লেখক-গবেষক, তথ্যচিত্র নির্মাতা শাহরিয়ার কবির একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি। স্বাধীনতার মাস উপলক্ষে প্রথম আলো তাঁর সঙ্গে কথা বলে। এই বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, পাঠ্যপুস্তকের সাম্প্রদায়িকীকরণ ও গুণগত মানের অধোগতি, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতার প্রভাব ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেন।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মশিউল আলম
প্রথম আলো : ২৫ মার্চ এগিয়ে আসছে। একাত্তর সালের ওই তারিখ রাতে ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের
নয় মাস ধরে পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় গণহত্যা চালিয়েছে। কয়েক দিন আগে জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
শাহরিয়ার কবির : ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি তো ২৪ বছর ধরে এটার জন্য আন্দোলন করে আসছিল। আমরা বরাবর বলে আসছিলাম যে আমাদের একটা দিবস থাকা দরকার, যেদিন আমরা একাত্তরের গণহত্যার শিকার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারব, গণহত্যার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাতে পারব এবং গণহত্যাকে না বলতে পারব। আমরা ২৪ বছর ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছিলাম। অবশেষে জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস হয়েছে। এ জন্য আমরা জাতীয় সংসদ ও সরকারকে ধন্যবাদ জানাই; আমরা বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
প্রথম আলো : শুধু আমরা নিজেরা নিজেরা গণহত্যা দিবস পালন করব, না সারা পৃথিবীর মানুষের স্বীকৃতিও চাইব? এই গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কিছু কি করা হয়েছে বা হচ্ছে?
শাহরিয়ার কবির : সংসদে যে প্রস্তাব পাস করা হয়েছে, তার প্রথমে আছে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ঘোষণা করা হোক। এর পরের বাক্যে বলা হয়েছে, এ দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। কিন্তু দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নয়, আমরা বলছি, মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা। দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কয়েক বছর আগে দাবি করা হলেও হয়তো কিছু ফল পাওয়া যেত। কিন্তু ২০১৫ সালে জাতিসংঘ ৯ ডিসেম্বরকে এ রকম একটা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। সেই দিবসটাকে বলা হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ডে অব কোমেমোরেশন অ্যান্ড ডিগনিটি অব দ্য ভিকটিমস অব ক্রাইম অব জেনোসাইড। ৯ ডিসেম্বরের তাৎপর্যটা হচ্ছে, ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর গণহত্যা কনভেনশন গৃহীত হয়েছিল। সুতরাং এখন আমাদের দরকার একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
প্রথম আলো : আমাদের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলছে না কেন?
শাহরিয়ার কবির : জাতিসংঘ অন্যান্য দেশের গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে। যেমন আরমেনিয়ার গণহত্যাকে তারা স্বীকৃতি দিয়েছে, রুয়ান্ডার গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের গণহত্যার ব্যাপারে মনে রাখতে হবে যে পটভূমিটা কী ছিল। একাত্তরে পাকিস্তান গণহত্যা করেছে; কিন্তু পাকিস্তানের পক্ষে তো আমেরিকা ছিল, চীন ছিল, মুসলিম উম্মাহ যেটাকে বলা হচ্ছে, তারা ছিল পাকিস্তানের পক্ষে। সুতরাং আমরা যদি জাতিসংঘে যাওয়ার আগে বেশিসংখ্যক দেশের স্বীকৃতি আদায় করতে না পারি, তাহলে পাকিস্তান ও তার বন্ধুরা এটা হতে দেবে না। সে জন্য আমরা সরকারকে খুব নির্দিষ্টভাবে প্রস্তাব করেছি যে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য তৎপর হতে হবে, দিবসের স্বীকৃতি নয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে, সেখানে কৌশল নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কী কৌশল নিয়ে আমরা অগ্রসর হব।
প্রথম আলো : কী কৌশল নিয়ে অগ্রসর হবেন?
শাহরিয়ার কবির : আমাদের প্রস্তাব ছিল যে একাত্তর সালে তো ভারত, সোভিয়েত ইউনিয়ন, পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো, কিউবা, নেপাল, ভুটান এ রকম কিছু দেশ একাত্তর সালের বাংলাদেশের গণহত্যার নিন্দা করেছে, গণহত্যা বন্ধ করার জন্য পাকিস্তানকে চিঠি দিয়েছে। এখন এসব দেশকে আমাদের বলতে হবে যে তখন তো আপনারা করেছেন, এখন আপনাদের পার্লামেন্টে এই গণহত্যার নিন্দা করে, গণহত্যার শহীদদের স্মরণ করে এবং গণহত্যার যে বিচার বাংলাদেশে চলছে, এটাকে সমর্থন করে একটা প্রস্তাব গ্রহণ করুন। যাতে এ ধরনের গণহত্যা পৃথিবীর আর কোথাও কখনো না হয়। একাত্তরের দুঃসময়ে যে দেশগুলো আমাদের পাশে ছিল, এখন যদি প্রথমেই আমাদের সেই সব বন্ধুদেশের কাছে যাই, তাহলে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের কাজটা সহজ হবে। তারপর সংখ্যাটা আস্তে আস্তে বাড়ানো যাবে।
প্রথম আলো : মুক্তিযুদ্ধের সাড়ে চার দশক পরেও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করা শেষ হলো না। এ বিষয়টা আপনি কীভাবে দেখেন?
শাহরিয়ার কবির : প্রথমত, একটা তালিকা দরকার। সবার জন্য না হলেও যেসব মুক্তিযোদ্ধা দুস্থ, তাঁদের জন্য তালিকা দরকার। দেশের জন্য তাঁরা যুদ্ধ করেছেন। আজ মুক্তিযোদ্ধারা রিকশা চালান, ভিক্ষা করেন, মুক্তিযোদ্ধারা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। তাঁদের তো একটা সম্মানী দিতে হবে, একটা স্বীকৃতি তাঁর দরকার। তালিকা ছাড়া তো সেটা সম্ভব না।
প্রথম আলো : কিন্তু তালিকায় তো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা প্রচুর, তালিকা তো সরকার পরিবর্তন হলেই নতুন করে করা হয়...
শাহরিয়ার কবির : কারণ, পঁচাত্তর সালের পর থেকে এই দেশে বেশির ভাগ সময় স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় ছিল। বিশেষ করে ২০০১ সালের পর জামায়াতের সদস্যরা, রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় ঢুকে গেছে। সুতরাং এগুলোর যাচাই-বাছাইয়ের ব্যাপার আছে।
প্রথম আলো : বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও কিন্তু ভুয়া লোকজনের মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ঢোকার অভিযোগ আছে। এমনকি উচ্চপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদেরও কয়েকজন...
শাহরিয়ার কবির : হ্যাঁ, কিছু আমলা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছেন, সেগুলো আবার আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়েছে, সনদ বাতিল করা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে আমলার পর আমলা, সচিবের পর সচিব বদল হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা তালিকা তৈরি করার প্রক্রিয়াটা বারবার বিঘ্নিত হচ্ছে বটে; কিন্তু তার অর্থ তো এই না যে আমাদের তালিকা তৈরি করার দরকার নেই।
প্রথম আলো : ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমল এবং ২০০৭-২০০৮ সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক আমল বাদে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি দেশ চালাচ্ছে ১৯৯৬ সাল থেকে। এই সময়ের মধ্যে ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রভাব অনেক বেড়েছে। খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যেও সেই প্রভাব দৃষ্টিকটু মাত্রায় লক্ষ করা যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকের সংশোধন-পরিবর্তন তার একটা সাম্প্রতিক উদাহরণ। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
শাহরিয়ার কবির : পাঠ্যপুস্তকের সাম্প্রদায়িকীকরণের তদন্তের জন্য আমরা গত মাসে বিচারপতি গোলাম রাব্বানীকে চেয়ারম্যান এবং মুনতাসীর মামুনকে সদস্যসচিব করে একটা কমিশন গঠন করেছিলাম। সেই কমিশন মার্চের ১০ তারিখে প্রায় সাড়ে তিন শ পৃষ্ঠার একটা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে। সেখানে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, সাম্প্রদায়িকতা কোনো নতুন বিষয় নয়, কিন্তু এই সরকারের আমলে পাঠ্যপুস্তকে সেটা যেভাবে করা হয়েছে তা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। হেফাজত-জামায়াত তো মাদ্রাসা কারিকুলামে হাত দিতেই দেয়নি, বরং উল্টো এখন হেফাজত সাধারণ শিক্ষা কারিকুলামের ওপর হস্তক্ষেপ করেছে এবং আমাদের সরকার হেফাজতের দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। আমরা এটার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। এই সরকারের আমলে এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না, কোনো সরকারের আমলেই কাম্য হতে পারে না। জামায়াত-বিএনপি ক্ষমতায় থাকলেও তাদের মনে রাখতে হবে যে ৩০ লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। ক্ষমতায় গিয়ে আপনি সংবিধান পাল্টে দেবেন, রাষ্ট্রের মূল নীতি-চরিত্র পাল্টে দেবেন, এটা তো হতে পারে না। রাষ্ট্রের চরিত্রই যদি পাল্টাব তাহলে আমরা পাকিস্তান ভাঙলাম কেন? পাঠ্যপুস্তকের সাম্প্রদায়িকীকরণই যদি আমি করব, তাহলে পাকিস্তান ভাঙার তো দরকার ছিল না, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার দরকার ছিল না।
প্রথম আলো : আপনার কি মনে হয়, এই সরকার কেন হেফাজতের মতো একটা সাম্প্রদায়িক শক্তির দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করে পাঠ্যপুস্তকের এই পরিবর্তন করল? এটা তো একটা বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
শাহরিয়ার কবির : হেফাজত কিন্তু একা নয়, তাদের পাশে আছে জামায়াত-বিএনপি; তাদের পক্ষে আন্তর্জাতিক একটা মহলের মদদ আছে। এ কারণেই হেফাজত এই সাহসগুলো পাচ্ছে। আর পঁচাত্তরের পর থেকে আমাদের রাজনীতি ও সমাজের মধ্যে যে র্যাডিক্যালাইজেশন বা মৌলবাদীকরণ ঘটেছে, আওয়ামী লীগও তো তার বাইরে নেই। মৌলবাদীকরণ তো আওয়ামী লীগের মধ্যেও ঢুকেছে।
প্রথম আলো : তাহলে আওয়ামী লীগ কি বিএনপির ভূমিকা নেবে?
শাহরিয়ার কবির : যদি নিতে চায় তাহলে আওয়ামী লীগের জন্য সেটা আত্মঘাতী হবে। বিএনপির ইসলামি ট্রাম্পকার্ড খেলার সুযোগ আছে। কারণ, তারা পাকিস্তানপন্থী, তারা জামায়াতপন্থী। কিন্তু সেই একই ইসলামি ট্রাম্পকার্ড খেলার সুযোগ আওয়ামী লীগের নেই। আমি বারবার বলছি, রাজনৈতিক ইসলামের ট্রাম্পকার্ড বিএনপি খেলতে পারে, জাতীয় পার্টি খেলতে পারে। বিএনপি দলটার জন্মই তো হয়েছে পলিটিক্যাল ইসলাম দিয়ে, বিএনপি তো সেই ইসলামি ট্রাম্পকার্ড খেলবেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই কার্ড খেলতে গেলে সেটা তার জন্য আত্মঘাতী হবে।
প্রথম আলো : কিন্তু আওয়ামী লীগ তো দৃশ্যত সেই কার্ড খেলতে শুরু করেছে...
শাহরিয়ার কবির : খেললে এই খেলা হবে তাদের জন্য আত্মঘাতী—এটা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে বুঝতে হবে। আমরা কী করতে পারি? আমরা শুধু বলতে পারি, পরামর্শ দিতে পারি। বুঝতে হবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকেই।
প্রথম আলো : পাঠ্যপুস্তকের সাম্প্রদায়িকীকরণ ছাড়াও একটা খুব গভীর সমস্যা দেখা যাচ্ছে। সেটা হলো পাঠ্যপুস্তকের গুণগত মান। সেগুলো শুধু ভুলে ভরাই নয়, সার্বিক মানও খুবই হতাশাব্যঞ্জক। পাঠ্যপুস্তক যাঁরা রচনা করছেন, তাঁদের যোগ্যতা, দক্ষতা, যত্নশীলতা, দায়িত্বশীলতা, জবাবদিহি—এসব নিয়ে বিরাট প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে কি আপনাদের চিন্তাভাবনা আছে?
শাহরিয়ার কবির: আমাদের কমিশনের প্রতিবেদনে শুধু যে পাঠ্যপুস্তকের সাম্প্রদায়িকীকরণ নিয়েই বলা হয়েছে, তা নয়। দক্ষতা, যোগ্যতা, মেধাসহ যাবতীয় বিষয়েই বলা হয়েছে।
প্রথম আলো : কী বলা হয়েছে?
শাহরিয়ার কবির : বাংলা তো বটেই, গণিত, বিজ্ঞানসহ সব বিষয়ের পাঠ্যবই আমরা বিশদভাবে খতিয়ে দেখেছি, যদিও ১৩৬টা বইয়ের সব দেখা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আমরা পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠাজুড়ে বিভিন্ন ভুলত্রুটি চিহ্নিত করে সেগুলো তুলে ধরেছি। কিন্তু এখন সম্পাদকেরা কী বলছেন? ১৩ জন সম্পাদক তো বিবৃতি দিয়ে বললেন যে পাঠ্যপুস্তকের পরিবর্তনের বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনো পরামর্শই করা হয়নি। কিন্তু তাঁরা শুধু বিবৃতি দিয়েই কর্তব্য শেষ করেছেন। আমরা বলেছি, কাউকে না কাউকে তো দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু আমরা কোনো ব্যক্তিকে দায়ী করিনি, সামগ্রিকভাবে সরকারকেই দায়ী করেছি।
প্রথম আলো : আপনাকে ধন্যবাদ।
শাহরিয়ার কবির : ধন্যবাদ।
প্রথমআলো
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন