর যৌথ প্রযোজনার ছবি নবাবকে ঘিরে নতুন বিতর্ক। সেই বিতর্কে আবারও তাকে নিষিদ্ধ করেছে চলচ্চিত্র পরিবার। কিন্তু এরপরও আটকানো যায়নি নবাব। ঈদের সিনেমা হিসেবে সব রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে নবাব। অপেক্ষাকৃত কম সিনেমা হলে মুক্তি পেলেও সাড়া ফেলেছে রাজনীতি। সব বিতর্ক ছাপিয়ে ভক্তদের ভালোবাসা হাজির করেছে নতুন এক শাকিব খানকে। নানা বিষয় নিয়ে ভক্তদের অনেক জিজ্ঞাসা, অনেক প্রশ্ন। এসব নিয়ে শাকিব খান মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিন শোবিজের বিভাগীয় সম্পাদক রণক ইকরামের। তারই চুম্বকাংশ তুলে ধরা হলো।
ঢালিউড কিং থেকে ঢাকার নবাব। নবাব সিনেমার সাফল্য আপনাকে রীতিমতো নতুন টাইটেল এনে দিয়েছে। সবাই আপনাকে নবাব বলে ডাকছে। আপনার ভাষ্য কী?
আমি বরাবরই বলে এসেছি দর্শকদের জন্যই আমি আজ শাকিব খান। দর্শক যেদিন আমার পাশ থেকে সরে দাঁড়াবে সেদিন আমি আর কিছুই থাকব না। নবাব একটি ভালো সিনেমা। অনেক কষ্ট করে সময় নিয়ে কাজটি করেছি। আমি জানতাম আমার দর্শক ঈদের মতো বড় একটি উৎসবে এমন টানটান উত্তেজনাকর দুর্দান্ত গল্পের ছবিটি দারুণভাবে গ্রহণ করবে। আদতে তাই হয়েছে। ভালোবেসে দর্শক আমাকে নবাব নামে ডাকছে। বিষয়টি আসলেই আনন্দের।
অনেকেই বলেছে আপনি চাননি রাজনীতি ছবিটি ঈদে মুক্তি পাক। এমনকি এই ছবির প্রচারেও আপনি সক্রিয় ছিলেন না।
এটা একদমই ভুল কথা। নবাব যেমন আমার অভিনীত সিনেমা, রাজনীতিও তাই। সত্যি কথা বলতে গেলে আমি আসলে কোনো ঈদের ছবির প্রচারেই ছিলাম না। নবাব ছবিটি আটকে যাচ্ছিল বলে আমি চেয়েছি ছবিটি যেন মুক্তি পায়। তার মানে এই নয় যে, আমি চেয়েছি রাজনীতি আটকে যাক। আমি এরই মধ্যে হলে গিয়ে পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস ও দর্শকদের সঙ্গে বসে ছবিটি দেখেছি। একজন শিল্পীর কাছে তার সব কাজই সমানভাবে পছন্দের ও গুরুত্বপূর্ণ। তাই একটি বাদ দিয়ে অন্যটির প্রচার করার প্রশ্নই উঠে না।
তাহলে এই অভিযোগ উঠল কেন?
এখন আমার সবকিছুই ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। সুযোগ পেলেই তৃতীয় পক্ষ উল্টা-পাল্টা মতামত উপস্থাপন করছে। সবাই জানে যে, রংবাজ সিনেমার শুটিং নিয়ে আমাকে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। এই সিনেমার শুটিং শেষ করার পর আমি ঈদের ছবির প্রচারের জন্য সময় রেখেছিলাম। কিন্তু সে সময়টায়ও আমি শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলাম। যদি আমার স্বাভাবিক কাজে বাধা না আসত তাহলে প্রচুর সময় পেতাম এবং ছবির প্রচারণায় সময় পেতাম। তবে এত আলোচনার পরও আমার সন্তুষ্টি একটাই, আমার দর্শক নবাব এবং রাজনীতি দুটোকেই সমানভাবে গ্রহণ করেছে। দর্শকের পছন্দের চেয়ে বড় আর কিছুই হতে পারে না।
অপু বিশ্বাসের সঙ্গে রাজনীতিকে দর্শক ভালোভাবে নিয়েছে। অপুর সঙ্গে আপনার বাকি কাজগুলো দর্শক কিভাবে নেবে বলে আপনি মনে করেন?
তার সঙ্গে বেশ কিছু ছবি নির্মাণাধীন আছে। আমি ভেবেছিলাম ছবিগুলো হয়তো দর্শক সেভাবে নেবে না। সেগুলোও হয়তো মুখ থুবড়ে পড়বে। কিন্তু এখন দেখছি রাজনীতি ভালোভাবে চলছে। তাই মনে হচ্ছে অন্য চলচ্চিত্রগুলো সেভ জোনেই আছে।
ঈদের আগে লন্ডনে ‘চালবাজ’ সিনেমার শুটিংয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শোনা গেছে শুটিং বন্ধ হয়ে গেছে।
সমস্যাটা আসলে কলকাতার। ওখানকার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে মুভিজের সঙ্গে ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার একটা ঝামেলা বেঁধেছিল। যে কারণে টেকনিশিয়ানরা কাজ করতে রাজি হননি। কারণ ফেডারেশনের নিষেধাজ্ঞা। আমরা প্রস্তুতি সব শেষ করে এনেছিলাম। আমার নতুন লুক রেডি করেছি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে ওরা কাজ করতে চাইল না। ফলে ওরা যেমন দেশে ফিরে গেছে, আমিও ফিরেছি।
তাহলে কী অনিশ্চিত হয়ে গেল চালবাজ?
নাহ। সেরকম কিছু না। সমস্যাটা সাময়িক ছিল। এর মধ্যেই সব সমাধান হয়ে যাওয়ার কথা। আমি শিগগিরই লন্ডন যাচ্ছি। সেখানে আরও কাজ আছে। আগামী ঈদের ছবির কাজ আছে।
রংবাজের কী খবর। কবে আসছে?
রংবাজের কাজ তো শেষ। তাড়াহুড়ো করে এই ঈদে রিলিজ দিইনি। এটা উৎসবকে টার্গেট করে বানানো। তাই কোরবানির ঈদে রিলিজ হবে। এই ছবিতে দর্শকদের জন্য চমক থাকছে।
কী ধরনের চমক?
সেটা এখনই বলতে চাচ্ছি না। চমকটা চমক হিসেবেই থাকুক।
নতুন ছবিগুলোতে আপনাকে নতুন নতুন লুক এ দেখা যাচ্ছে। চরিত্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাল্টে যাচ্ছে স্টাইলও। রহস্যটা কী?
কোনো রহস্য নেই। আসলে প্রোডাকশন এবং ডিরেক্টরের অ্যারেঞ্জমেন্ট অনুসারেই সব হয়। একজন শিল্পী সব সময় চায় দর্শক তাকে নতুন করে আবিষ্কার করুক। নতুনরূপে দেখুক। আর সেটা গ্রহণ করুক। ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে আমি সেটা নতুন করে আবিষ্কার করেছি এবং এখন সেটা নিয়ে কাজ করছি।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী পরিবার আপনাকে চলচ্চিত্র থেকে বহিষ্কার করেছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
এটা তো নতুন নয়। আমার সঙ্গে আগেও ঘটেছে। পুরো ব্যাপারটি আমার কাছে হাস্যকর লেগেছে। এ বিষয়ে কিছুই বলতে চাই না। এসব নিয়ে মাথাও ঘামাতে চাই না। আমি কেবল আমার কাজ নিয়ে থাকতে চাই। আমাকে ষড়যন্ত্র করে বহিষ্কার করা হয়েছে। একটা কথা আমি আগেও বলেছি, এখনো বলতে চাই। রাজনীতি করে তারকা হওয়া যায় না। আমাকে নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে। আমার সিনেমা নিয়েও রাজনীতি হয়েছে। এভাবে ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে ওঠার কোনো মানে হয় না। শিল্প আর শিল্পীর কোনো জাত নেই ধর্ম নেই। দর্শক-ভক্তদের ভালোবাসাই তাদের বাঁচিয়ে রাখে। আমিও আমার দর্শকের কাছে দায়বদ্ধ। তারা যদি আমাকে গ্রহণ করে তাহলে আর কারও ক্ষমতা নেই কোনো কিছু করার। নবাব আর রাজনীতির সাফল্যই বলে দিচ্ছে দর্শক আসলে কী চায়। দর্শক ছাড়া আর কারও ক্ষমতা নেই কাউকে নিষিদ্ধ করে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। আমি তো মনে করি সৃজনশীল কাজের ক্ষেত্রে এমন নোংরা রাজনীতি থাকাই উচিত নয়।
ষড়যন্ত্র বা নিষেধাজ্ঞার এই সংস্কৃতি দেশি চলচ্চিত্রে প্রভাব ফেলছে কী? এ থেকে উত্তরণের পথ কী?
প্রভাব তো অবশ্যই রাখছে। কেউ কেউ কাজ করছে। আবার কারও কারও কাজ নেই, ওরা ব্যস্ত ষড়যন্ত্রে। উত্তরণের পথ আসলে একটাই। চলচ্চিত্রের ভালো চাইলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
আপনার নিজের প্রোডাকশনের কী খবর?
আপাতত আমার প্রোডাকশন থেকে কোনো ছবি করছি না। অনেক ছবি হাতে আছে সেগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই।
ভেঙ্কটেশের সঙ্গে আপনার চুক্তির গুঞ্জনটা উড়িয়ে দিয়েছেন। এসকে মুভিজের সঙ্গেও কাজ করেছেন। আসলে বিষয়টা কী?
আমি এখন আর কোনো নতুন আর্টিস্ট নই যে, কন্ডিশনাল চুক্তিতে যাব। ভেঙ্কটেশ এসকেসহ আরও অনেকের সঙ্গেই কাজ করা হবে। গল্প, স্ক্রিপ্ট, কাস্টিং পছন্দ হলে যে কারও সঙ্গেই কাজ করতে পারি। নির্দিষ্ট কোনো গণ্ডিতে আমি বন্দী থাকতে চাই না।
একটু পেছন ফিরে তাকানো যাক। ৭০ দশকে আমাদের চলচ্চিত্রের সোনালি যুগ ছিল। সেটা কী ফিরে পাওয়া সম্ভব?
অতীত ফিরে আসা নয়। বরং আজকের অবস্থান আগের থেকেও ভালো থাকার কথা। সোনালি অতীত তো বলিউডি সিনেমাতেও আছে। সেখান থেকে চিত্রটা এখন আরও অন্য রকম হয়ে গেছে। আমাদের সময়টা অনেক বেশি উজ্জ্বল হওয়ার কথা। সেটা আসলে কিছু জটিলতার কারণেই হচ্ছে না।
কিছু জটিলতা আর কিছু ভুল বোঝাবুঝি আছে হয়তো। নায়ক ফারুক, আলমগীর তারা আপনার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন। এটা কেন হলো?
দেখুন, তাদের সঙ্গে আমার কোনো বিভেদ নেই। আমি সব সময় সিনিয়রদের প্রাপ্য সম্মান দিয়ে এসেছি। ফারুক ভাইকে নিয়ে আমি কেন বাজে কথা বলব? আমি কিছুদিন আগেও সেরা অভিনেতার পুরস্কার নেওয়ার সময় প্রথমে ফারুক ভাইকে সালাম করেই পুরস্কার নিই। আমার কাছে তাদের অবস্থান অন্যরকম। আলমগীর সাহেবকে আমি বাবার মতো মনে করি। তিনি আমাকে ছেলের মতো দেখেন। তাদের সঙ্গে বেয়াদবির প্রশ্নই আসে না। আসলে তৃতীয় পক্ষ তাদের ভুল বোঝাচ্ছে।
সমস্যাটা যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নিয়ে। বলা হচ্ছে যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণা করা হচ্ছে। নিয়ম মানা হচ্ছে না।
আমি একটা বিষয় স্পষ্ট করতে চাই। আমি নিজেও কিন্তু যৌথ প্রতারণার বিপক্ষে। প্রতারণার পক্ষ নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আর নবাবকে আটকানোর আমি কোনো যুক্তি খুঁজে পাইনি। সিনেমার নাম নবাব। নাম ভূমিকায় আমি। ফুল মার্ক এদেশের দিকেই চলে আসে। উল্টো ওদের আপত্তি জানানোর কথা ছিল। আমি মন্ত্রী ও পরিচালক সমিতির সভাপতির কথা শুনে বুঝলাম নবাব নিয়ে কারও কোনো অভিযোগ ছিল না। অভিযোগ ছিল আরেকটি ছবি নিয়ে। কিন্তু ওরা নবাবকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন। এখানেই তৃতীয় পক্ষের উদ্দেশ্য পরিষ্কার। নবাব নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে। কিন্তু রাজনীতি করেও নবাবকে আটকানো যায়নি।
পুরনো প্রশ্নটা আবার। ভারতীয় ছবির ব্যাপারে আপনি নাকি নিজের স্ট্যান্ড পাল্টে ফেলেছেন। কাফনের কাপড় নিয়ে আন্দোলনে নেমে নিজেই আবার পাল্টে গেছেন।
ভুল। এটা এক ধরনের অপপ্রচার। তৃতীয় পক্ষের ওরা ব্যাপারটাকে ভুলভাবে তুলে ধরছে। ওই সময়ের আন্দোলনটা ছিল হিন্দি ছবির বিরুদ্ধে। তখনকার আন্দোলনের ছবিগুলো ঘাঁটলেই দেখবেন সেখানে স্লোগান লেখা আছে— ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় হিন্দি ছবি চলবে না। ’ ওখানে যৌথ প্রযোজনা নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না। আমরা ফিল্মে আসার আরও আগে থেকেই যৌথ প্রযোজনা চলছে। তখন আপত্তিটা ছিল হিন্দি ছবি নিয়ে।
মাঝখানে শোনা গিয়েছিল আপনি বলিউডে সিনেমা করছেন। কোনো আপডেট?
এখনই কিছু বলতে চাই না। আলাপ তো অনেক রকমই হয়। তবে সব ঠিক হওয়া মাত্র দর্শকদের জানাব।
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি লোকাল প্রোডাকশনে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার খবর বেরিয়েছে।
কিন্তু সব চূড়ান্ত হয়নি। আলাপ-আলোচনা চলছে। বললেই তো আর চুক্তি হয়ে যায় না। অনেক ব্যাপার থাকে।
অনেকের অনেক কথা সত্ত্বেও নবাব আর রাজনীতি সাফল্য পেল। এর আগে শিকারী দিয়ে আপনার যে নতুন যাত্রা শুরু হয়েছিল, সেটা কিন্তু অটুট থাকল।
আপনারা জানেন, শিকারী আন্তর্জাতিকভাবে রিলিজ হয়েছে। কানাডায় রিলিজ হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় রিলিজ হয়েছে। আর মালয়েশিয়ায় তো আমি, মন্ত্রী মহোদয় গিয়েছিলাম। আজ যারাই এমিরেটসে যাতায়াত করেন তারা শিকারী ছবিটি দেখে থাকবেন। কারণ, এমিরেটস ছবিটির স্বত্ব কিনে নিয়েছেন। আর যৌথ প্রযোজনার নবাব ও রাজনীতি নিয়ে মিডলইস্টের মানুষের মধ্যে প্রচুর আগ্রহ জন্মেছে। সেখানে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির পুরো বাজার। এখানেও কিন্তু নবাব ঢুকে গেছে আরবি সাবটাইটেল দিয়ে। বলিউড ছবির পাশাপাশি আমাদের এই ছবিগুলো সিনেপ্লেক্সে চলবে। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা, লন্ডনসহ বিভিন্ন স্থানে চলবে। যে ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছে এটা কিন্তু আমাদের জন্য আনন্দের ব্যাপার। আমি সবসময় যে স্বপ্ন দেখি, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমাদের ছবির জয়জয়কার। এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে দেখব আমাদের ছবির বিশাল বিলবোর্ড! হিরো যেই হোক, আমাদের সিনেমার একটি বিলবোর্ড। সিনেপ্লেক্সে গিয়ে দেখব আমাদের সিনেমা চলছে। সেটার হাতছানি কিন্তু সবাই পেয়েছে। এই যে সাফল্য, এটার আভাস সবাই পাচ্ছে এখন।
মিডলইস্টে আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। আবার নিউইয়র্ক, টরেন্টো, সিডনি, আমেরিকায় প্রচুর বাঙালি থাকে। এই পার্টগুলো হিন্দী ছবির একমাত্র জায়গা ছিল। ইংরেজি ছবির পর হিন্দি ছবি রিলিজ হয়। এখন সেখানে বাংলা ছবি ঢুকছে। যৌথ প্রযোজনার ছবিগুলোর সাফল্য সত্ত্বেও এত প্রশ্ন কেন?
বিষয়টা আমিও ঠিক বুঝতে পারছি না। বাংলাদেশেই তো বাংলা চলচ্চিত্রগুলো চ্যালেঞ্জের মুখে। সেই চ্যালেঞ্জটা কাটিয়ে উঠতে হবে। আমি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক টক শোতে দেখেছি, সেখানে মন্ত্রী মহোদয় বলছেন শুধু বস-টু এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ ছিল। পরিচালক সমিতির সভাপতি গুলজার সাহেবও একই কথা বললেন। তাদের শুধু বস-টু এ অনিয়ম নিয়েই অভিযোগ ছিল। কিন্তু একটা ছবির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে আরেকটা ছবি কিভাবে যুক্ত হলো! নবাব কিভাবে যুক্ত হলো? আমার মাথায় কিন্তু এখনো এই বিষয়টা আসছে না। ঘুরপাক খাচ্ছে প্রতিনিয়ত, আরে এইটা তাহলে কিভাবে হলো!
আসলে শর্ত পূরণ হচ্ছে না মনে হয়। যৌথ প্রযোজনার নিয়মে ফিফটি-ফিফটি হচ্ছে না। এই জায়গাটায় তাদের আপত্তি।
নবাবে কিন্তু ফিফটি ফিফটি রেশিও মানা হয়েছে। একটা বিষয় সবাইকে স্বীকার করতেই হবে, আমাদের টেকনিশিয়ানরা বলিউডের তুলনায় দক্ষ নন। বলিউড কিন্তু ছবির কাজে হলিউড থেকে টেকনিশিয়ান নিয়ে আসে। আর ছবির নাম যদি হয় নবাব, অভিযোগ দিলে ওপার বাংলার ওরা দিতে পারে। আমাদের দিক থেকে সেটা অযৌক্তিক। এখানে মূল চরিত্র নবাব তো বাংলাদেশের। ভিলেন অমিত হাসান ছিল, কমল আছেন। অনেকেই আছেন। আর ছবির ফার্স্ব লটের কাজ কিন্তু বাংলাদেশেই হয়েছে। সেক্ষেত্রে///// এটা তো আমি যৌথ প্রতারণার সিনেমা বলব না! যৌথ প্রযোজনার সব নিয়ম মেনেই নবাব নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে কোনো প্রকার প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়নি।
ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে আসি। আপনার পরিবার অপু বিশ্বাস, আপনার সন্তান আবরাম তারা সবাই কেমন আছেন?
ভালো আছে।
দেশে ফিরে তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন? কথা হয়েছে?
আসলে ব্যক্তিগত বিষয়গুলো আমি ব্যক্তিগতই রাখতে চাই। এসব নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। ব্যক্তিজীবন নিয়ে তো অনেক দিন ছিলাম। প্রচুর টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তাই এখন আর সেটাকে সামনে আনতে চাই না। আমি চাই না নতুন করে কোনো কিছু প্রশ্নবিদ্ধ হোক।
গণমাধ্যমে অপু বিশ্বাস বলেছেন বিয়ে করাটা তার ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। আপনি বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
এটা তার উক্তি। প্রত্যেকেরই ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে। যদি বিয়ে করাটা তার ভুল হয়ে থাকে তাহলে ভুল। এখানে আর কি বলার আছে!
অনেক নায়িকার সঙ্গে আপনার কাজ করতে হয়েছে। আপনার প্রিয় সহঅভিনেত্রী বা নায়িকা কে?
অনেকেই।
নির্দিষ্ট কারও নাম জানতে চাইলে কার কথা বলবেন?
নির্দিষ্ট কারও নাম বলে আবার বিতর্কে জড়াতে চাই না। যেহেতু আমি অনেকের সঙ্গে কাজ করেছি তাই একজনের নাম বলে বাকি সবাইকে ছোট করতে চাই না।
সহঅভিনেত্রীর মধ্যে কার সঙ্গে আপনার ক্যামেস্ট্রিটা সবচেয়ে ভালো?
যখন যার সঙ্গে কাজ করি তার সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমি চেষ্টা করি তাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার। আপনি খেয়াল করবেন ওপার বাংলায়ও শ্রাবন্তী বা শুভশ্রী যেই হোক না কেন সবাই কিন্তু আমার প্রশংসা করেছেন।
চিত্রনায়িকা বুবলীর সঙ্গে আপনার একটা সম্পর্কের গুঞ্জন রয়েছে।
এটা বুবলী না হয়ে অন্য কেউ হলেও হয়তো। আর অপুর কারণেই গুঞ্জনটা একটু বেশি। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাইব বুবলীর মতো যোগ্যতর মেয়ে আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসুক। আজ বুবলীর সঙ্গে কাজ করছি কাল হয়তো আরেকজনের সঙ্গে কাজ করব, তখন ভালো কাজ আর ক্যামেস্ট্রির জায়গা থেকে সবার মনে হতেই পারে। আসলে আমাদের এই পেশায় এমন কানাঘুষাটা একটু বেশিই হয়। সেই জায়গাটা অব্যাহত থাকবেই, যতদিন আমি নায়ক হিসেবে থাকব।
আপনার সঙ্গে অপু বিশ্বাসের জুটিটা বেশ সফল ছিল, সেটা যদি ভেঙে যায় তাহলে শাকিব খানের সঙ্গে আমরা কাকে দেখতে পাব?
সেটা আমার চাওয়ার ওপর কিন্তু নির্ভর করবে না। সেটা নির্ভর করবে মূলত দর্শকদের ওপরই। দর্শকরা যার সঙ্গে আমাকে দেখতে চাইবেন তার সঙ্গে আমার জুটিটা হবে।
দর্শক আসলে কার সঙ্গে দেখতে চাইছেন বলে আপনি মনে করেন?
নতুনদের সঙ্গেই এখন দর্শক বেশি দেখতে চায়। নতুন মুখ চায় বেশি দর্শক।
সামনের পরিকল্পনা?
বিশেষ কিছু না। ভক্তদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কিছু দিতে চাই। নিজের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চাই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন