‘সামরিক চুক্তি, বাংলাদেশ কি সেকি ফিল করছে?’
06 April 2017, Thursday
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বর্তমান সরকার যখন চীনের কাছ থেকে সাবমেরিন কিনল। এরপরই ভারতের সঙ্গে সামরিক চুক্তিটা আলোচনায় এলো। একবছর আগেও কিন্তু এটা নিয়ে আলোচনা ছিল না। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সামরিক চুক্তির প্রস্তাবটা কোন পক্ষ থেকে আসল? বাংলাদেশ কি সেকি (দুর্বল) ফিল করছে? যার জন্য সামরিক চুক্তি দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফর প্রসঙ্গে মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে নিজ অফিসে পরিবর্তন ডটকমকে সঙ্গে কথা বলেছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তার সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন পরিবর্তন ডটকমের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান।
পরিবর্তন ডটকম : সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
গযেশ্বর চন্দ্র রায় : রাজনীতির বাইরে জনগণ কী ভাবছে, জঙ্গিবাদ। এ শব্দটি খুব বেশি দিন হয়নি বাংলাদেশে এসেছে। এর আগে আফগানিস্তানে লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। তারা কীভাবে টিকে আছে? সিরিয়া ইরাক, লিবিয়া সারা পৃথিবীতে কী ঘটছে? এর চেয়ে বড় বড় নাশকতামূলক কাজ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ঘটছে। কিন্তু এই সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারতের কোনো বক্তব্য নেই। তারা এটাকে অভ্যন্তরীণভাবে মোকাবিলার চেষ্টা করছে। যেভাবেই হোক কম-বেশি যাই হউক না কেন জঙ্গিবাদটাকে দেশে মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করেছি। তাতে ইনফিচার আমাদের কি হবে? কোন দল ক্ষমতায় থাকল বা থাকল না; সেটা বিষয় না। এটা যদি বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত হয় যে বাংলাদেশে জঙ্গি আছে বা আইএস আছে। তাতে দেশে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হবে।
পরিবর্তন ডটকম : বাংলাদেশে কেন এমন অবস্থা হলো...
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : ভারতের সঙ্গে যখনই সামরিক চুক্তি আলোচনায়; তখনই একটু একটু করে মিডিয়াতে আসছে শুরু করল, তখনই দেশে জঙ্গিবাদ তৎপরতা বৃদ্ধি পেল। তাই এটা সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে না। এর মধ্যে জনগণ বলতে শুরু করেছে, ‘আরে বুঝেন না ভারতের সঙ্গে সামরিক চুক্তির কারণে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি’। ধরে নিলাম দেশে জঙ্গি আছে। তারপরও মানুষ বিশ্বাস করে না। এর মূল কারণ হচ্ছে জঙ্গিবাদ নির্মূল তৎপরতাই এর জন্য সন্দেহ তৈরি করেছে। জঙ্গি ধরতে গিয়ে কারা মারা পড়ছে? মারা পড়ছে শিশু কিশোর ও নারী। এটা যদি আত্মঘাতী হামলা হয়, তাহলে অবশ্যই টার্গেট করা হবে। কিন্তু এমনটা তো হচ্ছে না। কারণ এটা আত্মঘাতী নয়, আত্মহত্যা হচ্ছে। এটা বলা যাচ্ছে না; বলেই বলা হয় জঙ্গির পক্ষ নিচ্ছি। জঙ্গিবাদে জনগণের যদি বিশ্বাস থাকত; তাহলে আতঙ্কিত হতো। যেখানে জঙ্গি ধরা হচ্ছে, আশপাশের মানুষ নির্বিঘ্নে চলে যাচ্ছে।
পরিবর্তন ডটকম : জঙ্গিবাদ কারা ইস্যুতে লাভবান হচ্ছে, আপনি কী মনে করেন?
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : অন্তত দেশ হচ্ছে না। রাজনৈতিক দলগুলোকে দোষারোপ করে সরকারও লাভবান হচ্ছে না। আন্তর্জাতিকভাবে দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে বিদেশিরা বিনিয়োগ করবে না।
পরিবর্তন ডটকম : এ পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে? আপনি কি বলবেন...
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : জঙ্গিবাদের বিষয়টি ভারত সুযোগ করে নিল, না কী আমরা সুযোগ করে দিলাম!
পরিবর্তন ডটকম : এ সংকট মোকাবিলা শুধু কি সরকার করবে না কী বিএনপির দায়বদ্ধতা আছে?
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : অবশ্যই আছে। আমাদের নেত্রী এক বছর আগে সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাব দিল, সেটাকে কতভাবে নাখোশ করে দিল। কারণ জঙ্গি তৎপরতা এটা শুধু আওয়ামী লীগরে সমস্যা নয়, এটা দেশের সকলের সমস্যা। এটা সবাইকে মিলেই মোকাবিলা করতে হবে। সেই জন্যই বিএনপি প্রস্তাব দিয়েছিল। গণতন্ত্রকে সঠিক পথে চলতে না দিলে অগতান্ত্রিক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উওঠে। তাই গণতন্ত্রকে গণতান্ত্রিক পথেই চলতে দিতে হয়।
পরিবর্তন ডটকম : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : ধন্যবাদ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন