Image description

টানা দুই বছরের হামলায় গাজার এক হাজার ২৪৫ মসজিদের এক হাজার ১০৯টিই ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরাইল। অধিকৃত জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদের সীমানা ঘিরেও গোপন সুড়ঙ্গ খনন করছে- যেন সহজেই ধসে পড়ে! সেনাবাহিনী মদদপুষ্ট দখলদার বাহিনীর প্রতিদিনের উৎপাত তো আছেই।

 

শুধু গত সপ্তাহেই আল-আকসা চত্বরে প্রায় চার হাজার দখলদার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। এর মাঝেই বৃহস্পতিবার অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি মসজিদে আগুন দিয়েছে স্থানীয় বসতি স্থাপনকারীরা। পুড়িয়ে দিয়েছে মসজিদে থাকা পবিত্র কুরআনের বেশ কয়েকটি কপি। ধর্মীয় স্থাপনায় ঘৃণিত এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ গোটা মুসলিম বিশ্ব। মিডল ইস্ট আই, আল-জাজিরা, জর্ডান নিউজ। 

আগুনে পুড়েছে পবিত্র কুরআন। ছবি: আল-জাজিরা

 

মসজিদে অবৈধ ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের আগুন দেওয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। ওই অঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মাত্রা অনবরত বৃদ্ধি পাওয়ার মধ্যেই আগুন দেওয়ার এ ঘটনা ঘটেছে। 

স্থানীয় বাসিন্দারা আল-জাজিরাকে বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীরা পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত সালফিত এলাকার কাছে দেইর ইস্তিয়া গ্রামের হাজ্জা হামিদা মসজিদে আগুন দেয়। ঘটনাস্থল থেকে তোলা ছবিতে দেখা যায়, মসজিদের দেওয়ালে স্প্রে ব্যবহার করে বর্ণবিদ্বেষী ও ফিলিস্তিনবিরোধী স্লোগান লেখা হয়েছে। আগুনে মসজিদের একটি দেওয়াল ও ভেতরের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পবিত্র কুরআনের কিছু কপিও (অন্তইট) পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। কিছু কার্পেট পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মসজিদের একপাশে বসতি স্থাপনকারীরা ‘আমরা ভয় পাই না’, ‘আমরা আবার প্রতিশোধ নেব’ এবং ‘নিন্দা চালিয়ে যাও’ এর মতো গ্রাফিতি করা বার্তা রেখেছিলেন। 

 

ফিলিস্তিনের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ ঘটনাকে ‘জঘন্য অপরাধ’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে। বলেছে, এর মধ্য দিয়ে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডতে মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের পবিত্র স্থান হিসাবে বিবেচিত জায়গাগুলোতেও ইসরাইলি বর্বরতার কথা সামনে এসেছে। 

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, জাতিসংঘ এ ঘটনাটি নিয়ে ‘অত্যন্ত উদ্বিগ্ন’। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ব্রিফিংয়ে স্টিফেন ডুজারিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপাসনালয়ে এমন হামলা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’ 

ডুজারিক আরও বলেন, ‘আমরা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি ও তাদের সম্পদের ওপর ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের চালানো হামলার নিন্দা জানিয়েছি এবং জানিয়ে যাব। দখলদার শক্তি হিসাবে ইসরাইলের উচিত বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং মসজিদে হামলা ও দেওয়ালে স্প্রে করে নোংরা কথা লেখার মতো ঘটনাগুলোয় দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা।’ 

জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের ক্রমবর্ধমান হামলার ‘তীব্র নিন্দা’ জানিয়েছে। 

সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো ‘অগ্রহণযোগ্য’। এক বিবৃতিতে দেশটি আরও বলেছে, এ ধরনের সহিংসতা এবং অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।