মনিরুল ইসলামহোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার বর্ষপূর্তিতে প্রথম আলো মুখোমুখি হয় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমের প্রধান মনিরুল ইসলামের। তাঁর কথায় উঠে এসেছে সরকারের জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের পূর্বাপর। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান ও শেখ সাবিহা আলম
প্রথম আলো: বর্তমানে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট কতটা শক্তিশালী?
মনিরুল ইসলাম: ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের যাত্রা শুরু। তবে কাজ শুরু হয় মে মাসের শেষ সপ্তাহে। যদি এক বছরের কার্যক্রম মূল্যায়ন করি, আমরা যে জায়গায় পৌঁছাতে চেয়েছিলাম বাস্তবে তার চেয়ে বেশিই এগোতে পেরেছি। ঘটনাগুলো এত দ্রুত ঘটবে আমরা ভাবিনি। হোলি আর্টিজান বেকারির ঘটনা আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দিয়েছিল। এ কারণে আমরা দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অভিযানের ওপর জোর দিয়েছি।
প্রথম আলো: কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সক্ষমতা কোন পর্যায়ে? বিশেষ করে প্রশিক্ষণ ও জনবল
মনিরুল ইসলাম: জঙ্গিবাদ দমনে শুধু একটা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সক্ষমতাই যথেষ্ট নয়। জনবল আমরা মোটামুটি পেয়ে গেছি। বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণও হচ্ছে। কর্মকর্তাদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেহেতু এই অপরাধটা ভিন্ন প্রকৃতির, তাই নিয়মিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। জঙ্গিরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে, সাইবার স্পেসকে তারা সফলভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে, সেটা মোকাবিলা করার জন্য কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সাইবার স্পেসে পুলিশিং করার জন্য যে ধরনের হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার প্রয়োজন, সে ব্যাপারে কিছু সমস্যা আছে। এগুলো সংগ্রহের পর্যায়ে আছে।
প্রথম আলো: বাংলাদেশ সরকারের জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমে প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় দেশগুলো যে ধরনের সহযোগিতা দিয়েছিল, মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে তা বন্ধ আছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
মনিরুল ইসলাম: আমাদের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। এর বাইরে অস্ট্রেলিয়া, কানাডাও বেশ কিছু প্রশিক্ষণ দিয়েছে; জাপানেরও সহযোগিতা আছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে এই দেশগুলো সহযোগিতা থেকে সরে যাবে, সেটি মাথায় রেখেই আমাদের কাজ করতে হয়।
প্রথম আলো: জঙ্গি দমনে প্রতিবেশী ভারতের কাছ থেকে সহযোগিতা চেয়েছেন কি না?
মনিরুল ইসলাম: ভারতের সঙ্গে আমাদের সমন্বয়ের সম্পর্ক আছে। ভারতের সঙ্গে তাৎক্ষণিক গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় (রিয়েল টাইম ইনটেলিজেন্স শেয়ারিং) হয়। বেশ কিছু কর্মকর্তা সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। অভিজ্ঞতা বিনিময় হচ্ছে।
প্রথম আলো: তাৎক্ষণিক গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় কোন কোন দেশের সঙ্গে আছে?
মনিরুল ইসলাম: প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি। মিয়ানমারের সঙ্গে নেই, চীনের সঙ্গে আমাদের কিছু সম্পর্ক আছে। তবে সেটি তথ্য আদান প্রদানের নয়। দরকার হলে চীনের সঙ্গেও তা করব।
প্রথম আলো: হোলি আর্টিজানে বেকারিতে হামলার ১১ ঘণ্টা পর অভিযান চালানো হয়। আগেভাগে শুরু হলে অনেককে বাঁচানো যেত বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। তাহলে সিদ্ধান্তটি কি ভুল ছিল?
মনিরুল ইসলাম: সার্বিক বিবেচনায় সিদ্ধান্তগ্রহণে ভুল ছিল বলে মনে করি না। প্রথমত, এই ধরনের হামলার মুখোমুখি আমরা কখনো হয়নি; এটা ছিল বাংলাদেশে প্রথম ঘটনা। যখন জিম্মি অবস্থার সৃষ্টি হয় তখন ভেতরে কতজন আছে, তাদের কী সামর্থ্য, কী উদ্দেশ্য-সে সম্পর্কে ওই মুহূর্তে আমাদের কাছে তথ্য ছিল না। পরবর্তী সময়ে আমাদের তদন্তে যেটা এসেছে, তা হলো পুলিশের প্রথম দলটি পৌঁছানোর আগেই তারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ফলে আগেভাগে অভিযান চালানো হলেও মানুষগুলোকে বাঁচানো যেত না। প্রত্যক্ষদর্শী যাঁরা উদ্ধার হয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে শুনেছি এবং পরবর্তী সময়ে হোলি আর্টিজানের পরিকল্পনাকারী, যারা জীবিত গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নিশ্চিত হয়েছি যে জঙ্গিরা সেখানে প্রবেশের ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে একজন ছাড়া অন্যদের হত্যা করে।
প্রথম আলো: ওই একজন কে?
মনিরুল ইসলাম: তিনি একজন জাপানি নাগরিক। ফ্রিজের (চিলার) মধ্যে তিনি লুকিয়ে ছিলেন। পরে তাঁকেও হত্যা করা হয়।
প্রথম আলো: কয়েক মাস আগে ঢাকায় বিভিন্ন দেশের পুলিশপ্রধানদের জঙ্গিবিরোধী সম্মেলনে জঙ্গিবাদ বিশেষজ্ঞ রোহান গুনারত্নে বলেছিলেন, হোলি আর্টিজানে হামলাটি চালিয়েছে আইএস। আপনার মন্তব্য কী?
মনিরুল ইসলাম: উনি একজন একাডেমিশিয়ান। উনি একাডেমিক গবেষণা থেকে হয়তো এ কথা বলেছেন। কিন্তু এখানে যারা ধরা পড়েছে, যাদের কেউ কেউ ২২-২৩টি ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা বলেছে। তারা আইএসের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কথা বলেনি। এখনো যারা ধরা পড়ছে, তাদের কারও বক্তব্যে পাওয়া যায়নি যে আইএসের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আছে।
প্রথম আলো: হামলাকারীদের সঙ্গে যে আইএসের সম্পর্ক নেই বলছেন, এটা কীভাবে নিশ্চিত হলেন?
মনিরুল ইসলাম: হোলি আর্টিজান বেকারির ভেতরে যেসব জঙ্গি নিহত হয়েছে, তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক এবং কারও দ্বৈত নাগরিকত্বও নেই। তামিম আহমেদ চৌধুরীর দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে। সে কানাডা থেকে এসে নব্য জেএমবিকে সংগঠিত করেছে এবং হত্যাকাণ্ডে হোলি আর্টিজানে জঙ্গিদের নিয়োজিত করতে পেরেছে। শুধু এ ক্ষেত্রে নয়, ১৯৯২ সালে হরকাতুল জিহাদ যখন গঠিত হয় তখন তারাও বিদেশি জঙ্গি সংগঠনকে অনুসরণ করেছে।
প্রথম আলো: তাহলে নব্য জেএমবি কি আইএসের অনুসারী সংগঠন?
মনিরুল ইসলাম: অনুসারী বলতে কি, তারা আইএসের অনেক ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছে। বলা যায়, বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনগুলো আইএস, আল-কায়েদার কার্যক্রমকে অনুসরণ করে, তাদের দর্শনে বিশ্বাসী। কিন্তু সরাসরি সাংগঠনিক সম্পর্ক নেই।
প্রথম আলো: নব্য জেএমবিতে তামিম চৌধুরীর মতো আরও কেউ বাইরে থেকে এসেছে কি?
মনিরুল ইসলাম: তামিমের মাপের কেউ আসেনি। তামিম নিহত হওয়ার পর মাইনুল ইসলাম ওরফে মুসা নামে একজন সংগঠন গুছিয়েছিল। কিন্তু গত মার্চ-এপ্রিলের অভিযানে তাদের সব প্রস্তুতি নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রথম আলো: মেজর (অব.) জিয়াউল হক আপনাদের নজরদারিতে আছে কি?
মনিরুল ইসলাম: মেজর জিয়া এখনো ধরা পড়েনি। সাত মাস আগে জানতাম মেজর জিয়া বাংলাদেশের ভেতরে আছে। গত কয়েক মাসের তথ্য আমাদের কাছে নেই। দেশের বাইরেও গিয়ে থাকতে পারে। তবে বলতে পারি, এই মুহূর্তে সে সক্রিয় নেই। সক্রিয় থাকলে তথ্য পাওয়া যেত।
প্রথম আলো: হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার আগে-পরে জঙ্গিদের কৌশলে কোনো পরিবর্তন দেখছেন কি?
মনিরুল ইসলাম: জঙ্গিরা কৌশল পরিবর্তন করেছে। হোলি আর্টিজানে হামলার আগে তারা অনেকগুলো ‘ইনডিভিজুয়াল অ্যাটাক’ করেছে। উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে বেশ কিছু মানুষকে তারা হত্যা করেছে। ওই সময়টায় তাদের কাছে অস্ত্রের বেশ সরবরাহ ছিল। হোলি আর্টিজানের পর আমাদের টানা অভিযান এবং তাদের অস্ত্রের সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করার পর তারা এখন বিস্ফোরকে বেশি জোর দিয়েছে। হামলার চেয়ে এখন তারা সংগঠন গোছানো এবং নতুন করে সদস্য সংগ্রহের ওপর জোর দিচ্ছে।
প্রথম আলো: আপনাদের কৌশলে কি কোনো পরিবর্তন এসেছে?
মনিরুল ইসলাম: আমাদের একটি গবেষণা সেল আছে। প্রতিটি অভিযানের পর এই সেল থেকে সবকিছু পর্যালোচনা করে এবং গ্রেপ্তার জঙ্গিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী কৌশল নির্ধারণ করা হয়। আমরা সব সময়ই জঙ্গিদের জীবিত ধরতে চাই, এতে তথ্যের ‘স্টোর হাউস’ পাওয়া যায়।
প্রথম আলো: প্রতিটি অভিযানের ধরন প্রায় একই ধরনের। ফলে অভিযানের যথার্থতা নিয়ে জনমনে একধরনের সন্দেহ আছে।
মনিরুল ইসলাম: জঙ্গিদের কৌশল তো একই ধরনের। যখন একজন কোনো কৌশল অবলম্বন করে, তখন অন্যকেও সেই কৌশল অবলম্বন করতে হয়। আগে তাদের কাছে অস্ত্র ছিল, যুদ্ধ করত, এখন অস্ত্র না থাকায় বিস্ফোরক ব্যবহার করছে। তাদের বোঝানো হয়েছে ধরা পড়ার চেয়ে মৃত্যু শ্রেয়। কাউকে নিয়ে মরতে পারলে আরও ভালো।
প্রথম আলো: হোলি আর্টিজান বেকারির ঘটনার আগে জঙ্গিরা লেখক-ব্লগারদের টার্গেট করে হত্যা করে। তখন নীতিনির্ধারক পর্যায় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হলো, কী লেখা উচিত কী লেখা উচিত না। এসব বক্তব্য কি জঙ্গিদের পক্ষে যায়নি?
মনিরুল ইসলাম: চূড়ান্ত বিচারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম জঙ্গিদের পক্ষে যায়নি। গত বছর এপ্রিল মাসের পরে তারা আর কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারেনি। গত দেড় বছরে তাদের অনেকে ধরা পড়েছে। আগে যেসব হত্যা হয়েছে, তার অনেকগুলোর রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে; বলা যায় আদালতে পেশ করার মতো প্রমাণপত্র পাওয়া গেছে। যারা ধরা পড়েনি তাদেরও নাম এসেছে। ফলে তাদের সংগঠন এখন বিপর্যস্ত।
প্রথম আলো: জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা দেখা যাচ্ছে।
মনিরুল ইসলাম: সমন্বয়ের বিষয়টি আসলে আপেক্ষিক। টুইন টাওয়ারে হামলার পর একটি কমিশন গঠন করা হয়। কমিশন ৪০০-৫০০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে দেখা যায়, এক সংস্থার সঙ্গে আরেক সংস্থার যোগাযোগ ছিল না। আমরা সেই তুলনায় ভালো আছি। আমাদের মধ্যে সমন্বয় আছে। তবে তা আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে।
প্রথম আলো: জঙ্গিদের মোকাবিলা করার জন্য যে ইউনিট করা হয়েছে। আপনি কি মনে করেন না জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান এই ইউনিটের অধীনেই হওয়া উচিত?
মনিরুল ইসলাম: এ ব্যাপারে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) তৈরি করা হচ্ছে। কার কী দায়িত্ব তা এসওপিতে নির্দিষ্ট করা থাকবে।
প্রথম আলো: টুইন টাওয়ারে হামলার পর একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল। বাংলাদেশে সেই ধরনের কমিশন গঠন করা হলো না কেন?
মনিরুল ইসলাম: আমাদের ন্যাশনাল কমিটি ফর ইনটেলিজেন্স কো-অর্ডিনেশন (এনসিআইসি) আছে। সেখান থেকেই এসওপি তৈরির প্রয়োজনীয়তাটা তারা উপলব্ধি করেছেন।
প্রথম আলো: গত এক বছরে জঙ্গিদের যত আস্তানা খুঁজে পাওয়া গেল, সিলেট থেকে ঝিনাইদহ, চট্টগ্রাম থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, তাতে কী আপনার মনে হয় না এদের নেটওয়ার্ক সারা দেশ বিস্তৃত?
মনিরুল ইসলাম: এদের বিস্তৃতিটা ভয়াবহ পর্যায়ে যায়নি। নির্দিষ্ট কয়েকটি জেলায় তাদের আস্তানা গড়ে উঠেছিল এবং সেখানেই তাদের ‘রিক্রুটমেন্ট’ প্রক্রিয়াটি হয়েছে। উত্তরবঙ্গের কিছু কিছু জেলা যেমন: বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর (তুলনামূলকভাবে কম), রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গত ডিসেম্বর থেকে তারা পার্বত্য অঞ্চলে বিশেষ করে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির দিকে কিছু কার্যক্রম করছে আর দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে মূলত ঝিনাইদহ।
প্রথম আলো: অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতারা জামিন পান না, জঙ্গিরা জামিন পেয়ে যায়। এর কারণ কী?
মনিরুল ইসলাম: আসলে জামিনের বিষয়টি দেখতে হয় মামলার গুণাগুণের আলোকে। কেউ ২২টি খুন করেছে কিংবা কেউ হোলি আর্টিজানে হামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল। এর সঙ্গে একজন শুধু এটাকে সমর্থন করেছে, তার সঙ্গে মেলালে হবে না। সাম্প্রতিককালে যাদের জামিন হয়েছে, তারা প্রাথমিক পর্যায়ের ছিল। অর্থাৎ সমর্থন করেছে, সমর্থন করাটাও আইনের চোখে অপরাধ।
এ ক্ষেত্রে যে কাজটা আমরা শুরু করতে পারিনি তা হলো যখন কেউ ধরা পড়ে জেলখানায় যায়, তার মধ্যে ডির্যাডিক্যালাইজেশন বা জঙ্গিবাদ মুক্তকরণ প্রক্রিয়া শুরু করা, যাতে সে এক বছর, ছয় মাস পর জেলখানা থেকে স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে বের হয়ে আসতে পারে। আর যারা জামিন পাচ্ছে, যাদের গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি বা যাদের আবার জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাদের আমরা নজরদারির মধ্যে রাখার চেষ্টা করছি।
প্রথম আলো: দেশের জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যে কারা বেশি সক্রিয়, আইএস না আল-কায়েদার অনুসারীরা?
মনিরুল ইসলাম: আল-কায়েদার আদর্শ কিছুটা অনুসরণ করে আনসার আল ইসলাম। তারা মূলত ব্লগার, কথিত নাস্তিক হত্যায় জড়িত। গত বছর এপ্রিলের পর থেকে তারা নিষ্ক্রিয়। আইএসএর অনুসারী ঠিক নয়, যারা তাদের ব্যাখ্যা গ্রহণ করছে, সেই নব্য জেএমবি সবচেয়ে বেশি বর্বরতা দেখিয়েছে। হোলি আর্টিজান বেকারির ঘটনার পর তাদের একমাত্র সফল অপারেশন হয় সিলেটে। এই সংগঠনটিও এখন বিপর্যস্ত। তবে এখানে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। ধারাবাহিকভাবে এদের বিরুদ্ধে কাজ করে যেতে হবে।
প্রথমআলো
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন