Image description
 

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার রাজকীয় আতিথেয়তায় বরণ করে নিলেন থাইল্যান্ডের রাজা মহা বাজিরালংকর্ন এবং রানি সুতিদাকে। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সফর বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

চীন এই সফরকে দেখাচ্ছে বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশীর আন্তরিক সম্পর্ক ও বিশ্বস্ত অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ হিসেবে।

এই সপ্তাহেই স্পেনের রাজা ফিলিপ ষষ্ঠ ও রানি লেতিসিয়াও চীন সফর করেন। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ দুই সফরকে তুলে ধরছে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতীক হিসেবে। তাদের মতে, এটি অন্য দেশগুলোকেও বার্তা দেয় যে চীন এখনো একটি নির্ভরযোগ্য ও সহযোগিতামূলক শক্তি—এমন সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উঁচু শুল্ক আরোপ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।

শীতল যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল থাইল্যান্ড। সে সময় চীনকে হুমকি হিসেবে দেখা হতো। তবে সময়ের সঙ্গে সেই সম্পর্ক বদলেছে।

রাজা বাজিরালংকর্ন এর আগেও একবার চীন সফর করেছিলেন—১৯৮৭ সালে, তখন তিনি রাজপুত্র ছিলেন। তাকে পাঠিয়েছিলেন তার পিতা, যিনি চীনের একাধিক আমন্ত্রণ পেয়েও কখনো যাননি।

শীতল যুদ্ধ–পরবর্তী সময়ে দুই দেশের সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে, বিশেষ করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের দিক থেকে। চীন এখন থাইল্যান্ডের পর্যটন খাতে প্রধান পর্যটক উৎস এবং গাড়ি শিল্পসহ নানা ক্ষেত্রে বড় বিনিয়োগকারী। শুধু গত বছরেই থাইল্যান্ড চীন থেকে ৮০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য কিনেছে।

প্যারিসভিত্তিক ইনালকো সংস্থার গবেষক জুলিয়েট লোশ বলেন, ‘এই সফর চীনের জন্য শুধু থাইল্যান্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পুনর্নিশ্চিত করার সুযোগ নয়, বরং গোটা অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বজায় রাখার সংকেতও।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ট্রাম্প আসিয়ান সম্মেলনে কিছুক্ষণের জন্য থেমেছিলেন, যেখানে তার উপস্থিতির একমাত্র দৃশ্যমান ফল ছিল থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে স্বল্পস্থায়ী এক শান্তি চুক্তি। তার বিপরীতে চীন আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আরও জোরদার করার ঘোষণা দেয়।’

চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এক সম্পাদকীয়তে বলেছে, হাজার বছরের পুরোনো চীন–থাইল্যান্ড বাণিজ্য ও আদান-প্রদানের ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতের সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত।

বৃহস্পতিবার সিনহুয়া লেখে, ‘পশ্চিমা ঔপনিবেশিকরা এ অঞ্চলে আসার আগেই থাইল্যান্ডের অধিকাংশ বৈদেশিক পণ্য চীনে বিক্রি হতো।’ তারা জানায়, থাইল্যান্ড থেকে চাল, মসলা ও টিন রপ্তানি হতো, যার বিনিময়ে চীন থেকে আসত চীনামাটির বাসন, রেশম, চা ও লোহার সামগ্রী।

সূত্র: রয়টার্স