ক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপ নিয়ে তীব্র উত্তেজনার মধ্যেই ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো রাজধানী কারাকাসে এক বিশাল সমাবেশের ডাক দিয়েছেন। সেখানে তিনি জনগণের প্রতি ‘নিঃশর্ত আনুগত্য’ প্রকাশ করে শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তিনি স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, তার দেশ সার্বভৌমত্ব বজায় রেখে শান্তি চায়।
স্থানীয় সময় সোমবার (১ ডিসেম্বর) দেশটির প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাসাদের বাইরে ভেনেজুয়েলার পতাকা হাতে জড়ো হওয়া জনতার উদ্দেশে মাদুরো বলেন, তার দেশ শান্তি চায়, তবে কেবল ‘সার্বভৌমত্ব, সমতা ও স্বাধীনতা’ সহকারে।
মাদুরো আরও বলেন, ‘আমরা দাসত্বের শান্তি চাই না, উপনিবেশের শান্তিও চাই না! উপনিবেশ, কখনোই না! দাস, কখনোই না!’
এই সমাবেশ এমন এক সময়ে হলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলা বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে ‘পরবর্তী পদক্ষেপ’ নিয়ে আলোচনা করছেন। ট্রাম্প প্রশাসন মাদক পাচারবিরোধী অভিযানের অজুহাতে ক্যারিবীয় অঞ্চলে বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরীসহ সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে। তবে মাদুরো ওয়াশিংটনের এই কার্যক্রমকে তার সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে করা ‘মনস্তাত্ত্বিক সন্ত্রাসবাদ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
এর আগে গত রোববার (৩০ নভেম্বর) ট্রাম্প জানান, তিনি মাদুরোর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করে বলেন, কথোপকথনটি ‘ভালো বা খারাপ’ কিছুই হয়নি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স চারজন সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, গত ২১ নভেম্বরের সংক্ষিপ্ত কলে মাদুরোকে ভেনেজুয়েলা থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
রয়টার্স আরও জানায়, মাদুরো নিজের এবং তার পরিবারের সদস্যদের জন্য সম্পূর্ণ আইনি সাধারণ ক্ষমা, সমস্ত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) তার বিরুদ্ধে চলমান মামলা বন্ধের শর্তে দেশ ছাড়তে রাজি ছিলেন। এ ছাড়া আরও ১০০ জনেরও বেশি সরকারি কর্মকর্তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিও জানান তিনি।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, মাদুরোর বেশিরভাগ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্টকে পরিবারসহ পছন্দের গন্তব্যে চলে যাওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় দেন। এই নিরাপদ প্রস্থানের সময়সীমা গত শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) শেষ হয়েছে। যার ফলে গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) ভেনিজুয়েলার আকাশসীমা ‘সম্পূর্ণভাবে বন্ধ’ ঘোষণা করেন ট্রাম্প।

কলম্বিয়া-ভেনেজুয়েলা সীমান্ত থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক টেরেসা বো জানিয়েছেন, ট্রাম্পের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণার পর মাদুরো দেশ ছেড়েছেন এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে এরই মধ্যে তিনি কারাকাসে সমাবেশে উপস্থিত হন।
বো আরও জানান, ভেনেজুয়েলার সামরিক বাহিনী দেশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, বিশেষ করে রাজধানী ও বিমানবন্দর সংযোগকারী মহাসড়কগুলোতে সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে।