এবার রাজপথ বিএনপির দখলে থাকবে
26 April 2017, Wednesday
ঢাকা মহানগরকে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে তৈরি করা প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। তিনি বলেছেন, “এবার দলের নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে, রাজপথ আমাদের দখলে থাকবে।”
সোমবার নয়াপল্টনের ভাসানী ভবনে নিজ দপ্তরে আগামী আন্দোলনের পরিকল্পনা, কমিটি গঠন নিয়ে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির বিষয় নিয়ে নিউজবাংলাদেশের সঙ্গে তিনি আলাপ করেন। তার মুখোমুখি হয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার রফিক রাফি।
নগর বিএনপির সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ কী?
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল: বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকা মহানগর। এ ইউনিটের দায়িত্ব পাওয়া সৌভাগ্যের। তবে আত্মতৃপ্তির কোনো সুযোগ নেই। আমাকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রথমত সংগঠনকে শক্তিশালী করা। দ্বিতীয়ত, সামনে অপেক্ষমান যে আন্দোলন, সেটাকে বেগবান করা। দেশের ১৬ কোটি মানুষ ঢাকা মহানগর বিএনপির কাছে যে আন্দোলন প্রত্যাশা করে সেই আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারকে জনগণের দাবি- নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করা। এটি আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ এবং এই চ্যালেঞ্জে আমরা জিতবো।
দেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যাশা, একটি শক্তিকে (আওয়ামী লীগ) গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করা। তারা ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়। আর জনগণ এই লক্ষ্যেই তাকিয়ে আছে নগর বিএনপির দিকে। বিশেষ করে তাদের দল বিএনপির দিকেই তাকিয়ে আছে। সুতরাং দলের নেতা ও জনগণের প্রত্যাশিত সেই আন্দোলন গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর। আর কোন শক্তি আামাদের সেই লক্ষ্যে পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।
আগেও তো একই চ্যালেঞ্জের কথা বলেছিলেন কিন্তু প্রতিফলন দেখা যায়নি।
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল: আমি মনে করি না যে অতীতে আমাদের যে আন্দোলন ছিলো তা ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের আন্দোলন ছিলো, সাজানো পাতানো নির্বাচনে জনগণ যাতে অংশ না নেয়। আমরা আমাদের আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পেরেছি বলেই তারা নির্বাচনে ভোট দিতে যায় নাই, নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। তার ফলে একটি জনবিচ্ছিন্ন সরকার এখন রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে আছে। সুতরাং এটি আমাদের আন্দোলনের ফসল। আমাদের আন্দোলনের প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। আন্দোলনের ২য় ধাপ হচ্ছে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। এই চ্যালেঞ্জেও আমরা জিতবো ইনশাল্লাহ।
আপনি কি মনে করেন এবার নেতাকর্মীরা মাঠে নামবে?
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল: আপনারা দেখবেন, নেতার্কমীরা মাঠে সামনে নামবে। রাজপথ আমাদের দখলে থাকবে।
এখন তো আপনাদের আংশিক কমিটি। এটাকে পূর্ণাঙ্গ করতে কতো সময় লাগবে?
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল: ইতোমধ্যে ৫০ ভাগ করা হয়ে গেছে। এখনও জানি না কত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি হবে। আমরা বসে ঠিক করবো। তবে একটা বড় অংশ হয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করবো এক মাসের মধ্যে শেষ করতে।
তাছাড়া ওয়ার্ড ও থানা কমিটি গঠনে আমরা তাড়াহুড়া করতে গিয়ে ইউনিটগুলো নষ্ট করবো না। আমরা দেখে শুনে ভালো, পরিক্ষীত নেতৃত্ব দেখে কমিটি দেবো। কমিটি দেয়ার পরে যদি দেখি তারা ঘরে বসে থাকে তাহলে তো সেই কমিটি দিয়ে কোন লাভ নাই।
মহানগর বিএনপিকে দুইভাগে বিভক্ত করাকে কীভাবে দেখছেন?
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল: নগর বিএনপির বিগত কমিটি একটি হলেও এবার ‘উত্তর ও দক্ষিণ’ দুটি ভাবে বিভক্ত করা হয়েছে। মহানগরের ব্যাপ্তি যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে জনগণও। এ অবস্থায় একটি ইউনিটের পক্ষে গতিশীলভাবে সংগঠনকে পরিচালনা করা কঠিন। দলের চেয়ারপারসন সেই চিন্তা থেকেই মহানগরীকে দুইভাগে ভাগ করেছেন। এর ফলে দল আরো সুসংগঠিত হবে। বিকেন্দ্রীকরণ হবে নেতৃত্বের। আমরা দুই মহানগর সমন্বয় করে কাজ করবো। নগর বিএনপির দুটি ইউনিট হলেও আমাদের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হবে আমরা একটি ইউনিট। বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে উত্তরের সভাপতি এমএ কাইয়ুমের সঙ্গে যোগযোগ করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।
নতুন কমিটি নিয়ে তো অনেকের রাগ, ক্ষোভ ও অভিমান রয়েছে। এতে করে আন্দোলনে কোনো প্রভাব পড়বে কি?
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল: প্রত্যেক কমিটি ঘোষণার পরেই এরকম রাগ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়ে থাকে। আমাদেরও হয়েছে। তবে এটা ঠিক হয়ে যাবে। এতে আন্দোলনে কোনো সমস্যা হবে না।
দলে এক নেতা এক পদ নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। আপনি তো কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিবও। সে পদ কি ছাড়বেন?
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল: দলের হাইকমান্ড চাইলে আমি অবশ্যই করবো। তাদের সকল নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য আমি সব সময়ই প্রস্তত।
আপনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর কী অবস্থা?
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল: আমার বিরুদ্ধে ২১৯টি মামলা রয়েছে। প্রায় প্রত্যেকদিনই আদালতে হাজিরার জন্য যেতে হচ্ছে। এটাও আমাদের রাজনৈতিক জীবনের একটি বড় অন্তরায়। আদালতের বারান্দায় বেশি সময় দিতে হচ্ছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন